নাম: মোঃ নূরুল আলম, তিনি ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই থানার ১৪ নং ইউনিয়নে পশ্চিম হাইতকান্দি গ্রামে সরকার বাড়ি, মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা গিয়াসউদ্দিন, মাতা রহিমা আক্তার,দুই বোনের মধ্যে তিনি বড়। ২০০৯ সালে মিরসরাইয়ের ১৬ নং ইউনিয়নে নূরুল উলুম ইদ্রিসিয়া দাখিল মাদ্রাসা দাখিল এবং ২০১১সালে সুফিয়া নূরিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলীম পরবর্তী তে চট্টগ্রাম দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা থেকে ফাজিল শেষ করেন, তাঁর কোন এক প্রিয় শিক্ষকে নূরি ডাকায় নূরি আলম নূর হিসেবে পরিচিত । বর্তমানে তিনি তার প্রথম পাঠশালা নূরুল উলুম ইদ্রিসিয়া দাখিল মাদ্রাসা য় শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত আছেন। তিনি ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের একজন সক্রিয় সদস্য। ইচ্ছাশক্তি আইডি নং- ০০২০২২০৬৯২
০১
কারবালা
মুহররমের আশুরায় কারাবালার দিনে
হৃদয়বিদারক অধ্যায় ঘটে হোসাইনের সনে।
ইতিহাসে স্বাক্ষবহ,আমরাই কেবল ঋণে,
তেজিয়া সাজিয়া তাজিয়া নির্মাণ ,
স্বশরীরে চাবুকাঘাত অশ্রুজলে বিলাপ
হায়! হাসান হায়! হাসান।
ওহে যুবক ওহে নওজোয়ান
তাজিয়া মিছিলে আর কতদিন?
কিসের প্রতিকে শোকের স্মৃতিচারণ!
কারবালা পাবে মানুষের ভিড়ে
কেন খোঁজো এখনো ফোরাতের তীরে?
যতদিন থাকবে শোসক শাসক
থাকবে ততদিন কারাবালার ঘাতক।
কারবালা রবে যুগে যুগে
বদলাবে ফোরাতের তীর
জুলুমের বিরুদ্ধে যে লড়ে
সেইতো হোসাইনী বীর।
সদা হবে জালিমের পরাজয় নত নাহি শির।
সময়ের "সীমার" মুনাফিক জিয়াদ নব্য এজিদ
রুখে দাঁড়ালে তবেই তুমি মুমিন মুজাহিদ!
০২
বাংলার কারবালা
চারিদিকে চলছে কারবালা
কারবালা রয়েছে মানবেতর ভীড়ে
অর্থনৈতিক জীবনে সামাজিক নীড়ে।
দেখো দ্রব্যমূল্যের হাহাকার
খেটে খাওয়া মানুষের আত্মচিৎকার
সামাজিক বিচারে ক্ষমতা যার
অপরাধী হয়েও পেলো সে ছাড়।
শিক্ষাব্যবস্থার দিকে যদি তাকাই
অশালীনতা কুশিক্ষার কারিকুলামে ছাই
উচ্চশিক্ষার ডিগ্রি অর্জনে মেধাবীরা নাই
সুযোগীরা স্থান দখল কোটার দোহাই।
চাকরির হাল সে তো তালবেতাল
বিসিএস প্রশ্নফাঁসে এ কেমন হাল
সেখানে ও টাকাখেকো রাঘব বোয়াল
আয়ের সাথে ব্যায় খুঁজি হেথায়,
অবিচারের পিষ্টকলে কারবালা কে পাই।
ইহা নয় কারবালা ফোরাতের
ইহা চলমান কারবালা বাংলার।
আশূরার কারবালা,,,
ছিল সেটা হোসাইনের পালা
বাংলার কারবালা এবার তোমার পালা।
নয় আর তাজিয়া মিছিল
হোক আন্দোলন সব সংস্কার অধিকার হাসিল।
০৩
সমন্বয় মিছিল
আর নহে কোটায় সমাধান
ওদের উজ্জীবিত আহ্বান
সংস্কার সব স্লোগানে ময়দান
ওদের দগ্ধ হৃদয় ভাইদের বদলায়
তেজিয়ান আগভাগ শহীদি নেশায়
ফিরবে কি তারা গৃহে ক্লান্ত
দ্বিধাহীন ওরা , নহে-ক্ষান্ত!
