সায়েন্স ফিকশন
(পাশের গ্রামের)
মোঃ নুর নবী হোসাইন নুর )
মানুষ কখনো জানেনা, কেবা কখন একে অন্যের শত্রু হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। কেননা সফলতার উচ্চ শীর্ষে যাওয়ার জন্য গবেষণা, চেষ্টা, পরিশ্রম মাঝে মনকে দেন মুগ্ধ করতে হয়। তেমনি একদিন বিকেলে তিনটার কিছু সময় পরে বিজ্ঞান জগতের মনোভাব পণ্য গবেষক নুর সাহেব তা৫১র “চেষ্টা কুঠির গবেষণা কেন্দ্রে”গেলেন।
তবে যাওয়ার আগে তার পাশের বাসার বন্ধু ইমরান খান বাসায় আছে কিনা তা দেখে নিলেন।
না নেই ইমরান খান,
তবে ইমরান খান গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে গবেষক নুর সাহেব কে অনুসরণ করে তাকিয়ে রইলেন।
কিছুদিন গবেষক নূর সাহেব দেখতে পেলেন যে ইমরান খান দুপুরের খাবার শেষে বাজারে চলে যায়। কেন যায় তা গবেষক নুরী সাহেব জানে না। তবে হ্যাঁ গবেষকের মনে ধারণা ছিল যে ক্রিকেট খেলা চলমান রয়েছে তা দেখতে যাচ্ছে ইমরান খান। ইমরান খান বাজারে চলে যায় আর গবেষক নবী সাহেব ঢুকে পড়েন তার গবেষণা কেন্দ্রে।
এটা গবেষক নূর সাহেবের প্রতিদিনের একটি রুটিন বটে এবং কয়েক দিনের ইমরান খানের খাবারের পরে বাজারে যাওয়া রুটিন মনে হয়।
গবেষক নূর সাহেব তাহার গবেষণা কেন্দ্রে ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেন।
গবেষক জানে না যে তার পিছনে কেউ কি আসছে কিনা। তবে জানবে কি করে ইমরান খান তার পিছনে পিছনে আস্তে আস্তে আসতে লাগলো। যখনই গবেষক তার গবেষণা কেন্দ্রে ভিতরে প্রবেশ করে, তখনই ইমরান খান গবেষণা কেন্দ্রের দক্ষিণ পাশে দিয়ে উঁকি মেরে দেখল যে গবেষক নূর সাহেব কি করে, এখানে প্রতিদিন।
ইমরান খান মাস কয়েক হলো গবেষক নূর সাহেব কে অনুসরণ করে চলে।নুর সাহেব কোথায় কি করে তাই জানা ছিল তার মূল অনুসরণ।
কিন্তু গবেষক নূর সাহেব তা কখনোই জানেনা।
এমনি করে ইমরান খান জানালা কাছে এসে উঁকি দিয়ে গবেষক নুর সাহেব কি করে দেখে চলে যায়।
আর গবেষক প্রতিদিন বিকেল তিনটার পরে গবেষণা কেন্দ্রে গেলে রাত একটা কিংবা কখনো দুইটা তিনটায় বের হয়।
যখন রাত এগারোটা বাজে তখন ইমরান খান আবার গবেষক নূর সাহেবের সেখানে যায়। তখন পুরো চেষ্টা কুঠির গবেষণা কেন্দ্রের চতুর্দিকে অন্ধকারে আচ্ছন্নময় হয়ে আছে। তবে শুধু কেন্দ্রের ভিতরে মিঠি মিঠি করে বাতি জ্বলে। চেষ্টা কুটির গবেষণা কেন্দ্রের চারপাশে অন্ধকার হওয়ার কারণ গাছপালা বন জঙ্গলের ভরা যার কারণেই ইমরান খান নিজে নিজেকে দেখতে পাই না। অন্যদিকে গবেষক নূর সাহেব নিজ গ্রামে মাঝে গবেষণা কেন্দ্র টা তৈরি করে। তবে হ্যাঁ কেন্দ্রের লোকেশন গাংচিল বাজার থেকে বের হয়ে একটি রাস্তা একে-বেঁকে কিল্লার বাজারের সাথে সংযোগ ঘটে।
