1. admin@ichchashakti.com : admin :
শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

চোখের বালি — গোলাম সরোয়ার 

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ৩৮ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

চোখের বালি 

গোলাম সরোয়ার 

 

স্কুল ছুটি হয়ে গেছে অনেকক্ষণ । কলিগরা সবাই যে যার বাড়ি চলে গেছে। শুধু মাহাবুব তার অফিসে বসে খবরের কাগজটায় একবার নজর বুলিয়ে নিচ্ছিল। সারাদিন কাগজ দেখা হয় না। হবেই বা কি করে? আজকাল কেউ কি নিজের কাজ দায়িত্ব নিয়ে করে? যেদিকটা সে না দেখবে সেদিকটাই যেন মাছের বাজার!

প্রেয়ার সেশন থেকে শুরু করে শেষ ক্লাস পর্যন্ত তার নিখুঁত দৃষ্টি। স্কুলের প্রতিটি পড়ুয়া থেকে শুরু করে শিক্ষক এমন কি অশিক্ষক কর্মী সবাই তাকে যমের মতো ভয় করে।

সে অত্যন্ত শৃঙ্খলা প্রায় হেডমাস্টার । কারুর কর্তব্যে অবহেলা সে পছন্দ করে না।

এমনিতে মাহাবুব অত্যন্ত অমায়িক ভদ্রলোক। কলিগদের প্রতি তাঁর ভ্রাতৃত্ব সুলভ মনোভাব এবং ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি তাঁর বাৎসল্য প্রেম অগাধ। স্কুলের বাইরে প্রত্যেকের সঙ্গে সে বন্ধুর মত আচরণ করে। সবার পারিবারিক খোঁজ খবর  নেওয়া তাঁর প্রাত্যহিক রুটিন।

কিন্তু চেয়ারে বসলেই সে অন্য মানুষ। তার বজ্র কঠিন রূপ দেখে সামনে আসতে আর কারুর সাহসে কুলোয় না।

বিশেষ একটা কারণে আজ মাহাবুবের মনটাও খুব একটা ভালো নেই!

কলেজে পড়ার সময় সহপাঠিনী অনামিকার সঙ্গে তাঁর একটা ভালবাসার সম্পর্ক তৈরী হয়েছিল।  তার গায়ের রং শ্যামবর্ণ হলেও বুদ্ধিদীপ্ত দুটি ডাগর চোখের আকর্ষণ ছিল দুর্বার। সেটাই অনামিকার প্রতি মাহাবুবের মূল আকর্ষণ ছিল। তা ছাড়া পড়াশোনাতেও সে ছিল অন্যান্যদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। উচ্চ মাধ্যমিকে সে জেলার মধ্যে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিল।

যাই হোক, স্নাতক হওয়ার পর তার আর পড়াশোনা এগোয়নি। একটা দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যু হলে বাধ্য হয়েই তাকে বাবার জায়গায় চাকরিটা নিতে হয়, কারণ সে ছিল মা-বাবার বড় সন্তান। একটাই ভাই। সে তখন স্কুলে পড়ে। সুতরাং তার মাথাতেই সংসারের সমস্ত দায়িত্ব এসে পড়ে।

এদিকে কলেজ শেষ করে মাহাবুব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। মাস্টার্স কমপ্লিট করে বি এড টাও সে করে নেয়। তারপর স্কুলের প্রধান শিক্ষকের চাকরিটা সে অনায়াসেই পেয়ে যায়।

ওদিকে অনামিকার সঙ্গেও তার যোগাযোগ বন্ধ হয়নি। তারা নিয়মিত একসাথে বেড়াতে যেতো।

তারা বিয়ে করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, কিন্তু অনামিকা কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না, কারণ তার চিন্তা ছিল মা আর ভাইকে নিয়ে। সে বিয়ে করে নিলে তাদের সংসারের দায়িত্ব কে নেবে?

এদিকে মাহাবুবের মা বিয়ে করার জন্য ছেলেকে বারবার চাপ দিচ্ছেন। সে তার মা-বাবার একমাত্র সন্তান। বাবার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। তাঁরা বেঁচে থাকতে থাকতে ছেলের একটা সাজানো গোছানো সংসার দেখে যেতে চান। ছেলের পছন্দের মেয়েকে মেনে নিতে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই, কিন্তু অনামিকার দিক থেকে কিছুতেই সবুজ সংকেত পাওয়া যাচ্ছে না।

এই কারণেই আজ মাহাবুবের মনটা সকাল থেকেই বিষন্ন হয়ে আছে। আজ সন্ধেবেলা একবার সে অনামিকার সঙ্গে দেখা করে একটা হেস্তনেস্ত করেই ছাড়বে। আর এই টানাপোড়েন মধ্যে থাকতে ভালো লাগছে না তার। একদিকে নিজের মা-বাবার চাপ অন্যদিকে অনামিকা তার মায়ের সংসারের প্রতি দায়িত্ব বোধ। মাঝখান থেকে তাদের নিজেদের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে!

এই সব সাত পাঁচ চোখের বালি ভাবতে ভাবতে মাহাবুব ধীরে ধীরে অফিস থেকে বেরিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেয়।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park