1. admin@ichchashakti.com : admin :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

ডেঙ্গুর মাঝেই চিকুনগুনিয়াঃ করণীয় ও সচেতনতা

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৮৯ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

শুধু ঢাকা শহর ই নয়, ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়িয়েছে সারাদেশেই। বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও ডেঙ্গুর প্রকোপ কমেনি এখনও। ডেঙ্গু আতংকের মাঝেই যোগ হয়েছে মশা বাহিত রোগ চিকনগুনিয়া। চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ-উপসর্গ প্রায় ডেঙ্গুর মতই।আর একারণে চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলেও রোগীরা তা বুঝতে পারছেন না। সরকারি হাসপাতাল গুলোতে চিকুনগুনিয়া পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যাও জানা সম্ভব হচ্ছে না।

ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে গত এক মাসে প্রায় তিনশর বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। আইসিডিডিআর,বি এর পরীক্ষাতেও চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে  তাঁদের কাছে যেসকল রোগী আসছেন, লক্ষণ-তাদের কেউ কেউ চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ করছেন।

অসময়ে চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় আগামী বছর রোগটি আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। চিকুনগুনিয়া রোগের বাহক হচ্ছে এডিস ইজিপ্টি এবং এডিস অ্যালবোপিক্টাস মশা। চিকুনগুনিয়া  টোগা ভাইরাস গোত্রের হওয়ায় একে আরবো ভাইরাসও বলা হয়ে থাকে।

চিকুনগুনিয়া ১৯৫২ সালে আফ্রিকায় প্রথম সনাক্ত হয়। বাংলাদেশে প্রথম ২০০৮ সালে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ ভাইরাসের হদিস মেলে। আর ২০১১ সালে ঢাকার দোহার উপজেলায় এ রোগে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়।

ঢাকাসহ কয়েকটি জায়গায় চিকুনগুনিয়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে ২০১৭ সালে। তখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এ সংক্রান্ত রিপোর্টিং সিস্টেম না থাকায় কত লোক আক্রান্ত হয়েছিল তার সঠিক কোনো তথ্য নেই সরকারি এই সংস্থাটির কাছে। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সে সময় অন্তত এক লাখ মানুষের চিকুনগুনিয়া হয়েছিল।

(১) হঠাৎ জ্বর আসা, সঙ্গে প্রচণ্ড গিঁটে গিঁটে ব্যথা

(২) প্রচণ্ড মাথাব্যথা

(৩) শরীরে ঠাণ্ডা বা কাঁপুনির অনুভূতি

(৪) বমি বমি ভাব অথবা বমি

(৫) চামড়ায় লালচে দানা বা র‌্যাশ

(৬) মাংসপেশিতে ব্যথা

কারো মাঝে এসব উপসর্গ দেখা দিলে এক সপ্তাহের মধ্যে রোগীর রক্তে Serology Ges এবং RT-PCR পরীক্ষার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত করা যায়। আইইডিসিআর-এ চিকুনগুনিয়া রোগ নির্ণয়ের সকল পরীক্ষা করা হয়। এছাড়াও কিছু বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে।

চিকুনগুনিয়া ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসা মূলত উপসর্গ ভিত্তিক। এর কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। আক্রান্ত ব্যক্তিকে পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে, প্রচুর পানি ও তরল খাবার খেতে হবে এবং প্রয়োজনে জ্বর ও ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল ট্যাবলেট এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে ওষুধ খেতে হবে।

সাধারণত রোগটি এমনিতেই সেরে যায়, তবে কখনও কখনও গিঁটের ব্যথা কয়েক মাস এমনকি কয়েক বছর থাকতে পারে।

গিটের ব্যথার জন্য গিঁটের উপরে ঠাণ্ডা পানির স্যাঁক এবং হালকা ব্যায়াম উপকারী হতে পারে। তবে প্রাথমিক উপসর্গ ভালো হওয়ার পর যদি গিঁটের ব্যথা ভালো না হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে। কোনো কারণে রোগীর অবস্থা অবনতি হলে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর.বি অক্টোবর মাসে  ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ১৫১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে। যাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে তাদের সবাই ডেঙ্গুর এনএসওয়ান পরীক্ষা নেগেটিভ এসেছিল। ওই ১৫১টি নমুনার আরটিপিসিআর করে ২৭ জনের চিকুনগুনিয়া পজিটিভ পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার প্রায় ১৮ শতাংশ।

আইইডিসিআর.বি এর তথ্যমতে নভেম্বর মাসে ৪৭ জন চিকুনগুনিয়া রোগী শনাক্ত করেছে।

আর স্কয়ার হাসপাতালের তথ্যানুযায়ী চলতি নভেম্বর মাসে চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত হয়ে প্রায় তিনশত জনেও বেশি বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন। আর গুরুতর হওয়ায় কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করাতেও হয়েছে। চিকুনগুনিয়া তেমন সিরিয়াস রোগ না হলেও প্রচন্ড ব্যথা রোগীকে ভোগায়। চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ-উপসর্গ ডেঙ্গুর মতই। তবে রোগীরা বেশি কষ্ট পায় শরীর ব্যথার কারণে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস ইজিপ্টি এবং এডিস অ্যালবোপিক্টাস মশা সাধারণত পরিষ্কার বদ্ধ পানিতে জন্মায়। যাদের আশপাশে এ রকম মশা বৃদ্ধির জায়গা আছে, তারা বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। এধরনের মশা সাধারণত দিনের বেলা ভোর বেলা অথবা সন্ধ্যার সময় কামড়ায়। এছাড়াও চিকুনগুনিয়া ভাইরাস আক্রান্ত রক্তদাতার রক্ত গ্রহণ করলেও এ রোগ ছড়াতে পারে।

চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধের কোনো টিকা নাই। ব্যক্তিগত সচেতনতাই চিকুনগুনিয়া ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের প্রধান উপায়। শরীরের বেশির ভাগ অংশ ঢাকা রাখা উত্তম। যেমন ফুল হাতা শার্ট এবং ফুল প্যান্ট পরা, জানালায় নেট লাগানো, প্রয়োজন ছাড়া দরজা জানালা খোলা না রাখা, ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা, এছাড়া শরীরে মশা প্রতিরোধক ক্রিম ব্যবহার করার মাধ্যমে মশার কামড় থেকে বাঁচা যায়।

এবার বর্ষা মৌসুম শেষে চিকুনগুনিয়া সনাক্ত হওয়ায় আগামী বছর এই রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তাই আসুন সকলেই সচেতন, বাড়ির আশেপাশ যথাযথ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখি। মশা যেন কামড়াতে না পারে সেজন্য অন্যান্য ব্যবস্থাপনাও যথাযথ ভাবে মেনে চলি।

– লেখক
এসকে এম হেলাল উদ্দিন

কবি ও কলাম লেখক
চাঁপাইনবাবগঞ্জ। 

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park