জাকির আলম
একজীবনে মারিয়ার সাথে হাজার বছর কাটালেও মনের মধ্যে কখনো ক্লান্তি আসবে না। সম্মুখ থেকে সম্মুখে তার হাত ধরে নিরুদ্দেশ কোনো ভুবনে হারিয়ে যাওয়া যায় অবলীলায়। প্রিয় কবিতার মোহনীয় আবেশে তাকে পাঠ করা যায় চরম ভালোলাগায়। হেমন্তের পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধে ব্যাকুল করে তার নান্দনিক রূপের বহ্নি ছটায়। শিশির স্নাত ভোরের আকাশে নব সূর্যের আগমনে ছুঁয়ে যায় কলেবর তার স্নিগ্ধ মায়ার আবেশে। হালকা শীতের রাতে তার একটু উষ্ণতা পেতে বিবাদী মনটা বায়না ধরে হরহামেশা। মাঝ রাতে ফুটে থাকা হাজারো ফুলের সুবাস ভেসে আসে তার কোমল হাসির অকৃত্রিম উৎফুল্লতায়। নেশার ঘোর কাটতে না কাটতেই ডুবে যাই গভীর ভাবনার জগতে৷ তার একটু ভালোবাসা পেতে তৃষ্ণার্ত মন ছুটে চলে ঝড়ের উপক্রমে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কোনো ভাবে তার কাছাকাছি আসতে পেরে সার্থক মনে হয় মানব জনম। এই মারিয়াকে ভালোবাসার গভীরতা আমাকে করেছে পরিযায়ী পাখি। ফেরারী জীবনে মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়তে উড়তে যেদিন ফুরিয়ে যাবে বেঁচে থাকার আয়ু, সেদিন এই মারিয়ার হাত ধরে অমরত্ব হতে চাই বহ্নি কালের খেয়ায়। তার নিমীলিত হাসির ঐকান্তিক মনোজাগরণে অনির্বাণ সুখে যেদিন আমি থমকে যাব পৃথিবীর বুকে, সেদিন এলোমেলো বাতাসের দৌরাত্ম্যে মিলিয়ে যাব তার বাহুবন্ধনে। রক্তের সম্পর্ক ছিন্ন করে তার পথে আসীন হব অনন্তকালের তরে।
বেগতিক মনোভাবে ছুঁটে চলার আনন্দে তাকে আলিঙ্গন করে বুকে টেনে নিব নিরুদ্যম সোৎসাহে৷ সমস্ত জগতের নিয়ম শৃঙ্খলা ভেঙে দিয়ে মশাল হাতে সীমাবদ্ধতার পাঁজর থেকে বেরিয়ে এসে দমকা বাতাসের মতো অতিক্রান্ত পথের বাঁকে শায়িত হব অনির্বাণ লাভের আশে। মারিয়াকে ভালোবাসার অভিপ্রায়ে নিঃশেষ হব তবুও ব্যাকুল মনে তার নাম জপে হাসতে হাসতে অনিরুদ্ধ শ্বাসে ঘুমিয়ে যাব পরম তৃপ্তির ঢেকুর তুলে। মারিয়াকে ভালোবাসতে পারাটাও স্বর্গীয় সুখের চেয়েও সংখ্যাতীত আনন্দের ধারাক্রম খুঁজে পাওয়া। একজীবনে তাকে কাছে পাওয়ার মনোবাসনা পূর্ণ হবে না কোনো কালে। রক্তিম আবহে আলোর বেগে ছুঁটে চলার সমন্বয়ে তাকে চিরসাথী করতে বেখেয়ালি মন বায়না ধরে সময়-অসময়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে কফিশপের দিনগুলো তার সাথে কাটানোর মুহূর্তগুলো সোনালি দিনের সাক্ষী হয়ে রবে। ক্যাম্পাসের লাইব্রেরিতে মুখোমুখি বসে গল্প করার প্রাক্কালে সময় সময় কবিতার পঙক্তি আওড়াতে আওড়াতে হারিয়ে গেছি সমন্বিত ভুবন ছাড়িয়ে অন্য কোনো ভুবনে। কখনো তার ফর্সা হাতের আঙুলে আঙুল ঠুকে বেদম ঝালের ঝালমুড়ি খেতে খেতে চোখের জলে ভেসে গেছি কিয়ৎকাল। বাদাম আর ফুচকার প্রতি মারিয়ার ভীষণ অনীহা থাকায় এড়িয়ে গেছি বাদাম আর ফুচকার দোকানগুলো। সোনালি আকাশে ঘুড়ি উড়াতে উড়াতে হারিয়ে গেছি মারিয়ার মনোজগতে। তার রূপের স্বরূপ ঠিক আমার কলমে ধরে না।
