কবি পরিচিতি:
মোঃ আহমাদুল হক ৯ অক্টোবর ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার হড়গ্রাম ইউনিয়নের বসুয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা: মৃত মোঃ একরামুল হক, মাতা: মোসাঃ নূরুন্নাহার বেগম। কবি ৭ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে ৫ম। স্ত্রী: মোসাঃ হোসনে আরা খাতুন, বড় মেয়ে: হুমায়রা আফিয়া, জামাই: মোঃ রায়হানুর রহমান, নাতনী: রাফিফা আনজুম, একমাত্র ছেলে: আবরার হামিম, ছোট মেয়ে: হামিমা আনতারা। বর্তমান পেশা: সহকারী অধ্যাপক (হিসাববিজ্ঞান), মসজিদ মিশন একাডেমি (স্কুল এন্ড কলেজ), ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। কবি লেখালেখির পাশাপাশি সমাজ সেবা মূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছেন। যেমন: কবি তার নিজ গ্রামে “বসুয়া উচ্চ বিদ্যালয়“ নির্মাণ করে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘ নয় বছর, “রাহবার একাডেমি” নামে একটি শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৯৮ সালে যা বর্তমানে এলাকায় গরিব-অসহায় শিশুদের স্বল্প খরচে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। “হক হোমিও হল” বসুয়া, রাজশাহী নামে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রদান করে এলাকার গরিব মানুষের পাশে থাকেন সকল সময়। কবির একক কাব্যগ্রন্থ “মায়ের মমতা” এবং “বিশ্বভ্রমণ” নামে ২টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। শিশুদের জন্য “স্বর্ণ দিয়ে বর্ণ পড়া”-(০) এবং “স্বর্ণ দিয়ে বর্ণ পড়া”-(১) প্রকাশিত হয়েছে যা রাজশাহী জেলায় বিভিন্ন কিন্ডার গার্টেন স্কুলে পাঠ্য পুস্তক হিসেবে চালু রয়েছে। কবির যৌথ কাব্যগ্রন্থ “সাহিত্যের দিশারী অদম্য ইচ্ছাশক্তি”, “রক্তে কেনা সোনার বাংলাদেশ”, “কবিতার মেলা আমরাই সেরা”, “শেষ চিরকুট’, “চব্বিশের গণবিস্ফোরণ” “বাংলাদেশের ২৩০ কবি” এবং “৬৪ জেলার আঞ্চলিক ভাষার কবিতা” বইগুলো প্রকাশিত হয়েছে।
কবি ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের একজন সক্রিয় সদস্য। ইছাশক্তি আইডি নং- ০০২০২২০৫৬৫
কবির শেষ ইচ্ছা বাকি জীবন সৎ পথে থেকে সুন্দরভাবে জীবন যাপন করে লেখালেখির মাধ্যমে সমাজ সংস্কার করা এবং রাষ্ট্র মেরামতের কাজ করে যাওয়া। মহান আল্লাহ আমাদের ভালো ভালো কাজগুলো কবুল করুন। আমিন।
(১)
কোটা প্রথা
কোটা নামের বিষ কাটা
জাতীর গলায় বিধেছে,
সাথে আবার প্রশ্ন ফাঁস
মেধাবীরা সব মরেছে।
বাবার পরে ছেলে পাবে
ছেলের পরে নাতি,
কতকাল চলবে কোটা
পিএসসিতেও হাতি !
৭১ এর দেশ প্রেমিকদের
শ্রদ্ধা করি সবে,
বাবা, ছেলে, নাতি, পুতি
কোটায় কেন রবে ?
কোটা যদি চলতে থাকে
মেধাবী যাবে কোথায় ?
শ্রমিক আর কৃষক সন্তান
মরে হায় হায় !
