কবি পরিচিতিঃ
নাম: সামিম আক্তার, পিতা: মোঃ হুসেন, মাতা: নাজমা বেগম। গ্রাম: ধাড়ীয়াখুরী ডাকঘর: রামগঞ্জ, জেলা: উত্তর দিনাজপুর, ইসলামপুর।
জন্ম: ২২-০৪-১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দ।
শিক্ষাজীবনঃ রামগঞ্জ হাই স্কুল হতে দ্বাদশ উত্তীর্ণ (২০১৬)। ২০১৭-২০১৯ অধিবেশন রামগঞ্জ সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে ডি.এল.এড করেন। একই সময়ে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে Computer Operator হিসাবে কাজ করেন।পরবর্তীতে University of North Bengal হতে সম্মানসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।(MA in Philosophy)
সাহিত্য জীবন: লেখালেখি শুরু ছাত্রজীবন থেকে। সত্তা সাহিত্য পত্রিকা ও মাধবীলতায় তুমি, এছাড়াও বিভিন্ন পত্রিকায় কবিতা প্রকাশিত হয়েছে।
০১
মিথ্যাবাদী
মিথ্যার জাল বুনে চলে সে দিন-রাত,
সত্যের রোশনি ঢেকে দেয় শত কৌশলজাত।
বাক্যের ফাঁদে ফেলে বিশ্বাসের খেলা,
মিথ্যাবাদীর কথায় আঁকা রঙিন ভেলা।
বলে এক, করে আরেক, দ্বিচারিতার খেলা,
বিশ্বাসের জমিনে ফেলে, অবিশ্বাসের ঢেলা।
তার প্রতিটি কথা যেন এক ছায়ার আড়াল,
মিথ্যার মুখোশ পরে, লুকিয়ে রাখে তার চেহারার কাহাল।
মিথ্যাবাদীর ফাঁদে একদিন ধরা পড়বে,
সত্যের আলোয় তার মুখোশ খুলে যাবে।
তখন সবাই দেখবে তার কীর্তিকলাপ,
মিথ্যার পথ যে একদিন হবে নাশের ছাপ।
মিথ্যাবাদীর ফাঁদে পড়ে, ক্ষণিকের সুখ,
তবে সত্যের পথেই মেলে, স্থায়ী শান্তির মুখ।
মিথ্যার ছায়া কাটিয়ে, এগিয়ে চলো সবার সাথে,
সত্যের পথে পাবেই তুমি, জীবনের আসল রথে।
০২
প্রথমদিন স্কুল
প্রথমদিন স্কুলে যাবো, আনন্দে মন ভরে,
মা বললো, “যাবি সোনা, সবার সঙ্গে মিলে।”
নতুন ব্যাগে বইগুলো সব সাজিয়ে রেখেছি,
সাদা জামা, চকচকে জুতো, এক্কেবারে নতুন।
স্কুলের বড়ো গেট খুলে, ঢুকতে গিয়েই থামি,
বাড়ির স্নেহের আঁচল ছেড়ে, মনে হলো কাঁদি।
কিন্তু মনে হলো, বন্ধুদের কথা,
একসঙ্গে খেলা করবো, শেখা হবে মজার।
শিক্ষকরা সব হাসিমুখে, ডাকলো ক্লাসের ভেতর,
নতুন নতুন কিছু শেখা, কেমন যেন অদ্ভুত।
একটুখানি ভয় লাগলেও, সব কিছুই রঙিন,
প্রথমদিন স্কুলে গেলাম, মনের মধ্যে সুখের হাওয়া।
টিফিনের ঘণ্টা বাজতেই, বন্ধুরা সব ছুটলো,
বাগানে গিয়ে খেলাধুলা, হাসি আর খুশিতে ভরে।
এই তো আমার নতুন পৃথিবী, স্কুলের এই জীবন,
প্রথমদিনের স্মৃতি মধুর, থাকবে মনে সারাজীবন।
০৩
মধুর স্বপ্ন
একা বসে ভাবি, তোমাকে নিয়ে,
আমার চিত্রে রঙিন পৃথিবী বুকে।
