1. admin@ichchashakti.com : admin :
শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

অভাগী মায়ের কষ্টের জীবন  —- অন্তরা খাতুন‌

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫
  • ১২৯ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

একদা ছিল এক মহিলা। তার ছিল আটটি সন্তান। পাঁচটি ছেলে ও তিনটি মেয়ে। মহিলাটি একসময় অনেক কষ্ট করে ছেলেমেয়েদেরকে মানুষ করেছে। মেয়েগুলা কে বিয়ে দিয়েছে। ছেলেগুলো এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু মার কষ্টের জীবন তো কষ্টেরি। মা বাবা এখন পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহিলাটি কষ্ট পায় আর ভাবে, যদি আমি আগের মতো হতাম। আমার কষ্টের জীবনকি কষ্টেরই থেকে যাবে। এত কষ্ট করে সন্তান মানুষ করলাম। এখন তাদের কাছে আমার জায়গা নাই। কেউ খাবার দিতে চায় না বাবা-মাকে। অসুখ হলে ওষুধ কিনে দিতে চায় না।

 

সবাই বলে আমি কেন একা খেতে দিব তার তো আরো অনেক ছেলে আছে। ভাগে খেতে দিব। বড় ভাই দশ দিন, মেজ ভাই ১০ দিন ,সেজ ভাই ১০ দিন, নোয়া ভাই ১০ দিন, ছোট ভাই ১০ দিন। প্রত্যেক ঘরে বাবা মা ভাগ হয়ে যায়। এভাবেই চলতে থাকে মহিলার জীবন। এখন সে সব ছেলের কাছেই বোঝা। তার জীবন না থাকলেই বোধ হয় ভালো হতো। মহিলাটি ভাবে যদি আমি আগের মত আবার নিজে রান্না করে খেতে পারতাম। আমার গায়ে যদি আগের মত শক্তি দিত আল্লাহ। তাহলে আমি কারোর কাছে বোঝা হতাম না। কষ্ট করে খেলেও সুখ তো একটু পেতাম মনের দিক থেকে। এভাবেই মহিলাটির দিন চলে যায় কখনো এই ঘরে দশ দিন কখনোই ওই ঘরে দশ দিন। হঠাৎ একদিন মহিলাটি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে। সব ছেলেমেয়ের আসে। কিন্তু তার চিকিৎসা করবে কে। কেউ তার চিকিৎসার টাকা দিতে চায় না। সবাই বলে তুই দে ও বলে তুই দে। কেউ রাজি হয় না টাকা দিতে বলে আমারই সংসার চলে না। তখন মহিলাটি স্বামী মহিলা টির নামে যে জমি দিয়েছিল সেটা বিক্রি করে দেয়। মেয়েরা  বলে যে মার জমি দিয়েই মাকে চিকিৎসা করব ।

 

মহিলাটি অনেক কষ্ট পায়। যে কেউ আমার দায়ভার নিতে চাচ্ছে না। অথচ আমি একদিন কত কষ্ট করে নিজে না খেয়ে সন্তানগুলোকে মানুষের মতো মানুষ করে তুলেছি। হায় আল্লাহ এই কি রেখেছিলে আমার কপালে।

 

এরপর মহিলাটিকে নিয়ে যাওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল হসপিটাল। সেখানে নিয়ে গিয়ে মহিলাটির অপারেশন করানো হয়। মহিলাটি আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে যায়। পরে তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তার দিক শক্তি আর ঠিক থাকে না। সে উল্টাপাল্টা কথা বলতে শুরু করে। স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলে। এভাবেই চলতে থাকে কিছুদিন। তারপর আল্লাহ আবার তাকে ভালো করে দেয়। কিন্তু এই ভালো যে ভালো নয়। তার কষ্টের জীবন কি এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে। হ্যাঁ তাই হয়। একদিন মহিলাটি শুয়ে থাকে বিছানায়।

 

হঠাৎ তার মালাকুল মউত তার চোখের সামনে দেখা দেয়। মৃত্যু যন্ত্রণায় সে কাতরাতে থাকে।

 

স্বামীকে বলে ওগো শুনছো আমার ভিতরটা যেন ছিঁড়ে নিচ্ছে। স্বামী বলে তুমি অসুস্থ তো কিছুদিন অসুস্থ ছিলে এর জন্য হয়তো খারাপ লাগছে। ঠিক হয়ে যাবে। তুমি কালেমা পড়ে পড়ে বুকে ফুঁ দাও। দেখো ঠিক হয়ে যাবে। এরপর ফজরের আজান দিয়ে দেয়। যন্ত্রণা মৃত্যু যন্ত্রণা। তার শেষ সময় তার সামনে এসে গেছে। স্বামী বলে তুমি থাকো আমি নামাজ পড়ে আসি আযান দিয়ে দিয়েছি। তখন মহিলাটি স্বামী মসজিদে যায় নামাজ পড়তে। মহিলাটি নিজেই কালেমা পড়তে পড়তে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। স্বামী দেখলেও না তার জীবন সঙ্গী আর এই পৃথিবীতে নাই। স্বামী নামাজ পড়ে ফিরে আসে। এবং স্ত্রীকে বলে ওগো শুনছো এখন উঠ। নামাজ পড়ো। নামাজের ওয়াক্ত চলে যাচ্ছে। কিন্তু স্ত্রী আর উঠে না। তখন স্বামী চিৎকার দেয়। বলে তোরা কে কোথায় আছিস তোর মার আর ঘুম ভাঙে না রে। চিৎকার শুনে বাড়ির সবাই চলে আসে। দেখে তাদের মার পৃথিবীতে নেই। কষ্টের জীবন নিয়ে অনেক আগেই দুনিয়া ত্যাগ করেছে। এভাবেই মহিলাটি কষ্টের জীবন শেষ হয়ে যায়।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park