সাহিত্য শুধু কিছু নির্দিষ্ট মানুষের চিন্তা-চেতনার বহিঃপ্রকাশ নয়; এটি সর্বজনীন, সবার জন্য। আমাদের সমাজ, সংস্কৃতি ও অনুভূতির প্রতিচ্ছবি হয়ে সাহিত্য প্রতিনিয়ত নতুন আলো নিয়ে আসে। তা হোক কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, নাটক কিংবা উপন্যাস—সাহিত্য সর্বদাই আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
আজকের যুগে যখন প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কোণাকে স্পর্শ করছে, তখনও সাহিত্য তার জাদু দিয়ে মানুষকে আপন করে নিচ্ছে। স্মার্টফোন কিংবা ট্যাবলেটের পর্দায় আমরা যতই সময় কাটাই না কেন, একটি ভালো কবিতা বা গল্প পড়ে যে আনন্দ, তা অন্য কিছুতে মেলে না। এটি কেবলমাত্র বিনোদন নয়; সাহিত্য আমাদের চিন্তা, অনুভূতি ও সৃষ্টিশীলতাকে আরও গভীর করে।
সাহিত্য এমন একটি মাধ্যম যেখানে সমাজের প্রত্যেকটি স্তরের মানুষ তাদের নিজস্ব গল্প বলতে পারে। গ্রামের কাঁচা পথ থেকে শুরু করে শহরের ব্যস্ত জীবন—প্রত্যেকটি অনুভূতির জন্য সাহিত্য একটি মঞ্চ। তাই, এটি শুধুমাত্র বিদগ্ধ পণ্ডিতের বিষয় নয়; এটি সবার জন্য। আমাদের সমাজের প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যে সাহিত্য নিয়ে আগ্রহ জন্মানো দরকার, কারণ সাহিত্য আমাদেরকে আমাদের নিজের পরিচয় খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই সর্বজনীনতাকে আমরা কীভাবে আরও ছড়িয়ে দিতে পারি? এর উত্তর লুকিয়ে আছে আমাদের উদ্যোগে। আমাদের স্কুলগুলোতে সাহিত্যের গুরুত্ব আরও বেশি করে তুলে ধরা উচিত। গ্রন্থাগারগুলোকে আরও সমৃদ্ধ এবং সহজলভ্য করতে হবে। পাশাপাশি, নতুন প্রজন্মের লেখকদের উৎসাহিত করা এবং তাদের লেখাকে প্রচার করার জন্য একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরি।
সাহিত্য একটি শক্তিশালী মাধ্যম যা জাতি ও সংস্কৃতিকে একত্রে বাঁধতে পারে। এটি কেবল একটি বিনোদনের উৎস নয়, বরং এটি সমাজকে বদলে দেওয়ার হাতিয়ার। তাই, সাহিত্যের এই শক্তিকে সবার কাছে পৌঁছে দিতে আমাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। আসুন, আমরা সবাই মিলে সাহিত্যের আলোকে আরও দূরে ছড়িয়ে দিই।
সাহিত্য হোক সবার জন্য—সবার মাঝে।
–মোঃ মাছিম প্রাং