লেখক পরিচিতিঃ
কবি এস এম জাকারিয়া ১৯৮২ সালের ১৪ মে চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত মীরসরাই উপজেলার মীরসরাই থানাধীন মধ্যম মুরাদপুর বানাতলি গ্রামে এক মধ্যবিত্ত শিক্ষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মাও. মুহাম্মদ মাহবুবল হক নিজামী (অব. শিক্ষক, সুফিয়া নূরীয়া ফাজিল মাদরাসা) ও জেবুন্ নেছা চৌধুরীর বড় সন্তান। তাঁর একমাত্র ছোট বোনের নাম মরহুমা নাসরিন সুলতানা তমা। তিনি স্থানীয় স্কুল থেকে প্রাথমিক ও মাদরাসা থেকে দাখিলের গন্ডি পার করেন। উত্তর চট্টগ্রামের শতাব্দী শ্রেষ্ঠ দ্বীনি বিদ্যাপীঠ সুফিয়া নূরীয়া ফাজিল মাদরাসা থেকে আলিম ও ফাজিল শেষ করে চট্টগ্রাম মহানগরির উম্মুল মাদারিস খ্যাত দারুল উলুম কামিল মাদরাসা থেকে কামিল তথা স্নাতকোত্তর শেষ করেন। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম থেকে কুরা নিক সায়েন্স এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে কবি বিবাহিত এবং এক সন্তানের জনক।তিনি বর্তমানে মীরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নস্থ ওলিনগর গ্রামের “চিশতিয়া বজল আহমদ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা” এর সহ. সুপার হিসাবে পাশাপাশি প্রীন্ট মিডিয়ায় সংবাদ কর্মী হিসাবে কাজ করছেন।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতি খুব অনুরাগী ছিলেন। কবি প্রথম কলম ধরেন ১৯৯৮ সাল ‘বক’ নামক ছড়া লেখার মাধ্যমে। সেই ধারাবাহিকতায় কবি’র লেখা ৬টি যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে, যার মাধ্যমে কবি বাংলা সাহিত্যকে এক ভিন্ন স্বাদের মাত্রা যোগ করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের একজন সক্রিয় সদস্য। ইচ্ছাশক্তি আইডি নং- ০০২০২২০১৩০। তিনি সকলের কাছে মানুষ ও মানবতার জন্য লিখার জন্য দোয়া প্রার্থী।
দমের ঘড়ি থামলে পরে
উড়ে যাবে ফুরুুৎ করে
হারিয়ে যাবে দূর নীলিমায়
সাড়া দিতে খোদার ইশারায়,
কেউ পাবেনা খুজে তারে
সাধের এই ভবের ঘরে
টান থাকবেনা পুত্র কণ্যায়
গতি হারাবে জীবন মোহনায়।
হাজার চেষ্টা করলেও পরে
রাখা যাবেনা ধরনীতে তারে
দিতে হবে চির বিদায়
আঁধারে ঘেরা মাটির বিছানায়,
স্বাগত জানালো একাকী ধরণিরে
সেই যাবে একাকী ফিরে
কি আছে হিসাব খাতায়
অর্জন করেছে সে দুনিয়ায়।
মানুষ সবে শুননা ওরে
ভয় কর সেই দিনেরে
নিজেরে তৈরি করে নেয়
মৃত্যুর আগে এই দুনিয়ায়,
আদেশ নিষেধ মানলে পরে
আশা থাকবে খোদার দীদারে
রাসূলের পূর্ণ অনুসরণ করায়