হালকা লিপস্টিকের পোঁচ মাখা তার রসাত্মক ঠোঁটগুলো যখন ভেংচি কাটে লজ্জায় মুড়িয়ে যাই বেসামাল ভালোলাগার মূর্ছনায়। ভীষণ ভালোবাসি এই মারিয়া মেয়েটাকে। অর্থ আর বিত্তের প্রতি তার চরম অনীহা। কোনো প্রকার অহংকার তাকে ছুঁতে পারেনি। একদম মাটির মানুষ সে। আচার ব্যবহারে নেই কোনো বিচ্যুতি। হাস্যোজ্জ্বল কথামালায় যে কেউ মুগ্ধ তার সরলতায়। একরাশ প্রীতি আর ভালোলাগার বহ্নিশিখা আমাকে করেছে পরাজিত। প্রতিনিয়ত তার মায়ার জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছি অর্বাচীন ভাবনালোকে। গল্প আর কবিতায় তাকে সাজাতে গিয়ে ব্যর্থতায় ডুবে গেছি বারংবার। তবুও চেষ্টার পথ অব্যাহত রেখে গেছি মনের জোরে। হাত বাড়িয়ে তার সাথে ভালোবাসার বিনিময় করতে কত না পায়তারা করেছি, তবুও তার কাছাকাছি যেতে পারিনি কখনো। বরং বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে সে আমাকে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে পরম মনে। কখনো অবজ্ঞা করে দূরে ঠেলে দেয়নি দুর্ব্যবহার করে। প্রিয় মানুষের জায়গায় আমাকে রেখে সম্মান দেখিয়েছে সমপরিমাণ। সেজন্য চির কৃতজ্ঞতা পোষণে তাকে আমি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণে রাখব হাজার বছর। কোনো মিথ্যে অভিযোগ নেই তার প্রতি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তার সাথে কাটানো প্রতিটি দিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা রবে জীবনের আর্কাইভে।
মারিয়ার সরলতায় আমি মুগ্ধ। চলার পথে তার মতো নিবেদিত বন্ধু পেয়ে নির্বাণ লাভ করেছি একজীবনে। লক্ষ জনমে তাকে কাছে পাওয়ার মনোবাসনা ম্লান হবে না কোনোদিন। অম্লান ভালোবাসায় তাকে আমার অন্তরে জায়গা দিয়েছি। অনন্তকাল এই সম্পর্ক ধরে রাখতে কোনো কার্পণ্য নেই আমার মনে। যাপিত দুঃখবোধ যার কাছে চরম বিশ্বাসে খুচরো পয়সার মতো শেয়ার করা যায়। যার কাছে মন খারাপের মূল্য আছে, সম্পর্কের টান আছে, নিঃসঙ্গতার গল্প শোনার অফুন্ত ধৈর্য আছে তাকে আমি হারাতে চাই না কোনোদিন। একবুক ভালোবাসার সমন্বয়ে তাকে আমি জড়িয়ে নিয়েছি ধমনীর প্রতিটি নিঃশ্বাসে। আমার মেঘমুক্ত বিশাল আকাশে তাকে উড়তে দিয়েছি মুক্ত বিহঙ্গের মতো। আমার সমস্ত আবেগ অনুভূতি এই মারিয়াকে ঘিরে। আমার প্রতিটি স্বপ্নের দোরগোড়ায় তাকে রেখেছি অকৃত্তিম বিশ্বাসে। তার সাথে চলতে পথে কোনো রূপ বাঁধা বিঘ্ন ছাড়া ক্রমাগত হেঁটে যেতে পারি পৃথিবীর শেষ সীমানায়। এক আকাশ কৃতজ্ঞতার সমন্বয়ে তার সাথে লক্ষ জনম কাটিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে পোষণে দিন যাপন করি নিরুদ্যম নির্বিঘ্নে।
জগতের সমস্ত কিছু অগ্রাহ্য করে তাকে পেয়েছি কঠিনতর সাধনার পর। তাকে ভালোবাসার কোনো সীমা পরিসীমা নেই। তার সাথে ঘর বাঁধার মতো কোনো বন্দী সীমারেখা নেই। বরং মুক্ত মনে দু’জনার উড়ে চলা এলোমেলো বাতাসে ভর করে। হাজারো ইচ্ছেকে মাড়িয়ে তার সাথেই থেকে যাওয়ার দৃঢ় শপথ নিয়েছি। পায়ে পায়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে খুঁজে চলেছি আদিগন্ত পথের ঠিকানা। মাঝি বিহীন নৌকাতে ভেসে অজানা জগতের সন্ধানে ডানা মেলেছি রংতুলির আঁচড় গায়ে মেখে। দখিনা এলোমেলো বাতাসে মারিয়ার খোলা চুলে প্রজাপতি দোল