কোটায় থেকে কোয়া পেল
মেধাবী পেল মুশলা,
পরের মাথায় কাঁঠাল খেয়ে
চাকুরি পরীক্ষায় ঘাপলা।
কোটা আর মেধা প্রশ্নে
জয় পেল মেধা,
যারা বলে কোটায় আমি
তারা হলো গাঁধা।
কোটা নামের বিষ কাটা
তাড়াতাড়ি তোলো,
প্রশ্ন ফাঁসে প্রিয় দেশটা
রসাতলে গেলো।
(২)
জিহবা সামলাও
মুখের জবানে লাগাম দাও
জিহবাটাকে টেনে রেখে,
এক জবানে তাল-মাতাল
ছাত্র-ছাত্রী গেছে বেঁকে।
রাজাকার হলো বাংলাদেশে
ঘৃণিত একটি কথা,
রাজাকার বলে ভৎসনা ছলে
সবাইকে দিয়েছো ব্যাথা।
মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ
সবার সেরা সম্পদ,
বগলদাবা করতে চায়
দেশ বিরোধী লম্পট।
জিহবার জবান
এখনি সামলান,
রাজপথে নওজোয়ান
ছাত্র-ছাত্রী দৃপ্ত পায়ে
সন্মুখপানে আগুয়ান।
কাক ডাকা ভোর
কিংবা রাত-দুপুর,
মেধার মিছিলে
বিজয়ী বেশে
রাজপথ ভরপুর।
(৩)
ইতিহাসে নাম লেখ
রক্তখেকো দৈত্য-দানব
ঝাপিয়ে পড়েছো দেখ,
দেশপ্রেমিক ছাত্র সমাজ
ইতিহাসে নাম লেখ।
ক্যাম্পাস আজ আঘাত পেয়ে
দাঁড়িয়ে আছে নির্বাক,
মেধাবীরা আজ ঘুরে দাঁড়ালো
কোটা প্রথা নিপাত যাক।
সামনে দিনে বাংলার বুকে
সন্ত্রাশীদের হবেনা ঠাই,
বুক পেতে দিয়ে প্রমানিত
শহিদ হয়েছে হায় !
শহিদের রক্ত আগুন হয়ে
ছড়িয়ে পড়েছে দেশে,
বসে থেকোনা চুড়ি পরে
নববধু কন্যা বেশে।
দৃঢ় পায়ে দাঁড়াও তুমি
বিজয়ের হাতছানি
রাজপথে ডাকছে তোমায়
বিজয় হবে জানি।
(৪) তোমার পথধরে
(আবু সাঈদের শাহাদত ১৬ জুলাই)
পাহাড় সম বুকটা তোমার
সিংহের মতো সাহস,
তোমার জীবন দেওয়া দেখে
সবাই এখন খামোস।
তোমার বুকে করেনি গুলি
গুলি করেছে মানচিত্রে,
খুনিরা সব পালিয়ে যাবে
আগামী দিবা-রাত্রে !
সাঈদ তুমি শহিদ বীর
এই বাংলার ইতিহাসে,
তোমার মৃত্যুতে কাঁদে মানুষ
আর নরখাদকরা হাসে।
সাঈদ তোমার সাহস নিয়ে
আগামীর পথচলা,
পথ দেখালে আমাদের তুমি
আমরা যে পথ ভোলা।
বীর শহিদের সিড়ি বেয়ে
আল্লাহ বিজয় দিবে,
দেশের তরে শহিদ তুমি
জান্নাত তুমি পাবে।
(৫)
সমঝোতা নয় !
রক্তের সাগর পাড়ি দিয়ে
বিজয় আনতে হবে,
যতই চালাও গুলি তুমি
পরাজিত তুমি হবে।
মানুষ খেঁকো ডাইনি তুমি
নিতে চাও কত লাশ ?
সবুজ জমিন রক্তে রাঙ্গুক
স্বাক্ষী সবুজ ঘাস।
বাংলা মায়ের আহজারীতে
আল্লাহর আরশ কাঁপে,
তোমার আসন ছিন্ন হবে
রক্ত পিচ্ছিল ধাপে।
ছাত্র-ছাত্রী রাজপথে আছে
মেধার অধিকার নিবে,
আমরা যারা ভোটার রয়েছি
ভোটের অধিকার দিবে।
লাশের বহর দুয়ারে রেখে
ঘরে হবে সমঝোতা !
ভাবছো বুড়ি কেমন করে
ছাত্র-ছাত্রী এতই গাঁধা ?
বাঙ্গালী জানে বিজয় আসবে
শহিদের পথ ধরে,
খুনীর তোকমা নিয়ে তুমি
দিবে চেয়ার ছেড়ে !
