ঈদে মিলাদুন্নবী সা.ও আমাদের করণীয়
মতিউর রহমান
ঈদ মানে আনন্দ।
ইসলামে রমজানের সপ্তম দিন এবং জিলহজের দশম দিনে শরীয়ত মোতাবেক আনন্দ উদযাপনকে ঈদ বলা হয়।
ইসলামে ঈদ দুটিই- ১. ঈদুল ফিতর ২. ঈদুল আজহা।
* মিলাদ অর্থ জন্মদিন। মিলাদুন্নবী অর্থ নবীজির জন্মদিন। মিলাদুন্নবী বলতে আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সা. এর জন্মদিনের কথাই বলা হয়ে থাকে।
নবীজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জন্ম:
নবীজি সা. এর জন্মের সাল হলো- হস্তিবাহিনির বৎসর তথা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দের রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার দিন। তবে জন্মের তারিখ নিয়ে ২/৮/১২ ইত্যাদি বিভিন্ন মত রয়েছে। তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ হলো ১২ রবিউল আউয়াল এবং বিশুদ্ধ হলো ৮ রবিউল আউয়াল।
নবীজির জন্ম, নবুওয়াত লাভ এবং মৃত্যু সবই হয়েছে সোমবার দিন।
* ঈদে মিলাদুন্নবীর সূচনা:-
৬০৪ হিজরিতে ইরাকের মসোল শহরের বাদশাহ আবু সাঈদ মুজাফফর কাওকারি এবং আবুল খাত্তাব ওমর বিন দিহয়ার মাধ্যমে বর্তমান মিলাদ পালন প্রথা শুরু হয়েছিল। মিলাদুন্নবী উদযাপনের বৈধতা নিয়ে সর্বপ্রথম “আত তানবীর ফী সিরাজিম মুনীর” নামক বই লেখে উক্ত দরবারি মোল্লা আবুল খাত্তাব বিন দিহয়া। বাদশাহ তার উপর খুশি হয়ে তাকে হাজার দিনার পুরুষকৃত করে।
ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহ. উক্ত দরবারী মোল্লা সম্পর্কে লিখেন যে, সে একজন মূর্খ, অহংকারী ও লোভী আলেম ছিলো। সে পূর্ববর্তী ইমামদের সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করতো এবং খুব খারাপ ভাষী ছিলো। বাদশাও উক্ত দরবারি মোল্লা সম্পুর্ন নিজের স্বার্থের জন্য মিলাদুন্নবী নামে বিভিন্ন বেদাত শুরু করে।
বেদাত হলো- শরীয়তে যা অনুমোদিত না এমন কোন নতুন আমল আবিস্কার করা।
ইতিহাস অনুসন্ধান করলে দেখা যায় যে, নবীজি সা. এর যুগ, সাহাবায়ে কেরামের যুগ, তাবেয়ী ও তাবে তাবেয়ীর যুগ পর্যন্ত মিলাদুন্নবীর বর্তমান প্রথা পরিলক্ষিত হয়নি।
* উপরোক্ত আলোচনা থেকে জানতে পারলাম যে, বর্তমান প্রচলিত মিলাদ মাহফিল উদযাপন সম্পূর্ণ হারাম ও বিদাত। যা খুবই গোনাহের কাজ।
ইসলামে ঈদ দুটিই- ১)ঈদুল ফিতর ২)ঈদুল আজহা।
সুতরাং ঈদে মিলাদুন্নবী নামে তৃতীয় কোন ঈদ উদযাপনের সুযোগ নেই।
ঈদে মিলাদুন্নবী নামে আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ ও বিভিন্ন ভাবে আনন্দ উদযাপন সম্পূর্ণ বেদাত।
আমাদের করণীয়:
উপরিউক্ত বেদাতী কাজ থেকে নিজে বেঁচে থাকা ও অন্যান্যদের বুঝিয়ে তা থেকে বাঁচানো। বিভিন্ন হাদিসে পাক থেকে জানা যায় যে, নবীজি সা.প্রতি সোমবার রোজা রাখতেন ; সে হিসেবে আমরাও রোজা রাখতে পারি, নবীজির জীবনী আলোচনা করতে পারি। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে সবধরনের বেদাত থেকে বেঁচে সঠিক নিয়মে নেক কাজ করার তাওফিক দান করুন, আমিন।