1. admin@ichchashakti.com : admin :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

সাতগাঁও চা বাগানে একদিনের স্মৃতি

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫
  • ১৩৮ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

মোঃ রবিউল ইসলাম খান রবিন (রাশশাদ)

 

প্রকৃতি মাঝে মাঝে এমনভাবে হাতছানি দেয়, যেনো সে নিজের অন্তরঙ্গ সৌন্দর্য চোখের সামনে মেলে ধরতে চায়। আমার ছোট মামা, প্রকৌশলী নাজমুল হোসেন (জুয়েল), তখন সাতগাঁও চা বাগানের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (ফেক্টরী) হিসেবে কর্মরত। তাঁর আন্তরিক আমন্ত্রণে একদিন রওনা দিলাম সবুজে মোড়া সাতগাঁও চা বাগানের পথে।

 

সাতগাঁও চা বাগানে পৌঁছানোর মুহূর্তেই মনে হলো—এ যেনো এক অন্য জগৎ! ঢেউ খেলানো পাহাড়, তার গায়ে সাজানো সারি সারি চা গাছ, মাঝে মাঝে বাতাসে পাতার মৃদু ফিসফিস—সবকিছুই যেনো এক সুরের মূর্ছনা। মামার বাংলো ছিল ফেক্টরীর পাশেই সমতল জায়গায়, সামনে সাজানো ফুলের বাগান, পেছনে সারি সারি স্টাফ কোয়ার্টার। কোয়ার্টারগুলোর চারপাশে শিশুদের খেলাধুলা, পরিবারের হাসি-আনন্দে এক উষ্ণ পরিবেশ তৈরি করেছিল।

 

পরদিন মামা আমাকে নিয়ে গেলেন ফেক্টরীতে। প্রথমেই গেলাম ‘উইদারিং শেড’-এ, যেখানে কচি চা পাতা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। পাতার সেই মিষ্টি সুবাস যেনো মনে গভীর ছাপ ফেললো। এরপর প্রসেসিং মেশিনে পাতাগুলো ছেঁড়ে ও মচকানো হলো, ফার্মেন্টেশনের সময় পুরো ঘর ভরে উঠলো এক মনমাতানো গন্ধে। ড্রায়িং মেশিনের উষ্ণতা আর সর্টিং রুমের নিখুঁততা দেখে বুঝলাম—এক কাপ ভালো চায়ের পেছনে কত ধৈর্য, যত্ন আর শ্রম লুকিয়ে থাকে।

 

সফরে আরেকটি বিশেষ মুহূর্ত ছিল মানুষের আন্তরিকতা। সেই সফরে গিয়ে পরিচয় হলো সিনিয়র এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার তানজিমুল ইসলাম মতিন সাহেব, এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (ফিল্ড) আতিকুর রহমান আতিক সাহেব, এবং এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (ফিল্ড) আশরাফ হক সাহেবের সঙ্গে। মামার বাগনা হিসেবে তাঁরা আমাকে যেভাবে হাসিমুখে বরণ করে নিলেন, তা সত্যিই মনে রাখার মতো। তাদের সৌজন্য, অতিথিপরায়ণতা আর আন্তরিকতা সফরের আনন্দকে আরও গভীর করলো।

 

 

দিনের আলো যখন ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে এলো। বাংলোর সামনে দাঁড়িয়ে দেখি, পশ্চিম আকাশে সূর্য ডুবে যাচ্ছে, চারপাশে লাল-কমলা আভা ছড়িয়ে পড়েছে। দূরে চা গাছের সারির ফাঁক দিয়ে ভেসে আসছে পাখিদের ডাক, আর পেছনের স্টাফ কোয়ার্টার থেকে ভেসে আসছে শিশুদের হাসি-খেলা।

 

মামা চুপচাপ বারান্দায় এসে দুই কাপ চা এগিয়ে দিলেন। কাপ হাতে নিয়ে আমি গভীরভাবে শ্বাস নিলাম—সেই গরম ধোঁয়ার ভেতরে যেন মিশে আছে সাতগাঁওয়ের প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি দৃশ্য, প্রতিটি মানুষ। চুমুক দিলেই মনে হলো, আমি যেন প্রকৃতির বুক থেকে এক ফোঁটা আনন্দ তুলে নিচ্ছি।

 

সেই মুহূর্তে বুঝলাম—ভ্রমণ শুধু নতুন জায়গা দেখা নয়, বরং মানুষের আন্তরিকতা, পরিবেশের স্নিগ্ধতা আর এক কাপ চায়ের উষ্ণতাও সমানভাবে হৃদয়ে জায়গা করে নেয়। সাতগাঁও চা বাগানের এই সফর তাই আমার জীবনের স্মৃতির পাতায় চিরসবুজ হয়ে থাকবে।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park