1. admin@ichchashakti.com : admin :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

 আমার সমাজচিন্তা — মো: সাব্বির হুসাইন 

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ৮৭ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

আধুনিক এই যুগে তথ্য প্রযুক্তির দিক দিয়ে যেমন উন্নতি সাধন হচ্ছে, তার ঠিক বিপরীতকুলে অধপতনের শেষ স্তরে পৌঁছাচ্ছে  নৈতিকতা। অশ্লীলতা এমনই এক নৈতিক অধপতনের নাম। এই অধপতনের মূলে রয়েছে ব্যক্তির পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের অপারগতা। কেউই এই অপারগতাকে অস্বীকার করতে পারে  না। সমাজের প্রতিটি মানুষেরই রয়েছে কিছু চাহিদা। জৈবিক চাহিদা তার মধ্যে অন্যতম। জৈবিক চাহিদা পুরণের বৈধ উপায় হচ্ছে বিবাহ। যা সমাজ গঠনের মূলভিত্তি। এই যে সন্তান উৎপাদন সেটা হয় মূলত জৈবিক চাহিদা পুরণের সুযোগেই। আমাদের সমাজে বিবাহকে এতই কঠিন করা হয়েছে যে যুবকরা বৈধ উপায়ে ব্যর্থ হয়ে বেছে নিচ্ছে অবৈধ পন্থা বা উপায়। তাহলে বলুন তো, এই যে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, ব্যভিচার ইত্যাদির নৈপথ্যে কারা? নিশ্চয়ই সমাজের চিন্তাভাবনা এবং কার্যকলাপ। বেকারত্ব বাংলাদেশের একটি সমস্যা।

 

অনেক যুবকই বেকার অবস্থায় আছে। তাছাড়া, একজন ছেলে লেখাপড়া শেষ করে ২৭-২৮ বছর বয়সে। চাকরী পেতে পেতে ৩২-৩৫ বছর বা তারও বেশি। কিন্তু, বিবাহের শর্ত হিসাবে পুরুষকে দেয়া হয় বেশ কিছু শর্ত – চাকুরী পেতে হবে, গাড়ী – বাড়ী করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। অর্থাৎ আগে প্রতিষ্ঠিত হও, তারপর বিয়ে। যে ছেলেটা যৌবনপ্রাপ্ত হলো ১৭-১৮ বছর বয়সে তাকে বিয়ে করতে হচ্ছে ৩৫-৩৮ বছর বয়সে। মাঝখানের যে দীর্ঘ সময়টা তখন সে তার চাহিদা পুরণের জন্য কোনো বৈধ উপায় গ্রহণের সুযোগ পায়নি। সমাজ তাকে সে সুযোগ দেয় নি। কিন্তু চাহিদা পুরণের জন্য প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে বেছে নিচ্ছে অনৈতিক পন্থা। আর এই পন্থাটাই সমাজের জন্য এক মহামারি। দেশের পূর্বাঞ্চলের কিশোর বা তরুণরা মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়েই পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। এটা সে অঞ্চলের জন্য বর্তমানে একটি রীতি হয়ে দাড়িয়েছে।

 

এরফলে যেমন শিক্ষিতের হার কমে যাচ্ছে, তার পাশাপাশি এসব যুবকরা বিয়ের পীড়িতে বসছে ৩৮-৪০ বছর বয়সে। মাঝখানের সময়টা স্বাভাবিক ভাবেই হারাম সম্পর্ক কিংবা অনৈতিক পন্থায় চাহিদা পুরণ। দেশের পূর্বাঞ্চলের অভিভাবকরা মেয়ে বিয়ে দেবার জন্য সম্পদশালী, সরকারি চাকুরীজীবি কিংবা প্রবাসী বর খুজেন। বেসরকারি চাকুরি হলেও অনেকের হয় না। এই যে লোভ এবং মনমানসিকতা তার কারণে বিয়ের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। বেকার কিংবা কর্মসংস্থানহীন যুবকরা অবিবাহিত থেকে যাচ্ছে। গণমাধ্যমে যে প্রকাশিত হয় রিসোর্ট, পার্ক, আবাসিক হোস্টেল ইত্যাদিতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য, সেটার পিছনে দায়ী এই ধারণা বা মানসিকতা। অনেকক্ষেত্রে যুবকরা বাধ্য হয়ে অনৈতিক পথে হাটে। এই সমস্যার সমাধানে মেয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে, বেকার পুরুষকে বিবাহের মাধ্যমে। আমরা যতই আইনকানুন, পদক্ষেপ গ্রহণ করিনা কেন কিংবা যতই নীতিকথার বুলি ছড়াই না কেন অশ্লীলতা নির্মূল সম্ভব হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না এই যুবকদের বৈধ উপায়ে চাহিদা পুরণের সুযোগ সৃষ্টি না করা যায়। আমার মতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এই প্রক্রিয়াটা সহজ হবে-

(১) সমাজে বিদ্যমান এসব রীতি প্রতিরোধ করে প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে ও মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থাকে সহজ করতে হবে। বিয়ের ক্ষেত্রে বয়স মেইনটেইন করতে হবে। বয়স্ক লোকের কাছে অল্পবয়সী যুবতীদের বিয়ে দেয়া বন্ধ করতে হবে। প্রবাসীদের বিয়ের পর স্ত্রীকেও বিদেশে নিতে হবে, সম্ভব না হলে দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেশে চলে আসতে হবে। এতে করে পরকিয়া কমার সম্ভাবনা তৈরী হবে।

(২) মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি এবং বেসরকারি চাকুরির ব্যবস্থা করতে হবে কিংবা সরকারি উদ্যোগে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসিতে নামিয়ে আনা যায়। এভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব সমস্যার সমাধান করলে বেকারের সংখ্যা কমে আসবে এবং যুবকদের বিয়ের পথ সুগম হবে।

(৩) মুসলিম বিবাহ আইন নামে আইন প্রণয়ন করতে হবে। যাতে মুসলিমরা বিয়ের ক্ষেত্রে সঠিক ইসলামি নিয়ম কানুন মেনে চলে। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্যও বিবাহ আইন প্রনয়ণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। আইন অমান্যকারীদের জন্য শাস্তির বিধান করতে হবে।

(৪) সমাজ থেকে পশ্চিমা সংস্কৃতি দূর করতে আইন প্রণয়ন করতে হবে। যার দ্বারা পর্দা রক্ষার বিধান নিশ্চিত করতে হবে। ফ্রি মিক্সিং নিমূর্ল এবং সহশিক্ষা কার্যক্রম বাদ দিয়ে নারী এবং পুরুষ শিক্ষার্থীদের  জন্য আলাদাভাবে পাঠদানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

(৫) দেশীয় সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় সংস্কৃতির উপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। দেশের সিনেমা হল, ডান্সবার, নাইট ক্লাব, মদ বিক্রি ইত্যাদি বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে পর্ণগ্রাফি স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। কিশোরদের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিরত রাখতে হবে।

(৬) পরকিয়া কিংবা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

 

সবচেয়ে প্রয়োজনীয় যে জিনিস সেটা হলো, সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে মানুষের মধ্যে সচেতন গড়ে তুলতে হবে। মোদ্দা কথা হচ্ছে, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। যদি অশ্লীলতা বন্ধ না করা হয়, তবে জাতিকে ভবিষ্যতে আরও খারাপ সময় অতিক্রম করতে হবে।

(চলবে…..)

 

লেখক : মো: সাব্বির হুসাইন খান 

শিক্ষার্থী, সিলেট সরকারি কলেজ, সিলেট। 

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park