মোঃ সোহাগ মোল্যা (মঈনুল) ২০০৪ সালের ২০ জানুয়ারী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার সুনামধন্য বয়রা গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে পৈত্রিক নিবাসে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নামঃ কেরামত মোল্যা পেশায় একজন কৃষক এবং মায়ের নাম মোসাঃ পারুল বেগম পেশায় গৃহিণী। লেখক তিন ভায়ের মধ্যে দ্বিতীয়। শৈশব থেকেই অভাব অনাটনের মধ্যে বড়ো হন। সেই সুবাদে শিক্ষাজীবন ও শুরু হয় দারিদ্র্যতার মধ্যে দিয়ে। ২০১৪ সালে বয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক,২০১৭ সালে আমাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জেএসসি, ২০২০ সালে এসএসসি, ২০২২ সালে আমাদা আদর্শ কলেজ, নড়াইল থেকে সুনামের সঙ্গে এইচএসসি পাশ করেন। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত লোহাগড়া সরকারি আদর্শ কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী। কবিতার প্রতি শৈশব থেকেই টান থাকলেও কবিতা লেখার হাতে খড়ি হয় ২০২০ সালে। লেখক লিখতে ভালোবাসেন সমসাময়িক বিষয়, বর্তমান সমাজের বাস্তব চিত্র, দেশপ্রেম, শ্রমিক, দিনমজুরের জীবন যাত্রা, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। লেখক প্রতিষ্ঠা করেছেন কবি আব্দুল গফুর সাহিত্য পরিষদ। সম্পাদনা করেন ‘মাসিক মধুমতী নবগঙ্গা পত্রিকা ‘। বিভিন্ন জাতীয়, দৈনিক ও আন্তর্জাতিক পত্রিকা এবং সাহিত্য ম্যাগাজিনে অসংখ্য কবিতা, গল্প, প্রকাশ পেয়েছে। যৌথ সম্পাদিত কাব্যগ্রন্থ ‘উদীয়মান কবিদের জাগ্রত কলম’। প্রকাশিত যৌথ কাব্যগ্রন্থ চৌষট্টি জেলার কবির কবিতা, শতকাব্য ৩,কবিতার মেলা আমরাই সেরা। লেখকের আগামী পথচলা আরও সুন্দর ও উজ্জ্বল হোক সৃষ্টি কর্তার কাছে এই কামনা করেন। তিনি ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের একজন সক্রিয় সদস্য। ইচ্ছাশক্তি আইডি নং- ০০২০২২০২৭৫
০১
ফেব্রুয়ারির স্মৃতি
পূর্ব গগনের রবির উঁকিতে
স্মৃতি ভাসছে বাঙালির অন্তরে।
মা,বোনের ক্রন্দন হাহাকারে
ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখ কতোই ধিক্কার যে।
বাংলার রঞ্জিত রাজপথ হয়েছিল গর্বিত
সালাম,বরকত, রফিকদের রক্ত পেয়ে।
বাঙালি তোমাদের ভুলবেনা শত দুঃখখনে,
স্মরণ করছে বাঙালি প্রভাতফেরি,শহিদ মিনার হতে ।
ফেব্রুয়ারির স্মৃতির পরশে চোখে জল আসে
পাখপাখালি এনেছিল খবর শহীদের মায়ের তরে।
তাদের উৎসর্গে পুষ্পের মালা শহীদ মিনারে,
দিয়ে যাবে বাঙালি যতদিন পৃথিবীর আলো রবে।
পরজীবনে আলোকিত হোক তোমাদের আত্মা
খোদার কাছে বাঙালির করছে মিনতি।
২১ শে ফেব্রুয়ারি বাঙালির গর্বের, চেতনা, অহংকার
রঞ্জিত পথের শপথে স্বাধীনতার বীজ করেছিল বপন।
ফেব্রুয়ারি মানেই বাঙালির স্মৃতির পাতা
শহিদ মিনার,আলপনা, পুস্তমালা,মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
ফেব্রুয়ারি মানেই নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
ফেব্রুয়ারি মানেই হাজারো স্মৃতি জাগরণ।
বাঙালির গর্ব,অহংকার, সম্মানে
ফেব্রুয়ারি চলছে নিজের মতোই করে,
প্রভাত ফেরি দিয়ে আসছি শহীদ মিনারে
পুষ্পের নির্যাস দিলাম তোমাদের উৎসর্গে।
০২
আগস্টের বন্যা
বন্ধু দিল বাধঁ ছেড়ে, বন্যা এলো দেশে
বানের জলে চারদিকে থৈ থৈ করে।
মৃত্যুর সঙ্গে আটকে আছে কতো লক্ষ লোকে
উথাল পাথাল নদীর জলে,
কূল ছাড়িয়া আসছে গাঁয়ে ।
প্লাবিত দুর্ভোগে অসহায় এখন লোকে
পানি বন্দী হয়ে এখন জীবন বাঁচানোর খোঁজে।
বন্যার সর্বনাশা কেড়ে নিচ্ছে প্রাণ খানা
আরও নিচ্ছে গরু, মহিষ,ছাগল, ভেড়া
ছিলো যতো অর্জিত সম্পদের পালা।
রাস্তা- ঘাট, বসত- ভিটা, আরও কতো স্হাপনা
বন্যার পানিতে বিলিন হয়ে করছে মোদের সর্বহারা
মা বাবাকে হারিয়ে অবুঝ শিশুও কাঁদে
চা এর ব্যাপারি কেমনে বুঝবে এমন কান্নার যন্ত্রণা?
জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এসো, মানবতার প্রেমিরা।
০৩
জ্বালায় জ্বালা
জ্বালায় জ্বালা
গাঁয়ে জ্বালা
গরমের সাথে
কারেন্টও করে খ্যালা।
মুহির ঘাম চোহি গেলি
জ্বলছে চোখ খুব কইরে,
গরমের চোটে মানুষেরা
যাচ্ছে হেইলেদুইলে।
বিলি রাখাল চরাই গরু
চাষা করতিছে চাষ,
সূর্য মামার তাপেতে
শরীরের সঙ্গে ঘুরছে মাথা।
জ্বালায় জ্বালায় গেল দুফোর
এ্যাহন ভাইটে ব্যালা,
চাষা, রাখার ফিরবে গায়ে
ছাগল, গরু বাড়াচ্ছে জ্বালা।
জ্বলতি জ্বলতি আইসে বাড়ি
হাতে মুহে দিলাম পানি,
এক মুঠ মুড়ির সাথে খাব ঠান্ডা পানি
ফ্রিজের সামনে যাইতেই কারেন্ট গেল বাড়ি।
আসতি আসতি আসলেন তিনি
সইন্ধে পার কইরে,
একবার ভুগুল দিয়ে
তিনি আবার গ্যালেন চইলে।
দিনে জ্বালা রাইতে জ্বালা
আরতো জ্বালা সইছেনা,
বসলাম চারর্ডে খাতি
তিনি আবার গেলেন বাড়ি।
অন্ধকারে খাতি খাতি
গান্ধী গেছে গালে,
গাল পুইড়ে হইছে সারা
দরদ দেহাতি আসলেন তিনি।
ফ্যানডা ছাইড়ে শুলাম এ্যাহন
তিনি আবার গেলেন বাড়ি,
এ্যামন কইরে জ্বলতি জ্বলতি
যাচ্ছে দিন গ্রামঞ্চলের মানুষ গুলোর।
০৪
মৃত্যুর মিছিল
ক্ষুধার্ত থাবা আঁকড়ে ধরছে, লোহাগড়াকে ঘিরে
বিনীদ্র রজনীতে ভয়ে কাঁপছে,
পরিবারের প্রিয়জন হারাতে
প্রতিশোধের দুবির্সহ লীলা চলতেই আছে…..।
রক্তের বদলে নিচ্ছে প্রাণ
দুর্বিত্তরা দিনকেও করছে আঁধার।
দিনলিপি শুরু হচ্ছে,শোকের ছায়া দিয়ে
প্রহর হচ্ছে দীর্ঘতর রজনী কাটছে না যে……।
দুর্বিত্তরা এখন শান্ত হউ
আর করেনাতো মায়ের বুক খালি
৭দিনে ১০ খুন,১ টা হচ্ছে নিখোঁজ
মমতাময়ী মায়ের সহেনাযে আর শোক।
মনুষ্যত্বর বিকাশ গেছে হারিয়ে,
মানব জাতির থেকে
তাইতো তাঁরা নির্বাচনের মিছিল ছেড়ে
মৃত্যুর মিছিল গাইছে।
০৫
একতরফা প্রেম
বুকেতে তাদের কষ্ট অনেক
একতরফা প্রেমিক যারা
মোহ আচ্ছন্ন হৃদয়ে তাদের,
একতরফা প্রেম জমা।
ধরনী বড়োই অদ্ভুত, করছে বেশ খেলা
সর্বক্ষনে ভাবি যাহারে
সে-তো বলে উদাসীনতায় কাটাউ বেলা।
দিন,রাত কাটতেই আছে
প্রেয়সীর মুগ্ধতায়,
গহীন নিশি জেগেও আমি
অপেক্ষায় থাকি প্রেয়সীর প্রেমের ছোঁয়ার।
তাকে যে আমি বড্ড ভালোবেসে ফেলেছি
অগোচরে তাহার আঁখির পলক দেখিয়া।
অভিমানের সুরে,ভদ্র মুখে বলি
প্রেয়সী তোমায় বড্ড ভালোবাসি।
গোলাপ ঝরা পথটিতে
হাটতে চাই তোমার হাতটি ধরে
ছাঁদের উপরে তোমার কোলেতে
আমারি মাথাটি রাখতে চাই খুব করে।
একাকীত্বে রাখিলেও জড়িয়ে
আমি থাকিবো প্রেয়সীর অপেক্ষায়।
একতরফা প্রেম সাজিয়ে রেখে
অগোচরে তোমায় বাসবো ভালো।
অভিমানের সুরেই জানায়
তুমি মোর প্রিয় রূপসী।
মায়ের কথা হলোনা রাখা
হলে নাতো মোর জীবনসঙ্গিনী,
তবুও তোমায় একতরফা ভালোবাসি।
তুমি উড়িবে আকাশে পাখা মেলে
দুর থেকে দেখবো তোমায়
আমারি অশ্রুশিক্ত আঁখি মেলে।
রাখিবনা বেঁধে, তোমায় দিলাম মুক্তি
তোমারি আনন্দে অশ্রুশিক্ত আঁখিতে
সর্বক্ষণে একতরফা ভালোবাসিবো।
একতরফা প্রেমিকেরাই পাইনা ভালোবাসা
রিক্ত ওষ্ঠদ্বয়ে নিদ্রাহীনতায়
কাটিতেছে আমার কতোটা রাত্রি।
এলোকেশী রূপসী, কাজলকালো আঁখি
তোমারি রূপেতে হারিয়েছিলাম
আমার কোমল হৃদয়ের প্রেম খানি।
মুক্ত মালার হাসিতে কাটে তোমার দিবারাত্রি
একতরফা প্রেমে পড়েই
কষ্টে মরে আমারি হৃদয় খানি।
একতরফা প্রেমে পড়িওনাকো কেহ
পাইবেনাতো সেই প্রেমের পূর্ণতা।