1. admin@ichchashakti.com : admin :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

ভালোবাসার সমীকরণ — জাকির আলম  

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৬৯ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

ভালোবাসার সমীকরণ (দশম পর্ব)

জাকির আলম  

 

বাজারে দ্রব্যপণ্যের মূল্য ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোনোকিছুতেই হাত দেওয়া যাচ্ছে না। ক্রমশ জীবন মান কমে আসছে। জটিল হচ্ছে চিন্তা মুক্ত বেঁচে থাকা। যেখানে মানুষের মূল্য নেই বললেই চলে। এমন একটা পর্যায় থেকে সুষ্ঠু ভাবে বেঁচে থাকাই ক্রমশ জটিল হয়ে পড়ছে। এমন সময় মোনার বিয়ের বয়স হয়েছে। বাবা-মায়ের চিন্তাও বেড়ে যাচ্ছে মোনাকে ভালো পাত্রের সাথে বিয়ে দেওয়ার তাগিদে। ইতোমধ্যেই দূর-দূরান্ত থেকে মোনার বিয়ের সম্বন্ধ আসতে শুরু করেছে। মোনাকে এক নজর দেখা মাত্রই সবাই পছন্দ করে ফেলছে। কিন্তু মোনা আরো পড়তে চায়। সদ্য স্নাতক শেষ করা মোনা লেখাপড়া শেষ করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু মোনার বিয়ে নিয়ে বাবা-মায়ের মনে আলাদা টেনশন এসে ভিড় করেছে। ভালো একটা পাত্রের সন্ধান পেলেই বিয়ে দিয়ে দিবে। এমতাবস্থায় মোনার বাবা মোনার মাকে ডেকে বললো…

বাবা : এই শুনছো মোনার আম্মু ?

আম্মু : হুমমম বলো, কি বলবে…

বাবা : এদিকে এসো…

আম্মু : দাঁড়াও আসতেছি। হুমমম বলো…

বাবা : শোনো না, মোনার জন্য একটা ভালো পাত্রের সন্ধান পেয়েছি। পাত্র পক্ষ থেকে মোনাকে দেখতে আসতে চায়।

আম্মু : বেশ তো। তাদের আসতে বলো একদিন।

বাবা : কিন্তু মোনা কি এখনি বিয়েতে রাজি হবে ?

আম্মু : সে আমি বুঝবো। সে ব্যাপারে তোমার কোনো টেনশন করতে হবে না। তুমি আগাও…

বাবা : তুমি যেহেতু বলছো তাহলে ঠিক আছে। ভালো পাত্র সহজে পাওয়া যায় না। এই পাত্রের সাথে বিয়ে হলে আমাদের মোনা অনেক ভালো থাকবে। ছেলে নাকি দেখতে শুনতেও অনেক ভালো। ভদ্র পরিবারের সন্তান। বাজে কোনো নেশা নেই। পরিবারের অবস্থাও নাকি ভালো। ছেলেটা সদ্য স্নাতকোত্তর শেষ করে সরকারি জবের জন্য ট্রাই করছে।

আম্মু : আচ্ছা ঠিক আছে যেটা ভালো হয় তাই করো।

বাবা : মোনা কি ঘুমিয়ে আছে ?

আম্মু : না মনে হয়৷ সম্ভবত শ্রাবণের সাথে ফোনে কথা বলছে।

বাবা : আচ্ছা ঠিক আছে। রাত অনেক হলো ঘুমাবো আমি। ঘুম পাচ্ছে…

আম্মু : মোনাকে জানাই বিয়ের কথা কি বলো ?  জানিয়ে রাখি…

বাবা : ও ভালো কথা, আমার পাঞ্জাবির পকেটে সেই ছেলের একটা ছবি আছে। মোনাকে সেটা দেখিও পছন্দ হয় নাকি।

আম্মু : ছেলেটাকে তো আসলেই রাজপুত্রের মতো মনে হচ্ছে। এই শোনো, এই ছেলেটাকে হাত ছাড়া করা যাবে না। এর সাথেই মোনাকে বিয়ে দিতে হবে ।

বাবা : পছন্দ হয়েছে তোমার ?

আম্মু : হুমমম পছন্দ হয়েছে। আমার মেয়ের জন্য একদম রাজপুত্র ধরে এনেছো। এই পাত্রকে আমি একদম হাত ছাড়া করবো না। যে করেই হোক এর সাথেই মোনাকে বিয়ে দিতে হবে। ছেলে আমার খুব পছন্দ হয়েছে।

বাবা : আচ্ছা বাবা সময় হোক দেখা যাবে। এবার তাহলে ঘুমাতে এসো।

আম্মু : তুমি ঘুমাও। আমার একটু কাজ আছে তারপর ঘুমাবো। কাজটা শেষ করে নেই।

বাবা : আচ্ছা ঠিক আছে…

সকাল হতেই মোনার আম্মু এক কাপ গরম গরম কফি হাতে মোনার রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে মোনাকে ডাকছে। খানিক পরেই মোনা দরজা খুলে দিলো।

মোনা : ওহহহ আম্মু তুমি আমার ঘুম ভেঙে দিলে ! টেবিলে কফি রেখে যাও। এখন খেতে মন চাচ্ছে না৷ আমি আরো ঘুমাবো। তুমি এবার যাও।

