কবি পরিচিতিঃ
কবি নুরনবী ইসলাম সুমন ২০০৬ সালের ১লা জানুয়ারি ভোলা জেলার শাহামাদার গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মৃত মোঃ শফিকুল ইসলাম , মাতার নাম রুমা বেগম। তিনি ২০২২ সালে ইসলামিয়া হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন ও সরকার বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে ২০২৪ এ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন।তিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য নিজেকে তৈরি করছেন।শিক্ষাজীবনে তিনি পেয়েছেন বাংলাদেশ এনজিও থেকে সেরা কণ্ঠশিল্পী ও মিষ্টি ভাসি পুরুস্কার।কেপিআর থেকে চিত্রশিল্পী পুরষ্কার ও নব কল্পনা থেকে পেয়েছেন সেরা উপস্থাপক পুরষ্কার। ২০২৪ সালে মহাত্মা গান্ধী শান্তি আওয়ার্ড এর জন্য মনোনীত হয়েছেন। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ইচ্ছা শক্তি সাহিত্য পরিবারের থেকে পেয়েছেন বেস্ট কবি আওয়ার্ড।
তিনি দুই বাংলার কলম সৈনিক সহ একাধিক পুরুষ্কার পেয়েছেন ভারত থেকে।পড়াশুনার পাশাপাশি একজন বিতার্কিক, ইসলামিক ও লোক সঙ্গীত শিল্পী, সেচ্ছাসেবক, উপস্থাপক, আবৃত্তি শিল্পী হিসেবে পরিচিত অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের একজন সক্রিয় সদস্য। ইচ্ছাশক্তি আইডি নং- ০০২০২২০৬৪৮
কবিতা নং- ০১
ফিরিয়ে দাও গণতন্ত্র
মন খুলে কইতে পারিনি কথা দীর্ঘ বছর কত,
মনের মধ্যে লুকিয়ে আছে জমিয়ে রাখা রাগ অভিমান শত শত।
দিন যায় রাত যায় খুঁজি আমি তারে ,
মন খুলে বলবো কথা গণতন্ত্র বলে যারে।
ইতিহাস নামে পড়েছি যা বানোয়াট সব লেখা,
স্বৈরাচারী সরকার মতো নাটক প্রিয় মহিলা আমার ক্ষুদ্র জীবনে প্রথম দেখা।
আগস্ট মাসে পতন হলো ফ্যাসিবাদী সরকার,
মুখে মুখে ভন্ড কিছু লোক বলতো উন্নয়নের জন্য তারে দরকার।
উন্নয়নের নামে কেড়ে নিয়েছে আমার মুখের বুলি,
কথা বললেই বলতো তিনি উড়িয়ে দিবে মাথার খুলি।
কথার সাথে মিল দেখালে বলতো তারে ভাই,
অমিল হলে বলতো তার মাঝে দেশ প্রেমতো নাই ।
স্বাধীন হয়েছে দ্বিতীয়বারে মতো আমার জন্মভূমি ,
কিন্তু আমার স্বাধীনতা কই।
ফ্যাসিবাদের মতোই আচরণ তোমাদের মাঝে দেখি,
কিছু বললেই বলে ফেলো এরা দেশ দ্রোহী একি!
বেশি কিছু চাইনা আমি কথা বলার অধিকার টুকু দাও,
গণতন্ত্রের কথা বলে দয়া করে আর জনগণকে না নাচাও!
ফিরিয়ে দাও গণতন্ত্র বলতে দাওনা কথা,
১৬ বছর চুপ ছিলাম তখন ছিল আয়না ঘরের প্রথা।
কবিতা নং- ০২
আজোও পাইনি শ্রমে নায্য মজুরি
শ্রম দিয়েছি ঘাম দিয়েছি
রক্ত দিয়েছি কত,
নাম পেয়েছি শ্রমিক হিসেবে মজুরি পাইনি মনের মত।
দালান কোঠা অট্টালিকা শ্রমিকের হাতেই গড়া,
তার উপরে বসত করে টাকাওয়ালা নিজেদের কি ভাবিস তোরা?
জামা কাপড় পরিস তোরা নানান রকম সাজ,
একবারও ভেবে দেখেছিস কি এটা কোন মানুষের কাজ!
গার্মেন্টস শ্রমিক কোনোদিনই নায্য মজুরি পায়না,
নাকি তাদের মজুরি আত্মসাৎ করে নিকৃষ্ট কিছু হায়না।
জুতা সেলাই করেন জিনি মুৃচি তাহার নাম,
মনে করে দেখোনা সবাই কেউ দেয় কি তাদের শ্রমের দাম?
শারীরিক শ্রম- মানসিক শ্রম দুটোর নামই এক,
দিন শেষে মানসিক শ্রমের মূল্য পাওয়া গেলেও শারীরিক শ্রমের মূল্য পাওয়া না এই দেশেতে অবহেলা ছাড়া একটু ভেবে দেখ!