(৬)
ছাত্রদের দাবি
পাঁচ পারসেন্ট কোটা রেখে
পঁচানব্বই পারসেন্ট মেধা,
ছাত্রদের এতটুকুই দাবি
সহজ সরল কথা।
ছাত্র হত্যার হুকুম দিয়েছে
কাক্কু কাদের মিঞা,
সবার আগে বিচার হবে
তাকে আদালতে নিয়া।
সকল প্রতিষ্ঠান খুলতে হবে
যতই মুখে বলো,
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো
তাড়াতাড়ি আাগে খুলো।
র্যাব পুলিশ, ছাত্রলীগ
যত করেছে খুন,
তাদের বিচার করতে হবে
জোঁকের মুখে নুন।
সকল ছাত্রের মিথ্যা মামলা
তুলে নাও, নিতে হবে,
ক্যাম্পাসে সকল ছাত্র-ছাত্রী
নিরাপত্তায় তারা থাকবে।
ভিসি আর প্রোভোস্টদের
পদত্যাগ করা চাই,,
তাছাড়া আমরা কেউ
তোমাদের সাথে নাই।
(৭)
রক্ত পিপাসু
হিংস্র হায়েনা মানুষ সেজে
দেশটা করছে শাসন,
তাজা মানুষের রক্ত চুষে
করছে নাচন-কুদোন।
সকল কিছু মানতে রাজি
একটা জিনিস মানবেনা,
লক্ষ-কোটি মানুষ মরলেও
চেয়ার কখনো ছাড়বেনা।
কালো শাড়িতে গতর ঢেকে
বুঝায় আমি দুঃখীত,
কাদের কাক্কু চিৎকার দেয়
নেত্রী করেনা মাথা নীত।
দরদী হওয়ার ভান করে
খুনি নেত্রী আসে,
রাতের আঁধারে রক্ত পিয়ে
অট্রহাসি হাসে।
দেশের মানুষ অসহায় হয়ে
ঢুকরে কাঁদে হায়,
আমার বাচ্চা তোমার বাচ্চা
রাক্ষুসী আজ খায়।
গণভবন সেতো ডাইনি বুড়ির
রক্ত চোষা ঘর,
ছাত্র সমাজ চালাকি বুঝেছে
শুনবে না কথা তোর।
রক্ত পিপাসুর মুখ চেয়ারা
চিনে গেছে জনগণ,
রাজপথে সব এসে গেছে
খুনি নামতে কতক্ষণ !
(৮)
কালনাগিনীর ফণা
কালনাগিনী ফণা তুলেছে
বিষ ঢেলেছে দেশে,
বিষের তোড়ে দেশ নীল
কালনাগিনী হাসে।
কচি-কাঁচা শিক্ষার্থী আজ
রাজপথে সব মরে,
কালনাগিনী দেশ চালাবে
ছোবল মেরে মেরে।
কালনাগিনীর বাচ্চাগুলো
বন্ধুক তাক করে,
র্যাব-পুলিশ, বিজিবি-লীগ
ছোবল মারে জোরে।
কালনাগিনীর প্রতিটি শ্বাস
বিষে ভরপুর,
শ্বাস ছাড়লে পুড়ে যায়
যায় যতদূর।
কালনাগিনী মানুষ চায়না
চায় শুধু চেয়ার,
ভাতের বদলে খায় শুধু
ভারতীয় বেয়ার।
কালনাগিনীর আসল চেহারা
মানুষ চিনে গেছে,
সকল মানুষ রাজপথে নেমে
বুক পেতে দিয়েছে।
(৯)
আমার সন্তানের লাশ
লাশের সারি সারি
পথে সন্তান খুঁজি
আমার সন্তান কই ?
দূরু দূরু মনে
চাই ফিরে ফিরে
মনে অজানা ভয়।
বাড়ি থেকে সেতো
পানি ভরা পাত্র
নিয়ে আনে এখানে,
পিপাসার্থ যারা
পান করবে তারা
দানা বিধেছিলো মনে।
মিছিলে সবাই
পানি পান করে
তৃপ্তির হাসি হাসে,
তৃপ্তি সহকারে
আমার ছেলেটিরে
বুকে নেয় ভালোবেসে।
হঠাৎ করে এসে
সেই মিছিলে
গুলি করে হায়েনা,
দৌড় দেয় সে
অনেকের সাথে
আমার ছোট্ট সোনা।
রাজপথ ফাঁকা
পড়ে আছে লাশ
লাশের হাতে পানি,
বাংলার জমিন
লাল রক্তে আঁকা
লাশটি আমার জানি।
লাশের চেহারা
খুশির ফোয়ারা
ভীতি নেই চোখে,
লাশে যেন বলে
শোন মা তুই
দেশটি রাখিস দেখে।
(১০)
শিক্ষক রাজপথে
শিক্ষক আজ রাজপথে নেমেছে
অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে,
ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁরা
সাহস বেঁধেছে বক্ষে।
শিক্ষককে যারা আঘাত করেচে
নর্দমার কীট তারা,
এ দেশে তাদের ঠােই হবে না
হবে তারা দেশ ছাড়া।
ছাত্র-জনতা, মুঠে মজুর
রাজপথে নেমে গেছে,
দেশের সবখানে আজ
গণবিস্ফোরণ ঘটেছে।
শিক্ষককে মেরে পার পাবে
এটা কি হতে পারে ?