কিল্লার বাজারের পশ্চিম দিকে রাস্তার উত্তর পাশে কেন্দ্র টা। গাছপালা বন জঙ্গলে ঘেরা কেন্দ্রটা চারপাশে কিছুদিন যাবত অপরিচ্ছন্নতা কারণে জঙ্গলে পরিত্রাণ হয়ে আছে। অনেক রাত হয়ে যাওয়ার কারণে যখন চতুর্দিকে বাতি গুলো বন্ধ হয়ে যায় এবং গবেষকে কেন্দ্রের বাইরের বাতিটা বন্ধ করে। তখন অন্ধকারে ঘেরা হয়ে যায় কেন্দ্রটা। দীর্ঘ প্রায় ১০ বছরের বেশি সময় ধরে জায়গাটা পরিত্যক্ত । কেননা জায়গাটা গবেষক নুর সাহেবের বাবার।তার বাবা মা ভাইয়েরা তাদের ঢাকা বাসাতে থাকেন। কয়েক বছর যাবত আসে না তার বাবা-মা। যার কারনেই তার বাবার পরিত্যক্ত জায়গায় গবেষক তৈরি করে চেষ্টা কুটির গবেষণা কেন্দ্র নামে বিজ্ঞান গবেষণার কেন্দ্র। গবেষক নারী সাহেব যার কারণে গ্রামে থাকতে শুরু করে। তার বাবার পুরাতন পরিচিত গ্রাম হিসেবে তাকেও গ্রামের সকল শ্রেণীর মানুষ পরিচিত। যার কারণে গ্রামবাসীরা তার গবেষণা কেন্দ্র এবং তার গবেষণার কারণে তাকে গবেষক নামে অবহিত করে ডাকেন।
গবেষক নূর সাহেব বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু এভিয়েশন এন্ড অ্যারোসেপস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণা ও পড়ালেখা শেষ করে। তিনি তারপরে জাপান থেকে উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহণ করে, বাংলাদেশে এসে নিজ পিতালয় গ্রামে একটি গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করে যা গ্রামবাসীর অধিকাংশের কাছে অযৌক্তিকভাবে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যার কারনে গবেষক নূর সাহেবের গবেষণা তাদের কাছে সহ্য হয় না। তবে হ্যাঁ ধীরে ধীরে গবেষক যখন গ্রামের কিছু সংখ্যক যুবক ছেলেদের কে বিজ্ঞান গবেষণার প্রশিক্ষণ দিয়ে বিজ্ঞানের আবিষ্কারের অবদানের জন্য সক্ষম করে গড়ে তোলে।
তখনই গ্রামবাসীদের কাছে নূর সাহেবের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। একদিন তার প্রতিবেশী বা পাশের বাসার বন্ধু ইমরান খান চিন্তা করল গবেষক এমনকি কাজের জন্য গ্রামে সুনাম অর্জন করেছে।তা আমাকে দেখতে হবে ।
নূর সাহেব প্রতিদিন ঘন্টা তিনেক সাহিত্য চর্চা এবং তার সাথে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা পড়াশোনা করে।তার পরে বাকি সময় গুলো গবেষণা কেন্দ্রে ব্যায় করে থাকেন।
দুপুরের খাবার শেষ করে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রবেশ করেন গবেষণা কেন্দ্রে।
কেন্দ্রটা বেশি বড় আকার নয় এবং চোরা আকারে নয় মেডেল টার্মিনাল বলা যেতে পারে।
তবে দৈর্ঘ্য দশ থেকে বারো ফিট এবং প্রস্থ সাত থেকে আট ফিট হতে পারে। কেন্দ্রের এক কোণে তিন ফিট কিংবা দুই ফিট জায়গায় তার গবেষণার সকল ধরনের যন্ত্রপাতি দেখেছেন। গবেষক নূর সাহেব তার পড়াশোনা সাহিত্য চর্চা এবং ঘুমানো জন্য অন্য একটা ঘর রয়েছে।
ইমরান খান চুপচাপ গবেষণা কেন্দ্রের পাশে এসে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তবে গবেষক কিছুতেই টের পেলো না।