স্তম্ভিত ক্ষণ চক্ষুর সম্মুখ ভেসে ওঠে
চোখ বুজলেই লাশের গন্ধ ঠোঁটে।
এসেছে সময় সমন্বয়ের সাথে
লড়াকু সৈনিক ওদের পথে
নহে ডরে বীর ওদের অস্ত্র মুখ
ছাড়বো না বাংলার বুক।
ছাড়বে ওরাই গুনতে পাপের দুঃখ।
০৪
কালো লাল
শোক আর ভোগ,যোগ আর বিয়োগ।
দোষ আর নির্দোষ, ক্রোধ আর বোধ।
নয় আর ছয় ক্ষয় আর ভয়
জাতির কাছে স্পষ্ট
কোনটা কষ্ট কোনটা ভ্রষ্ট!
বলাবলি দোষারোপ বিএনপি জামায়াত
কেমনে তারা করলো হামলার আবাদ।
ছিলে কি তোমরা ঘুমিয়ে?
কিসে রাখলো দমিয়ে!
কেন আজ শোকাবরণ?
ছিলো কি তা বিস্ফোরণ ?
এতো মানুষের লাশ
কার আদেশে এই ত্রাস!
ওদের দগ্ধ হৃদয় ক্রন্দিত মন
ওদের শোকের ধরন তাই লালবরণ
দফা দাবি আন্দোলন মরণাপণ।
তোমাদের অহংকার কথার ধরন
দুর্নীতি কদাচার খোলসে আবরণ।
থামাবে কে আজ তাদের এই অনশন।
চুপসে অনেকেই এখনো মতির মালা দিয়ে
না জানি কখন তাড়ানি দে তোমাদের
রাজাকার অপবাদ দিয়ে।
০৫
অসহযোগ আন্দোলন
চলো রাজপথ করতে অবরোধ
অসহযোগ আন্দোলনে।
দাবি একটাই স্বৈরাচার পতনে।
দগ্ধ হৃদয়ে ভাইদের বদলা নিতে
বেঁধেছি মাথায় কাফন, মৃত্যুকে করতে আপন;
শহীদি মর্যাদার সনে।
কানে বাজে এখনি আমার ভাইয়ের আর্তনাদ
চোখ বুজলেই ভেসে ওঠে
ওদের দেহের রক্তে রঞ্জিত মাঠ।
রুখে দাঁড়াতে পুলিশ বাহিনী
আর্মি বিডিআর দলবল;
অস্ত্র মুখো তাদের লড়াইয়ে
মোরা ছাত্রদের জনবল।
আজ কাঁপবে রাজপথ থামবে
সরকারী পোষাদের হানা।
ফিরবো না আর ঘরে, করেছি যেই পণ;
স্লোগানে হবে দাবি আদায়
হোক না দিবারাত্রি অনশন!
চাইনি মোরা সংঘাত চেয়েছি সংস্কার
দিয়েছো অপবাদ লাশের সমাহার পুরুস্কার।
রয়েছি মোরা থাকবোই এই বাংলায়
ছেড়ে দাও তুমি আমার ভূমি
তোমার হবেনা আর ঠাঁই।
০৬
"লংমার্চ যোদ্ধা"
লড়েছো প্রাণপণ ছাড়ো নি রাজপথ!
ছিলে তৃষ্ণার্ত ক্ষুধার্ত,
নির্ঘুম রাত এ কাত ওকাত
হবে কখন প্রভাত?
না জানি কখন কি হয়
মনোভীতি প্রশ্নমুখো শত সংশয়!
নীরবতা ভেঙ্গে হঠাৎ থমকে!
ঐযে আমার মুগ্ধ ভাইয়ের ধ্বনি
কাতরায়িত কন্ঠে লাগবে পানি!
