1. admin@ichchashakti.com : admin :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

সাহিত্যিক সুমন সর্ম্পকে জানি

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২ মার্চ, ২০২৫
  • ৬৮ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

মোঃ নূরনবী ইসলাম সুমন—একজন বিদ্রোহী স্বভাবের বাস্তববাদী কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, কণ্ঠশিল্পী, আবৃত্তিশিল্পী ও উপস্থাপক। তার লেখার মূল উপজীব্য হলো সমাজের অন্যায়-অবিচার, নিপীড়ন, বৈষম্য এবং সাধারণ মানুষের সংগ্রাম। তিনি কলমকে শুধু শিল্পসৃষ্টির হাতিয়ার নয়, বরং সমাজ পরিবর্তনের অস্ত্র হিসেবে দেখেন। তার রচনায় ফুটে ওঠে শোষিত-বঞ্চিত মানুষের আর্তনাদ, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের ভাষা।

 

শৈশব ও বেড়ে ওঠা:

মোঃ নূরনবী ইসলাম সুমনের জন্ম বরিশালের ভোলা জেলায়। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন কৌতূহলী, সত্য সন্ধানী ও বিদ্রোহী মানসিকতার। শৈশবেই তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শিক্ষা পেয়েছেন পরিবার থেকে। তার বেড়ে ওঠার পরিবেশ, চারপাশের বৈষম্য ও বঞ্চনার চিত্র তাকে তীব্রভাবে নাড়া দেয়। ফলে কৈশোরেই তিনি লেখালেখির মাধ্যমে সমাজের অসংগতি তুলে ধরতে শুরু করেন।

 

সাহিত্যচর্চার সূচনা ও বৈশিষ্ট্য:

সাহিত্যচর্চার প্রতি তার প্রবল টান ছিল ছেলেবেলা থেকেই। বই পড়ার অভ্যাস, বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা ও সমাজের নানা অসঙ্গতির মধ্যে বেড়ে ওঠার ফলে তার লেখায় বাস্তববাদ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি বিশ্বাস করেন, সাহিত্য শুধু কল্পনার রঙে রাঙানো নয়, বরং এটি হতে হবে বাস্তবতার প্রতিচিত্র, যেখানে সমাজের প্রতিটি বাঁক স্পষ্টভাবে ফুটে উঠবে।

 

তার লেখার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো—সহজ ভাষায় গভীর ভাব প্রকাশ করা। তার কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধগুলো সাধারণ পাঠকদের হৃদয় স্পর্শ করে, কারণ তিনি বাস্তবতার গভীরে গিয়ে অনুভব করেন এবং সেটিকে শব্দের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন। তিনি মনে করেন, সাহিত্যের কাজ শুধুই বিনোদন দেওয়া নয়, বরং এটি হতে হবে মানুষের চেতনা জাগানোর হাতিয়ার।

 

তার কবিতায় বিদ্রোহের আগুন আছে, ভালোবাসার স্নিগ্ধতা আছে, আবার সমাজ পরিবর্তনের দৃঢ় প্রত্যয়ও রয়েছে। তিনি কবিতায় এমন এক ভাষা ব্যবহার করেন, যা একদিকে যেমন সহজবোধ্য, অন্যদিকে গভীর দার্শনিক ভাবনার জন্ম দেয়।

 

সংগ্রাম ও আন্দোলনে সম্পৃক্ততা:

তিনি শুধু কলমযোদ্ধা নন, বাস্তব জীবনের সংগ্রামীও বটে। ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে তিনি সরাসরি যুক্ত ছিলেন। যখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়ন নেমে আসে, তখন তিনি কলম ও কণ্ঠ উভয় মাধ্যমেই প্রতিবাদ করেন। রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হওয়া হাজারো শিক্ষার্থীর কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠেন তিনি।

 

তার লেখায় উঠে এসেছে শিক্ষার্থীদের উপর হওয়া অন্যায়-অবিচারের কাহিনি, রাষ্ট্রযন্ত্রের দমননীতি ও শোষকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আহ্বান। তিনি মনে করেন, কেবল লেখনী দিয়ে সমাজ পরিবর্তন সম্ভব, যদি সেটি যথাযথভাবে প্রয়োগ করা যায়। তিনি সাহসের সঙ্গে সত্য উচ্চারণ করেন, কোনো চাপ বা হুমকি তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।

 

লেখালেখির দর্শন ও আদর্শ:

তিনি বিশ্বাস করেন, একজন লেখকের কাজ শুধু গল্প বলা নয়, বরং সমাজের পরিবর্তনে ভূমিকা রাখা। তার লেখার মাধ্যমে তিনি শোষিত, নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের কথা বলেন। অন্যায় দেখলে চোখ বন্ধ করে থাকার পক্ষপাতী নন তিনি, বরং তিনি কলমকে অস্ত্র বানিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে চান।

 

তার লেখায় আমরা পাই—

  • বিদ্রোহের চেতনা: সমাজের অসংগতি, শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক।
  • বাস্তবতার প্রতিফলন: সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, সংগ্রাম ও বেঁচে থাকার লড়াই।
  • সত্যের পক্ষে অবিচলতা: অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থান।
  • মানবতার বার্তা: ভালোবাসা, সহানুভূতি ও সংবেদনশীলতার প্রকাশ।

 

তিনি মনে করেন, “সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোই আমার সাহিত্যচর্চার মূল উদ্দেশ্য। আমি লিখবো, যতদিন সমাজে অন্যায় থাকবে। আমি প্রতিবাদ করবো, যতদিন নিপীড়িত মানুষের কান্না থাকবে। আমি কলম চালিয়ে যাবো, যতদিন পর্যন্ত একজন শোষিত মানুষের আর্তনাদ শোনা যাবে।”

 

মোঃ নূরনবী ইসলাম সুমন একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, কণ্ঠশিল্পী, আবৃত্তিশিল্পী ও উপস্থাপক। তিনি কেবল সাহিত্য সৃষ্টির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নন, বরং তার লক্ষ্য মানুষের চেতনা জাগানো, সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনে ভূমিকা রাখা।

 

তার লেখা শুধু শিল্প নয়, এটি প্রতিবাদের ভাষা, বিদ্রোহের আগুন, বঞ্চিতদের কান্না এবং ভবিষ্যতের জন্য এক দৃঢ় প্রত্যয়। তিনি বিশ্বাস করেন, সাহিত্যের শক্তি দিয়ে সমাজ বদলানো সম্ভব, আর সেই বিশ্বাস থেকেই তিনি তার কলম চালিয়ে যাচ্ছেন নিরবচ্ছিন্নভাবে।

 

“আমি লিখবো, যতদিন অন্যায় থাকবে, আমি বলবো, যতদিন নিপীড়িতের কান্না থাকবে, আমি প্রতিবাদ করবো, যতদিন সমাজে বৈষম্য থাকবে। আমার কলম থামবে না!”

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park