ইমরান খান চুপচাপ জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখলো গবেষণায় যুদ্ধবিমান আবিষ্কারের জন্য গভীর মনোযোগ দিয়ে কাজে ডুবে রয়েছে। ইমরান খান যুদ্ধবিমান আবিষ্কারের বিষয়টি দেখে গবেষক নুর সাহেব কে সেখান থেকে সরিয়ে দিয়ে সেই নিজে আবিষ্কার করবে এমন লোভ পাই তার মনে। তবে গবেষক যেই গবেষণাটি করতাছে সেটি একটি জটিল গবেষণা যার কারণে নিজগ্রাম তথা বহি-বিশ্বের গ্রাম গুলো তে সুনাম ছড়িয়ে যাবে গবেষকের। গবেষণার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আর এক মাস কিংবা দুই মাস লাগতে পারে।
বিজ্ঞান জগতের আবিষ্কারের জন্য গবেষক নুর সাহেব গত ২০১৯ সালের করোনা আসার পর থেকে অনেক চিন্তা ভাবনা করে নিজগ্রাম উন্নয়ন করতে এবং বহিবিশ্বের গ্রাম গুলোর চেয়ে একটি শক্তিশালীপূর্ণ রোল মডেল করার জন্য যুদ্ধবিমান আবিষ্কার করার মনোনিবেশণ তৈরি করে।
তখন থেকেই তার পরিকল্পনা অনুসারে কাজ শুরু করে। তবে এর আগে তিনি একটি ড্রোন আবিষ্কার করে। ডোন আবিষ্কারের সফলতার কথা অন্য একদিন বলবেন তিনি। তবে আজ তার ড্রোনের সফলতার জন্য তাকে যুদ্ধবিমান আবিষ্কারের স্বপ্ন দেখায়।
গবেষক নুর সাহেবের স্বপ্ন গ্রামের বড় আকার উন্নয়ন এবং কর্মতৎপরতা গড়ার আবাস পাবেন। তাই গবেষক চিন্তা করে বিশ্বের অন্যান্য গ্রামের যেই যুদ্ধবিমান রয়েছে তার সেই গবেষক নূর সাহেবের যুদ্ধবিমানের তৎপরতা অনেক বেশি যুদ্ধ করতে সক্ষম হবে।
যুদ্ধবিমান আবিষ্কার করার শেষ সময়ে গবেষক নুরসাহেব বেতার তরঙ্গের কম্পাঙ্ক একটি অন্যটির সাথে যেনো মিথস্ক্রিয়া না করে। তার জন্যই কম্পাঙ্ক বিরোধী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সিগন্যাল সেন্স ব্যবহার করেন।
কারণ যুদ্ধবিমান টি যেন যুদ্ধ করতে গিয়ে সেলুলার সিগন্যালের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যার জন্যই গবেষক তার যুদ্ধবিমানে অ্যালুমিনিয়ামের রুপালি ধাতু দিয়ে তৈরি করার সময়ে যুদ্ধক্ষেত্রে যেনো কম করে ২২২০ কিলোমিটার পাল্লা নেয়া হয় এবং প্রতি ঘন্টায় ৩৫২৯ কিলোমিটার গতিবেগ হয়।
আর পূর্ণ জ্বালানি ব্যয় হয় যেনো শতকরা 0.87 / এবং ১১৮ থেকে ১৩৭ মেগাহার্জ ব্যবহার করে। শেষ সময়ে এসে গবেষক দেখেন যুদ্ধ বিমানের নেটওয়ার্কের একটু সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি মনে করেন কঠোর পরিশ্রম করে বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সক্ষমতা তৈরি করার জন্য এই কেন্দ্রটা। গত ২০১৯ সাল থেকে অনেক পরিশ্রমের চেষ্টায় এখন তার প্রায় সফলতার দ্বারপ্রান্তে কিংবা কাছাকাছি এসেছেন।