নহে ডরে বীর লড়াকু সৈনিক
আমি ও হতে চাই শহীদ।
নেমেছি আজ লংমার্চে
লাখো জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে।
ইনশাআল্লাহ হবেনা আর স্বৈরাচারীর ঠাঁই
নেবে বিদায় হবে দাবি আদায়।
বিজয়ের দামামা বেজে উঠল যখন
নচেৎ চুপসে উৎফুল্ল মনে ধরি স্লোগান
জয় নব স্বাধীনতার জয়,
এ বিজয় সাঈদ ফয়সাল মুগ্ধের বিনিময়
আরো শত শহীদের ত্যাগের ক্ষয়।
কতো বোনদের নির্মমতা য় কেটেছে
লোমহর্ষক করুণ অধ্যায়।
০৭
শহীদ আবু সাঈদ
ছিলো অধিকার বিবেকের দাবিদার
তবে কেন অত্যাচার অপবাদ রাজাকার?
কেন অবমূল্যায়ন মেধার?
আলোর মিছিলে কেন আঁধার!
আমি তো ছিলাম জ্ঞান চর্চায় মোহিত বিদ্যায়,
স্বদেশ গড়ার নেশায় স্বপ্ন সাফল্যের উচ্চ পেশায়।
আমি তো বায়ান্নের উৎসাহী সন্তান
লালিত একাত্তরের স্বাধীনতার মান।
আমি তো শিখিনি অন্যায় আবাদ
পেয়েই আঘাত শিখতে হলো প্রতিবাদ।
দিয়েছি তাই বুক পেতে, নত নহে শির
নেমেছি আজ রাজপথে নাহি ডর লড়ে বীর।
ওহে! পাচাটাদার পুলিশ পাষণ্ড
ছিলো না কারফিউ ছিলাম নিরস্ত্র
অপরাধ ছিল কি এমন করলি গুলিবিদ্ধ!
মৃত্যুকোলে আজ দেখছি বিজয়
বৃথা যাবে না এই রক্তের বিনিময়।
স্বাক্ষী আকাশ বাতাস এই পথমাঠ
ন্যায়ের পথে লড়েছি হে আল্লাহ!
কবুল করো আমার এই শাহাদাত।
০৮
লাগবে কি কারো পানি
লাগবে কারো পানি? শেষ হলে দেবো আনি।
আমি তো জানি লড়বে আর কতখানি!
অনেকেই উপোস কিছু খাওনি!
অভিমান ভাঙাতে কেউ তো আসেনি।
"লাগবে কারো পানি?শেষ হলে দেবো আনি।
পেয়েছো বরং তিরস্কার অপবাদ
পানিয় পেয়েছো টিয়ার শেল গ্যাস
খাওয়া দাওয়া অকস্মাৎ বুলেট!
বেপোরোয়া শংকিত মূহুর্তাঞ্চল
মুছতে ধূলিত-চক্ষুর অশ্রুজল
পাবেনা তো মায়ের আঁচল!
"লাগবে কারো পানি? শেষ হলে দেবো আনি"
কতো জনের গেলো চোখ
ভেঙে গুঁড়ো পা হাত!
মৃত্যুমুখো ছটফট প্রাণ একাত ওকাত!
আসছি শিঘ্রই তো! তোমাদের কাতারে।
প্রাণবন্ত এখনো জীবন্ত লাশদের সাঁতারে।
"লাগবে কারো পানি? শেষ হলে দেবো আনি"
স্বাক্ষ্য থাকুক আকাশ বাতাস
স্বাক্ষ্য বিপ্লবী পথমাঠ!