জান্নাত মিলবে জাহান্নাম অন্যথায়।
সাতচল্লিশের দেশ ভাগের পর
আরেক বিপদ আসলো দেশের উপর,
চির স্বাধীন চেতা বাঙালির
সহ্য হয়নি তখন পাকিস্তানি শাসনের।
আমার সোনালী ভূমির উপর
তখন পড়েছিলো শাসক গোষ্ঠীর কুনজর,
বাঙালিকে সুযোগ দেয়নি উচ্চপদের
খাটিয়ে মারতে দিয়েছিলো পদবী চাকরের।
কৃষক থেকে কেড়ে নিত
সবুজ এই ভূমির সোনালী ফসল,
বিনিময়ে তারা শুধুই দিত
অত্যাচারের খড়গ যা রক্ত লাল।
পরিশেষে বাঙালি জেগে উঠলো
সকল অত্যাচারের বিরুদ্ধে মাঠে নামলো,
মুক্তিকামী বাঙালি অস্ত্র ধরলো
অবশেষে রক্তে অর্জিত স্বাধীনতা আসলো।
রক্তে অর্জিত স্মরণীয় দিনগুলো
বিশ্বব্যাপী সকলের কাছে প্রশংসায় ভাসলো,
গণতান্ত্রিক পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা পেলো
এভাবেই অধিকার সংগ্রামে বাংলাদেশ হলো।
মন থেকে মুছে দাও
এমনি সব অতীত,
মনে আসতে যদি দাও
নাড়িয়ে দিবে ভীত।
যে অতীত আমাদের কাঁদায়
চলার পথ আটকায়,
এসো আমরা ভুলে যাই
বর্তমানের কর্ম ব্যস্ততায়।
ফেলে আসা দিনগুলো ভাবায়
জীবন ভরে অস্থিরতায়,
প্রতি পদে পদে জ্বালায়
কোনোও পিছুটানের মায়ায়।
ডুবে গেলে অতিতের ভাবনায়
আগামীর প্রস্তুতি হারায়,
কর্ম চঞ্চলতা থেমে যায়
মূল্যবান বয়সটা নিঃশেষ হয়।
তাই এসো মনে দেই
আগামী গড়ার সময়,
যে আগামী আসবে রক্ষায়
ওপারের হিসাবের বেলায়।
এসে গেছে নতুন বছর
তাই লেখা-পড়ায় নতুনত্ব দরকার,
সেই লক্ষ্যে প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের
হোক নতুন বছরের অঙ্গীকার।
শিক্ষকরা যদি হন প্রশিক্ষিত
শ্রেণিতে পাঠদান হবে উন্নত,
শিক্ষার্থী উপস্থিতি বাড়বে তত
কারিকুলাম অনুসরণ হবে যত।
ক্লাসের পড়া ক্লাসেই শেষ
বাড়িতে থাকবেনা ঝামেলা রেশ,
বেতের ভয়ের পাঠদান শেষ
পড়ালেখায় আসুক আনন্দের পরিবেশ।
এখন শিখন হবে অভিজ্ঞতায়
আর মূল্যায়ন হবে যোগ্যতায়,
অভিজ্ঞতা আসবে প্রেক্ষাপট বিবেচনায়
শিখন চলবে নতুন যাত্রায়।
পাশ-ফেলের ভয় কাটিয়ে
শিক্ষা জীবন শংকাহীন হয়ে,
প্রতিফলন ঘটুক অভিজ্ঞতা দিয়ে
নতুন যাত্রা দক্ষতা দিয়ে।
দুনিয়ার জীবন যতটা সহজ
যার তরে যতো,
পরকালের জীবন ততটা কঠিন
তার তরে ততো।
হিসাব দেওয়া অতি সহজ
পরকালীন জীবনে ততো,
বয়ে চলেছেন কষ্টের জীবন
দুনিয়ায় যারা যতো।
জীবনে নিয়ন্ত্রণহীন অভ্যস্ত সমাজ
বানাচ্ছে যারাই যতো,
অপেক্ষায় আছে ময়দানে মিযান
হিসাব আমল মতো।
সেদিন হিসাব হবে সহজ
ভালো আমল যতো,
ভালো আমল ছাড়া কল্যাণ
দূরে থাকবে ততো।
আমল করো মু’মিন সমাজ
পূণ্য আছে যতো
তবেই পাবে রবের অনুদান
রহমত ঝরবে অবিরত।