আম্মু : সে কি ! এখনো ঘুমানো শেষ হয়নি ?  ঘুম ছাড়বেই বা কেমন করে, সারা রাত খালি ফোনে কথা আর অনলাইনে থাকা। আরতো কোনো চিন্তা নেই। এই শোন, একটা খুশির খবর আছে।

মোনা : পরে শুনবো।  এখন যাওতো।  আমার খুব ঘুম পাচ্ছে। প্লিজ আম্মু…

আম্মু : আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমা তাহলে। পরে বলবোনি খুশির খবরটা।

তখন সকাল দশটা। শুক্রবার ছুটির দিন। আজ শ্রাবণের সাথে মোনার দেখা করার কথা। অপর দিকে মোনার আম্মুও আছে মোনাকে খুশির খবরটা জানানোর জন্য। না জানিয়ে তার মাথা ব্যথা কমছে না। মোনা ফ্রেশ হয়ে টেবিলে খেতে এলো। মোনার বাবা ভোরেই কোনো একটা কাজে বাহিরে গেছে। বাসায় শুধু মোনা এবং তার আম্মু। দু’জনেই এক সাথে খেতে বসলো টেবিলে। খাবার খেতে খেতে মোনা তার আম্মুর কাছে জানতে চাইলো…

মোনা : কি খুশির খবর আম্মু বলো !  তোমাকে আজ অন্য রকম মনে হচ্ছে আম্মু। মনে হচ্ছে খুশিতে তুমি গদগদ হয়ে আছো। বলো শুনি কি তোমার খুশির খবর…

আম্মু : কি করে যে বলি…

মোনা : এখন আবার ইতস্তত করছো কেন ?  বলো আম্মু…

আম্মু : একটা ভালো ছেলের সন্ধান পেয়েছি। ছেলেটা নাকি অনেক ভালো৷ বাজে কোনো নেশা নেই। উচ্চ শিক্ষিত ছেলেটা। পড়ালেখা শেষ করে সরকারি চাকরির জন্য ট্রাই করছে।

মোনা : আমার বিয়ে ছাড়া তোমাদের আর কোনো কথা নেই। সবসময় খালি বিয়ে বিয়ে। আম্মু শোনো আমি আগেও বলছি, এখনো বলছি- পড়ালেখা শেষ না করে অবধি আমি বিয়ে করবো না। পড়ালেখা আগে শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়াই তারপর বিয়ে নিয়ে ভাববো। এর আগে আমাকে এসব বলে বিরক্ত করো না আম্মু।

আম্মু : মা রে ভালো ছেলে সবসময় পাওয়া যায় না। এখানে তুই অনেক সুখে থাকবি মা। তুই রাজি হয়ে যা মা। তুই রাজি হলে তোর বাবাও অনেক খুশি হবে। আমাদের কথা চিন্তা করে তুই রাজি হয়ে যা। আমরা তোকে কোনো খারাপ জায়গায় বিয়ে দিতে চাচ্ছি না। পাত্রপক্ষ অনেক ধনী। শহরে কয়েকটি বাসা আছে। এখানে বিয়ে হলে তুই রাজরানি হয়ে থাকবি মা।

মোনা : প্লিজ আমাকে আর জোর করো না আম্মু। তোমাদের কথা আমি রাখতে পারছি না। আমার পক্ষে এখনি বিয়ে করা সম্ভব না।

আম্মু : তোর কি কোনো পছন্দের ছেলে আছে ? কাউকে ভালোবাসিস ?

মোনা : আম্মু আমার কোনো পছন্দ নেই। তোমরা যার সাথে বিয়ে দিবে সেখানেই আমি রাজি। কিন্তু এখন আমি বিয়ে করতে পারবো না।

আম্মু : ছেলেটা অনেক ভালো রে মা। তোর ভালোর জন্যই এখানে আমরা তোকে বিয়ে দিতে চাচ্ছি।

মোনা : ঠিক আছে এতোই যেহেতু তোমরা বলছো তাহলে পাত্রপক্ষকে বাসায় আসতে বলো। আমার একটা শর্ত মেনে নিলে রাজি হতে পারি।

আম্মু : কি শর্ত মা ?

মোনা : আমাকে দেখে যদি তাদের পছন্দ হয় তাহলে বিয়ে ঠিক করে এনগেজডমেন্ট করে রাখতে হবে। পড়ালেখা শেষ করে তারপর বিয়ে। এই শর্তে আমি রাজি আছি।

আম্মু : আলহামদুলিল্লাহ !  তোর বাবাকে বলে তাহলে পাত্রপক্ষকে আসতে বলি।

মোনা : ঠিক আছে…

আম্মু : খাওয়া শেষ কর তাহলে এবার।

মোনা : হুমমম। আম্মু আমি বাহিরে যাবো একটু। কিছু টাকা দাও।

আম্মু : আলমারিতে টাকা রাখা আছে যা লাগে নিয়ে যাস।

মোনা : ঠিক আছে আম্মু…

তারপর মোনাকে শ্রাবণের সাথে দেখা করতে বাহিরে গেলো। শহর জুড়ে সারাদিন হৈ-হুল্লোড় করে বেড়াবে বলে। শ্রাবণ অপেক্ষা করছে মোনার ঠিকানা দেওয়া যায়গায়। যথারীতি মোনা শ্রাবণের কাছে গেলো। দু’জনে একটি রিক্সা নিয়ে বেরিয়ে গেলো ব্যস্ত শহরের অভিমুখে।

 

(চলবে…)

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park