উচিৎ জবাব দিবে জনতা
দেখুন ধৈয্য ধরে।
সামনে সারির সকল শিক্ষক
স্যালুট জানাই তোমাদের,
অধিকার প্রতিষ্ঠা হবেই হবে
বিচার হবে স্বৈরাচারের।
(১১)
লাল ইতিহাস
লাল রক্ত ঐক্য আজ
লাল রাজপথ ডাকলো,
লাল কাপড় মাথার তাজ
লাল ক্যাম্পাস ভরলো।
লাল রক্ত ঝরতে ঝরতে
লাল ইতিহাস হলো,
লাল কাপড় মুখে বেঁধে
লাল শিক্ষক নামলো।
লাল রক্তে দেশ ভরেছে
লাল রক্তের বন্ধন,
লাল কাপড়ে চোক ঢেকেছে
লাল জলের ক্রন্দন।
লাল সূয্য উঠলো আজ
লাল গোলাপ ফুটলো,
লাল মেহেদী হাতে আজ
লাল জবা ঝরলো।
লাল হুংকারে কালোরা আজ
লাল কার্ড পেলো,
লাল রক্তে ভেসে যাবে
লাল দেশের কালো।
(১২)
ফুটফুটে ফুলগুলো
ফুটফুটে সব ফুলগুলো
অকালেই ঝরিয়ে দিলে,
রক্ত খেকো, মানুষ খেকো
রহম নাই কি দীলে?
কী দোষ করেছিলো ওরা
জবাব দিতে পারো ?
কার আদেশে গুলি চালিয়ে
শিশুকে হত্যা করো?
শিশুগুলোকে গুলি করেছো
চোখে, মুখে আর বুকে,
গুলি করে মেরেছো ওদের
তোমরা মরবে ধুকে।
ঐক্য হয়েছে ছাত্র-জনতা
রুখবে তাদের কে ?
জালিমের থেকে এ দেশ
মুক্ত করেই ছাড়বে।
বিচার হবে বাংলার জমিনে
জনগণ করবে বিচার,
সময় হয়েছে বন্ধুক ঘোরাও
হঠাও স্বৈরাচার।
গুলি করলে দেখলেনা কিছু
গুলির সামনে কারা ?
সে গুলিতে শহিদ হয়েছে
নিষ্পাপ শিশু তারা।
ফুলগুলো সব জান্নাতে যেয়ে
লুটোপুটি খায় হেসে,
হত্যাকারীরা জাহান্নাম যাবে
শিশু হত্যার কেসে।
(১৩)
ঘৃণিত পুলিশ
পুলিশের গুলি অবিরাম চলে
ছাত্র-জনতার উপরে,
পুলিশের গুলি যতই বাড়ে
বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
পুলিশ যতই গুলি চালাও
থামবেনা এখন ওরা,
যতই মরবে বহুগুণ বাড়বে
দূর হবে জীর্ণজরা।
তোমার পোশাকে রক্তের দাগ
ঘৃণা করে শিশুরাও,
থুথু ছিটাই তোমাদের উপরে
নারী-শিশু হয়ে চড়াও।
বোমা-গুলি ছাত্রদের কাছে
ফুলের মধু আহরণ,
গুলি খেয়ে ছাত্র-জনতার
অন্তরে উঠে শিহরণ।
ছাত্র-জনতার ইট-পাটকেলে
নিলে পিছুটান অবশেষে,
বন্ধুকের গুলি ফুরিয়ে গেলে
দিক হারা হলে শেষে।
পুলিশের চেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি
আমাদের দেশে নাই,
পুলিশ তুমি বাড়ি যাও
ডাকছে তোমার মা'ই।
(১৪)
আমার ছোট বোন আছে
খোকার কান্না কেউ শুনেনা
চিৎকার দেয় জোরে,
জালিম সরকারের পেটুয়া বাহিনী
আঘাত করে ধরে।
বাড়িতে আমার ছোট বোন আছে
আদর করি তাকে,
আমাকে ধরে কষ্ট দিওনা
ভালোবাসার বোনটাকে।
বাড়ি ফিরলে ছোট বোনটি
আমার নিকট আসে,
চকলেট আর চুইংগাম পেয়ে
খিলখিলিয়ে হাসে।
আদর আর স্নেহ করি
হৃদয় উজাড় করে,