গবেষক নূর সাহেব জানেন এই কাজে সফলতা অর্জন করতে পারলে তার গ্রাম অন্য গ্রামের চেয়ে মাথা তুলে নিবে। গবেষক নুর সাহেব জানে না যে তার পিছনে শত্রু লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে অনুসরণ করতাছে। সেদিন শেষ রাত প্রায় বারোটা সময় ইমরান খান গবেষক কে দুনিয়ায় থেকে চিরতরে বিদায় দেয়ার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং একই সাথে পাশের গ্রামের কয়েকজন কে ফোন দিয়ে নিয়ে আসে। গবেষক কাজ করতে করতে প্রায় ক্লান্ত হয়ে পড়েন তার জন্য একটু চেয়াররে বসে বিশ্রাম নিবে এমন সময় বাহিরে থেকে কে যেন ডাক দিলো গবেষক কে। গবেষক দরজা খুলে তাদের দিকে তাকালেই শত্রুরা কি যেন গবেষকের চোখে মেরে দেয়। চোখ দুটো অন্ধ হয়ে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে যান গবেষক। শত্রুরা নূর সাহেব কে বাহিরে এনে হত্যা করেন এবং কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকে যুদ্ধবিমানের সকল কন্ট্রোলার কিংবা কন্ট্রোলিন তার গুলো কেটে দেয়া হয়। যার কারনে যুদ্ধবিমানটি শেষ হয়ে যায়।
গবেষক নূর সাহেবের কেন্দ্রে একটি কাগজ পড়ে থাকা দেখে সেখানে গ্রামবাসীরা , কাগজে লিখা আছে শত্রুদের পূর্বে পরিকল্পিত নীল নকশা যেখানে পাশের বাসার ইমরান খান এবং পাশের গ্রামের পাঁচজন লোকের কথা উল্লেখ রয়েছে।
তারা বললেন নূর সাহেব কে কখনো বিজ্ঞানের আবিষ্কার করতে দেয়া হবে না। কারণ একমাত্র আমাদের গ্রামের লোক গুলো পারবে এবং আরো বললো আমরা ছাড়া কেউ যদি অন্য গ্রামে আবিষ্কারের মনোনিবেশন কিংবা পরিকল্পনা করে তাকে এই দুনিয়ায় থেকে চিরতরে বিদায় দেওয়া হবে। শুধু তাই নয় আমাদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা আমরা গবেষক নূর সাহেবের গ্রামে আমাদের গ্রামের ইমরান খান সহ অসংখ্য লোক গবেষণা কারীদের অনুসরণ করে রাখার জন্য তাদেরকে পাঠাইছি।
আমরা ছাড়া আমাদের পাশের কোন গ্রাম যদি আবিষ্কার করার জন্য হাত বাড়ায় আমরা তাদের কে হত্যা করবো। ইমরান খান সহ সকল শত্রুরা যখন চলে যায় তখনও গবেষক সাহেবের লাশ বাহিরে পড়ে থাকেন। পরের দিন সকাল দশটা সময় গবেষকের প্রশিক্ষণ দেওয়া একরামুল হক আসলো তার স্যারের সাথে দেখা করতে। এমন অবস্থা দেখে একরামুল হক চিৎকার করতে গ্রামের সকল লোকজন এসে দেখল গবেষককে হত্যা করা হয়েছে। গ্রামের কেউ একজন কেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ করলে হঠাৎ একটি কাগজ পড়ে থাকতে দেখলেন। কাগজটি তুলে নিয়ে লেখাগুলো পড়ে বুঝতে পারলেন যে সব চক্রান্ত ফাঁসির গ্রামের যার সাথে ইমরান খান জড়িত রয়েছে। শত্রুরা সবাই পালিয়ে তাদের নিজ গ্রামে চলে যায়। সেই থেকে নিজ গ্রামের কিছু মানুষ পাশের গ্রামকে ঘৃণা করে থাকেন।
শেষ হয়ে গেলো গবেষক নূর সাহেবের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পরিশ্রম চেষ্টা করে গ্রাম উন্নয়ন রোল মডেল করার পরিকল্পনা। গ্রামবাসীরা হারালো একজন বিজ্ঞান জগতের গবেষণার কিংবদন্তি নক্ষত্র।