পৃথিবীর কোনো কিছু আমাকে সুখ দিতে পারেনি।মাধ্যমিকে রাজ্যে ফার্স্ট হাওয়া ছাত্রটি আমার সামনে এসে যখন হাসলো তখন আমি তার ভবিষ্যত্ নিয়ে উদ্বিগ্ন ।
পৃথিবীর কোনো কিছুই আমাকে সুখ দিতে পারেনি উচ্চপদস্থ গ্রেড এ অফিসারটি যখন আমার সামনে এসে হাসলো তখন আমি তার পারিবারিক কলহ নিয়ে চিন্তিত।
পৃথিবীর কোনো কিছুই আমাকে সুখ দিতে পারেনি
আমার আত্মীয় রুবায়েত খালু যখন মাউন্ট এভারেস্ট জয় করে আমার সামনে এসে দাড়িয়ে মুচকি হাসি দিলো তখন আমি তার অহংকার দেখে জর্জরিত।
পৃথিবীর কোনো কিছুই আমাকে সুখ দিতে পারেনি
আমার সহধর্মিনী মায়েশার মা’র সাথে বাসর রাত্রে প্রথম যৌনসঙ্গমের পর আমি তার নকলি হাসি দেখে ব্যাথিত।
পৃথিবীর কোনো কিছুই আমাকে সুখ দিতে পারেনি
ঐ মেয়েটি যার জন্যে সারাটা সকাল জানালার দিকে তাকিয়ে ভাবতাম এখন সে আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য ব্যাকুল
আমি তাকে অবহেলা করি, এখন আমি তার আদর থেকে দুঃখিত।
পৃথিবীর কোনো কিছুই আমাকে সুখ দিতে পারেনি
যে মেয়েটি আমার ঠিকানায় রোজ রোজ চিঠি লিখে
আমি তার এই প্রেম থেকে বিরক্ত।
পৃথিবীর কোনো কিছু আমাকে সুখ দিতে পারেনি
এখন আর পৃথিবীর কোনো কিছুই আমাকে সুখ দিতে পারেনা
আমাকে সুখ দিতে পারেনি ওড়তি বয়সী নগরের তরুণী
আমাকে সুখ দিতে পারিনি ভোরে জেগে থাকা চোখে কাজল পড়া যুবতী মেয়েটি
আমাকে সুখ দিতে পারিনি মায়েশার মা।
পৃথিবীর কোনো কিছুই আমাকে সুখ দিতে পারেনি।
আমাকে সকলে দুঃখ দিয়েছে।
আমাকে দুঃখ দিয়েছে সঙ্গীহীন দুপুর, বিকেলের নিঃসঙ্গতা, চৈত্রের ধূ ধূ বালি, অস্পষ্ট কিছু মানুষের ফরসা মুখ, সেওয়া কেজি চাল, আমার মাটির ঘরের শিশির-
পৃথিবীর কোনো কিছুই আমাকে অতটা সুখ দিতে পারেনি যতটা সুখ মউত আমাকে দিয়েছে। মসজিদের মিনারে মিনারে যখন আমার জানাজার নামাযের সময় ঘোষণা করা হয়েছে মৃত্যুর মতো সুখ হাতে পেয়ে ফিসফিস করে ছায়াহীন সঙ্গীহীন নির্জন দুপুরের আলোতে আমি বলে উঠেছি
কুল্লু নাফসিন জাইকাতুল মাউত…