স্মৃতির বন্ধনে আমি সবসময়,
তোমার সাথে থাকা চেয়ে নিতে চাই বিশেষ।
প্রতি সন্ধ্যায়, প্রতি সকালে,
তোমার ছবি আমার মনে প্রতিদিন ছুঁয়ে।
তোমার হাসি, তোমার কথা,
আমার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পত্তি তোমার জন্য।
তোমার চোখের ভেতরে আমি দেখি,
অসীম সৃষ্টির স্বপ্ন ও ক্ষুধার খেলা।
তোমার সাথে থাকা চাই সব সময়,
তোমার অবিচ্ছেদ্য স্নেহ আমার জীবনের মূল মূল্য।
আমার প্রেম অক্ষম্য, তোমার মধুর স্বপ্নে,
আমার চিত্রে তোমার রঙে প্রস্থান হয়।
তোমাকে নিয়ে ভাবি, তোমার প্রতি,
আমার মনের গহীন স্নেহ যেন অসীম সাগরের মতো বড়।
প্রতিটি মুহুর্তে, প্রতি ক্ষণে,
তোমার স্পর্শে আমি পেতে চাই সুখের সম্রাট।
তোমাকে নিয়ে ভাবি আমি সব সময়,
তোমার সাথে থাকা আমার প্রতিটি অভ্যন্তরীণ ইচ্ছা।
০৪
সফলতা
সফলতা খুব কাছে, আমি ছুঁয়ে দেখবো,
স্বপ্নগুলোর ডালায়, এক এক করে সাজাবো।
কঠোর পরিশ্রমের ফল, আজ মিলবে হাতে,
হাল ছাড়িনি কখনো, দিন রাত একই পথে।
মেঘলা আকাশেও ছিলো আশা, এক ফালি রোদ্দুর,
চলেছি তাই অবিচল, ছিলো না কোনো গন্তব্য দূর।
কত বাধা, কত ঝড়, পেরিয়েছি প্রতিটি ধাপ,
সফলতার সিঁড়িতে উঠতে, নেই কোনো শর্টকাট।
আজ আমি দাঁড়াই সেই মঞ্চে, যেখানে আলো ঝরে,
সফলতা খুব কাছে, হাত বাড়ালেই ধরা পড়ে।
কষ্টের বিনিময়ে পাওয়া, এই মুহূর্তটা মধুর,
গর্বিত মনে বলি, আমি পারি, আমি যোগ্য ছিলাম শুরু থেকে সুর।
তবে মনে থাকে একটাই কথা, সাফল্য যেন না হয় শেষ,
নতুন স্বপ্ন নিয়ে আবার চলবো, এগিয়ে চলা আমার বাঁচার রেস।
সফলতা খুব কাছে, কিন্তু পথ এখনো বাঁকা,
নিজের শক্তিতে এগিয়ে যাবো, থাকবে না কোনো ভাঁটা।
০৫
হঠাৎ অচেনা ফোন
হঠাৎ বেজে উঠলো ফোন, অচেনা এক নম্বর,
মনটা কেমন কেঁপে উঠলো, মনে হলো কি আসর।
নাম্বারটা দেখি বারবার, পরিচিত লাগে বড্ড,
তবুও সন্দেহ জাগে মনে, যেন নেই তার খোঁজ।
ফোনটা তুলতেই শুনি কণ্ঠ, মৃদু, নরম, চেনা,
মনে হলো একে কোথাও, দেখেছি কি জানি কবে না!
অপর প্রান্তে হাসি মাখা, সেই কণ্ঠের ভাষা,
কতদিনের স্মৃতি যেন, এক নিমেষে ফিরে আসা।
ভেবে দেখলাম মন খুলে, কোথায় শুনেছি এই স্বর,
একটা পুরনো দিন মনে পড়ে, যেদিন ছিলো আঁধার।
হয়তো সেই পুরনো বন্ধু, যাকে হারিয়েছি বহুদিন,
ফিরে এল আজ আবার, অচেনা এক ফোনের রিন।
জিজ্ঞাসা করতেই হাসি পেলো, সেই কণ্ঠে গভীরতা,
বললো, “ভুলে গেছ আমায়? আমি তো আছি তোমার সাথে।”
স্মৃতির পাতায় খুঁজে পেলাম, সেই হারানো দিন,
অচেনা ফোনে ফিরলো আবার, সেই বন্ধু, সেই বন্ধু, সেই চেনা প্রাণ।