মরণোত্তর চাই মুখে কালিমা শাহাদাত
০৯
ফির স্বাধীনতা
স্বৈরাচারী চলে গেলো,
দাবি আদায় পূর্ণ হলো
স্বাধীনতা ফিরে পেলো;
ছাত্রসকল মিছিল দিলো
শোকরানা নামাজ পড়লো।
কতক লোকের পদ গেলো
সাথে তার চাকরি খেলো
পুলিশ কর্মের বিরতি নিলো
পরিচ্ছন্নতা ও ট্রাফিক-কন্ট্রোল
শিক্ষার্থীরাই দায়িত্ব নিলো
নব ইতিহাস রচিত হলো।
আয়নার ঘরের সন্ধান পেলো
গুম হওয়া সন্তান ফিরে এলো
ভয়ানক রুপকথার গল্প জুড়লো।
ইলিয়াস আলী খুন হলো
পতেঙ্গা সমুদ্রে ভেসে দিলো।
ভোগান্তির ইন্টারনেট সচল হলো
সময় বিটিভি ভ্যান করলো!
দিগন্ত চ্যানেল আদেশ পেলো
যমুনাকে জাতীয়তার উদ্যোগ নিলো।
জাতীয় সংসদ পরিবর্তন হলো
অন্তবর্তীকালীন সরকার ডঃ ইউনূস পেলো।
ছাত্রসমাজ বাংলাদেশ গড়তে
নব্য আশার প্রদীপ জ্বালালো।
১০
আয়না ঘর
রাত পোহালো দিন ফুরালো
ফজর কখন মাগরিব গেলো।
দিবারাত্রি আলোহীন খাঁচায়
কোন এক অন্ধ মহল
শুনেছি নাম তার আয়না ঘর।
দেখিনা কতদিন নিজের মুখ
নিজের কাছে নিজেই পর
এ কেমন আয়না ঘর!!
একটু আলো খুঁজি কুরআন পড়তে
কষ্ট জমা হৃদয়ের আকুতি মেটাতে
নামাজ শেষে মোনাজাতে।
ভেসে আসে কানে কখনো আজান
বাজিয়ে দিলো ওরা মিউজিক গান।
কে ওরা কিসের শাস্তি নানান ব্যাপ্তি
তিরস্কার ঠাট্টায় বিদ্রুপ ক্ষ্যাপাটে
ইহা নয় আয়না ঘর
ইহা ভয়ঙ্কর হায়ানাঘর।
পঁচা বাসি খাবার, মিললো যে আজ আহার
ইচ্ছে রোজা রাখার কিন্তু মিলেনি ইফতার।
ছেড়ে দিয়েছি বাঁচার আশা ফিরবো কি আর ঘরে?
পথ চেয়ে আছে কি? পরিবার আশার প্রদীপ ধরে!
এখানে আত্মাদের কান্নার অশ্রু জল
জীবিত দেহের ;মৃত্যুই তার প্রতিফল
ইহা নয় আয়নাঘর, বসে থাকা দেখার ঘর
ইহা চারদেয়ালের নির্যাতনের অন্ধকার শহর।
১১
নব্য রাজাকার
ওহে পুলিশ তুই শুনছিস!
আস্ত তুই জালিম তুই খবিস
এমন নির্দয়তায় কাঁপেনি বুক
তুই তো রাক্ষস এতটাই প্যাচিস্ট!
তুই যে ছাত্রদের করছিস গুলি
মরণোত্তর কালিমা শাহাদাতের বুলি
নড়েনি কি একটুও তোদের টনক
ছিলো সেটা বিজয়ের ঝলক।
এরপরও স্বৈরাচারীর পথ নিলে
লুকিয়ে থাকা পাষণ্ডতার রুপ দেখিয়ে দিলে।
তুমি না করেছিলে পণ শপথের বাক্যে!
দেশের সকল প্রাণের রক্ষার্থে!
ঐক্যের ডাকে ছিল কি এমন বিবৃতি?
ধিক্কার জানাই তোমাদের রণকৌশল প্রস্তুতি;
নিরস্ত্রের উপর এমন বর্বরতার কু-কৃর্তি!
অভিশাপ পড়ুক লালসার সব পদোন্নতি।
তুমি মীর জাফর এজিদ সীমার
তুমি মুনাফিক তুমি পা চাটা গোলাম
দ্বিতীয় স্বাধীনতার ইতিহাসে নব্য রাজাকার
Website: www.ichchashakti.com E-mail: ichchashaktipublication@gmail.com