কবিতা নং- ০৩
আমি প্রতিবাদী সুর
আমি ৫২এর অনুপ্রাণিত এক কৃষ্ণচূড়া ফুল,
মেনে নিতে পারিনা আমি কোনো অন্যায় কোনো ভুল।
আমি নজরুলের সেই বিদ্রোহী কবিতার সুর,
আমি খোদার নূরে পুড়ে যাওয়া সেই ঐতিহাসিক পাহাড় তুর।
আমি অন্যায় দেখিলে চুপটি করে থাকতে পারি না আর,
আমি নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করতে করেছি অঙ্গীকার।
আমি তরুণ আমি যুবক আমি সাহসী বীর ছাত্র,
অবিচার দেখলে আমি তৈরি করি রণক্ষেত্র।
আমি বিদ্রোহী কবিতার সেই ক্ষেপাদুর্বাসা,
আমার কম্পন দেখলে পৃথিবী বন্ধ করে দেয় তার দুষ্ট হাসা।
আমি কুলিমুজুরের মতো মার খেয়ে থাকা নই সেই লোক,
আমি চাই বৈষম্যহীন বাংলা তৈরি হোক।
আমি তাণ্ডব আমি হুংকার আমি তরবারি আমি মহাপ্রলয় আমি ঝংকার,
আমি সন্তানহারা মায়ের একমাত্র অলঙ্কার।
আমি বন্যার পানিতে অতিবাহিত হওয়া সেই দীর্ঘ রাত,
আমি সম্মানিত আলোকিত কখনো অন্যায়ের কাছে করেনি মাথা কাত।
আমি প্রতিবাদী সুর আমিই নতুন আমি আগামীর জন্য অমর এক আলো আভা ,
আমি পবিত্র মানবের মাঝে এক কিংবদন্তি ও কাবা।
আমি গরজনী মাহমুদের মতো গর্জে উঠি বারেবার,
আমাকে থামাতে এসো না কারণ আমি ভয়াভয় দূর্নিবার।
আমি ভয় করি না জাহেলের সেই ধারালো কোনো হাতিয়ার,
আমি মিথ্যার কাছে নই বিনয়ী এটা আমার অহংকার।
আমি নতুন বাংলা গড়ার রূপরেখা এঁকেছি এই মনে,
দুর্নীতি প্রতিরোধ করবোই আমি শপথ করেছি দেশের শনে।
বাংলা মাগো দিচ্ছি তোমায় মন থেকে কথা,
ভেঙ্গে দিবো সব অশুভ কালো হাত কুস্বংসার ও প্রথা।
কবিতা নং- ০৪
খোলা আকাশ গড়বে সমাজ
মনে চায় অনেক দূরে
পথ হারিয়ে যাই বহুদূর,
বিপদ বাঁধা পিছনে ফেলে মুক্ত পাখির মত
উড়বো আকাশ মনের সুখে।
আকাশ হলো ধরার বুকে মুক্ত হওয়ার নিশান,
এ যে বড় মনের দিশান।
মারামারি ঝগরা বিবাদ যে দেশে নাই,
শান্তি সুখের দিশা পাবে
করবো সুখের আবাদ আমরা সে দেশেতে ভাই।
মিথ্যা দিয়ে নয়রে ভাই সাজাবো সমাজ, প্রয়োজনে
একটাই বল নিয়ে চলবো সবাই থাকবে নাতো লাজ।
সত্য পথে চলবো মোরা মিথ্যা পথে নয়,
সঠিক কথা বলবো মোরা থাকবে নাতো ভয়।
প্রতিবাদী হয়ে গড়বো মোরা
বিচার কার্য ভাই,
কারো প্রতি বিন্দু মাত্র
অন্যায় না চাই।
ভাত কাপড়ের
থাকবে নাকো আমার দেশে অভাব,
সুন্দর ভাবনা সুস্থ জীবন
পাল্টে দিবে স্বভাব।
মন যদি হয় খোলা আকাশ
সার্থ ছাড়া ভাই,
জীবন তোমার অমর হবে ইতিহাসের পাতায়।
কবিতা নং- ০৫
সাধারণ সুমন থেকে শিল্পী কবি সাহিত্যিক
কবিতা, গল্প,গান, বলা ও লিখার অভ্যাস সেই ছেলেবেলা থেকে,
ভয় হতো আমার বলা লেখা গাওয়া দেখে, শুনে, হাসে যদি লোকে।
এমনিতে মেয়েদের মতো কন্ঠস্বর বলে শুনি ও শুনেছি কথা লোকের কত,
যত বড় হই এসব কথা কানে লাগে বাজে আর কষ্ট বাড়ে তত!
আত্মীয় ও লোকের কথা লাগতো ভিষণ মন্দ,
তাইতো আত্মহত্যা করবো বলে সাজিয়েছি ভিষনরকম ছন্দ।
আমি মরবো যাদের কথার ডরে,
মরলে পরে তারাই এসে সান্ত্বনা দিবে আমার মায়ের তরে।
তাইতো সেদিন শপথ নিলাম ইতিহাস রটাবো আমি,
মুখে দিবো চুন কালি তাদের যারা মানুষের মনে কষ্ট দিয়ে নিজেদের ভাবে দামী।
তখন ছিলাম সাধারণ মেয়েলি কন্ঠের সুমন,
যখনি এই আমি কন্ঠ শিল্পী,কবি সাহিত্যিক হলাম সবার কাছে
সেই সুমন আমি হলাম এখন বড়ই আপনজন।
সমাজের সকল মানুষ হাসবে যখন তোমায় নিয়ে,
সবার মাঝে টিকে থাকবে তুমি
তোমার মধ্যেকার প্রতিভা দিয়ে।