খেতে খেতে পেখম মেলেছে ময়ূরপাখি। চাঁদনি নিশীথে নদীর বালুচরে চিক চির করে বালি মাখা পাতিহাঁস। শেয়ালের হাঁক তোলা প্রাক্কালে ভেসে আসে রাত জাগা মানুষের বিষাদের গান। কত শত ভাবনা খেলা করে মারিয়াকে নিয়ে মনের জগতে। তাকে ছাড়া রিক্ত আমি। তাকে হারালে মৃত্যু আমার অবধারিত। দেহের প্রতিটি শিরা-উপশিরায় তার উপস্থিতি বিদ্যমান। এক নিমেষ তাকে না দেখলে অস্থির লাগে দেহের ভিতর। তাকে ভালোবাসার মধ্যে দিয়েই আমার বেঁচে থাকা। আমার সব স্বপ্নগুলো তাকে ঘিরে। প্রতিটি নিঃশ্বাস চলে তার নামে। এই মারিয়াকে হারালে একেবারে নিষ্প্রাণ হব আমি। কোনোকিছু বুঝি না তাকে ছাড়া। এই মারিয়া আমার লক্ষ জনমের তৃপ্তি মাখা সুখ। আমার হাজার গল্প-কবিতার শব্দ ভাণ্ডার। তাকে নিয়ে লেখার ভাষা স্বতঃস্ফূর্ত। উচ্চকিত আমি তাকে ভালোবেসে।
আমার স্বপ্নের নায়িকা এই মারিয়া। কোনো কালে তাকে যায় নাকো ভোলা। তার সাথে পথ চলতে ভালো লাগে, তার কল্পনার মাঝে ডুবে যেতে ভালো লাগে, তার সাথে খোলা আকাশের নিচে রাত্রি যাপন করতে ভালো লাগে। ছোট ছোট ইচ্ছে এবং স্বপ্নগুলো তার অভিপ্রায়ে উড়াতে ভালো লাগে। সুরের ভুবনে প্রতিনিয়ত ছুঁটে চলি নতুন সুরের আবহে তাকে নিয়ে গান লেখার প্রত্যয়ে। পত্রিকার পাতা ভরে দেই তাকে নিয়ে গল্প-কবিতা লিখে। কাব্য সুধা কথামালায় কবিতার ভাঁজে ভাঁজে তাকে ছন্দবদ্ধ জালে জড়িয়ে ফেলি। নতুন উদ্যমে তার সাথে বেঁচে থাকার বায়নাগুলো পূরণ করতে গমন করি স্বয়ং ঈশ্বর সকাশে। তাকে ভালোবাসার প্রমাণ স্বরূপ নিজেকে সঁপে দেই অবনত চিত্তে। ব্যাকুল প্রাণে তার সাথে সময় ক্ষেপণ করতে কত না অজুহাতে তার কাছাকাছি আসি। ধূলোয় মাখা পথে তার রাঙা চরণে লেপটে যাওয়া ধূলিকণা সানন্দে মেখে নেই আপাদমস্তক। তাকে ভালোবাসি তার স্বমহিমায় উজ্জীবিত হতে। তার রূপের আলোকে আমি আলোকিত। তার মিষ্ট অভিভাষণে বিমুগ্ধ আমার অন্তরাত্মা। তাকে নিয়ে লেখার দুঃসাহসে বারংবার চুপসে গেছি নিজের ভিতর।
তবুও মনের কথাগুলো বাঁধন ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে ঝরনাধারার মতো। তাকে অগ্রাহ্য করার মতো শক্তি বা সাহস কোনোটাই আমার নেই। মনপ্রাণ উজাড় করে একদম নিবেদিত চিত্তে তাকে আমি ভালোবাসি। তাকে ভালেবাসার ফল স্বরূপ যেকোনো কঠিন শাস্তি হলেও আমি মেনে নিতে তৎপর। পৃথিবীর কোনো শক্তি আমার কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না। অদম্য শক্তির বলয়ে তাকে আমার হৃদয়ে বেঁধেছি শক্ত বাঁধনে। ছিঁড়ে যাওয়ার কোনো ভয় নেই। হারানোর জুড়ি নেই। স্বর্গীয় ভালোবাসার আপন শক্তিতে তার সাথে পথ চলা জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি। মারিয়া আমার অনন্তকালের সারথি। তার পথেই আমি সদা ধাবমান। বিকল্প বলে নেই কিছু নেই। পৃথিবীর বুক জুড়ে লিখে দিলাম মারিয়া আমার। আমি তার নিবেদিত পূজক। এই সম্পর্কের স্থায়ীত্ব টিকে থাকবে জনম জনম। মরিচা ধরবে না কোনো কালে। যুগে যুগে আরো ঘনীভূত হবে মারিয়ার সাথে আমার সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দু। যা কখনো ম্লান হবার নয়। যা কখনো বিচ্ছিন্ন হওয়ার নয়।