ছোট্ট বোনটি ভালোবাসার
বোন যে আমার আদূরে।
আংকেল তোমার পায়ে ধরি
নিয়ে যেওনা ধরে,
আমায় ধরলে ছোট্ট বোনটি
যাবেই বুঝি মরে।
ধরে নিয়ে গেল খোকাকে ওরা
রাক্ষুসের ভাই খোক্ষস,
খোকার চিৎকারে কেঁপে উঠে
মহান আল্লাহর আরশ।
(১৫)
চব্বিশের গণবিস্ফোরণ
কোটার ফাঁদে মেধাকে মেরে
দেশ আজ রসাতল,
নিত্য দিনের দ্রব্য কিনতে
জনগণ আজ পাগল।
সুদ-ঘুষ, মদ-জুয়া
প্রতি দিনের ব্যাপার,
দূর্ণীতি করে দেশের টাকা
করেছে তারা পাচার।
গুম-খুন, নারী ধর্ষণ
স্বৈরাচার বাহিনী করে,
মিথ্যা মামলায় দেশের মানুষকে
ফাঁসির কাষ্ঠে মারে।
ভোটের অধিকার আগে কেড়েছে
ভাষার অধিকার নাই,
শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে
বিচার কোথায় পাই !
বুকের ভেতর রক্ত ক্ষরণ
হয়েছে পনেরো বছর,
দাঁতের উপর দাঁত রেখে
করেছে সবাই সবুর।
কোট বিরোধী দাবি নিয়ে
ছাত্র সমাজ মাঠে,
মিছিলের উপর গুলি বর্ষণ
সবাই গেছে ক্ষেপে।
বুকের ভেতর জমা ক্ষোভ
হয়েছে বিস্ফোরণ,
ইতিহাস হয়ে স্বাক্ষী দিবে
চব্বিশের গণবিস্ফোরণ।
(১৬)
রক্তে আগুন
বৃষ্টির মাঝে মিছিল হচ্ছে
মিছিলে পুলিশের গুলি,
বৃষ্টির পানিতে ছাত্রের রক্ত
ছড়িয়ে পড়েছে অলিগলি।
খুনের রক্ত হয়েছে আগুন
সারা বাংলার ঘরে ঘরে,
শত শহিদের রক্তের আগুন
কী করে থামাবে ওরে ?
রক্তের আগুন বেড়ে বহুগুন
নিভাতে পারবেনা কেউ,
স্বৈরাচারের মূলে আঘাত করেছে
ছাত্র-জনতার ঢেউ।
যত ঝরবে শহিদের রক্ত
তত বেশি আন্দোলন,
শুনে রাখ বিজয় হবেই
চব্বিশের গণবিস্ফোরণ।
অনেক গোলাপ নিলে কেড়ে
আর ক'টা নিতে চাও ?
গোলাপ দিতে রাজি আছি
শুধু গদি ছেড়ে দাও।
(১৭)
স্বৈরাচারের পলায়ন
১৬ জুলাই রাজাকার ধ্বনিতে
ছাত্ররা নেমেছে রাজপথে,
ছাত্রলীগ নরপিশাচের মতো
হত্যা করে আঘাতে আঘাতে।
যত খুন ততই দ্বীগুণ
বজ্র হ্রংকার ধ্বনি,
শক্ত চোয়াল, বজ্রমুষ্ঠি হাত
বিজয়ের গান শুনি।
রক্তে লাল কালো রাজপথ
প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ,
ছাত্র-জনতার কাতারে সবাই
প্রতিরোধ নয় প্রতিশোধ।
ছাত্র-শ্রমিক, শিক্ষক, উকিল
ইঞ্জিনিয়ার আর ডাক্তার,
আলেম-ওলামা এক কাতারে
একই মিছিলে হুংকার।
স্বৈরাচারের পেটুয়া বাহিনী
এবার নিলো পিছুটান,
রাজপথ থেকে গণভবন-বঙ্গভবনে
কোটি যোদ্ধা আগুয়ান।
৫ আগস্ট পিছন গলি দিয়ে
স্বৈরাচার গংদের দৌড়ান,
স্বাধীন দেশের বিজয় মিছিলে
মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান।
Website: www.ichchashakti.com E-mail: ichchashaktipublication@gmail.com