1. admin@ichchashakti.com : admin :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

সেই তুমি কেন এতো অচেনা হলে — জাকির আলম

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ৬৫ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

সেই তুমি কেন এতো অচেনা হলে

জাকির আলম

 

সম্পর্কের পাঁচ বছরের মাথায় তোমার চলে যাওয়াটা মন থেকে আমি মেনে নিতে পারেনি। তোমার সাথে প্রথম দেখার পর থেকে শেষ দিন পর্যন্ত অনেক বেশি উৎফুল্ল ছিলাম আমি। কতো শত স্মৃতি তোমাকে ঘিরে। শহরের পথে রিক্সায় চড়ে ঘুরতে যাওয়া, ফুসকা, ঝালমুড়ি খাওয়া, বাদাম টোকানি, নতুন কোনো মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা দেখতে যাওয়া, কফি শপে বসে আড্ডা দেওয়া, রফিক মামার চায়ের দোকানে বসে চা পান করা, তোমার প্রিয় চকলেট আর রজনীগন্ধা ফুল না নিয়ে গেলে তোমার অভিমান, এসব নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার ছিলো। এতোসব স্মৃতি ভুলে গিয়ে অনেক দূরে চলে গেলে তুমি।তুমিতো বলেছিলো আমার সাথেই হাজার জনম কাটিয়ে দিবে তুমি। কখনো চলে যাবে না। বুকে মাথা রেখে, হাতে হাত রেখে কতো শত স্বপ্ন তুমি আমাকে দেখিয়ে ছিলে। মাঝেমাঝে তোমাকে হারাতে ভয় পেতাম বলে তুমি রাগ করে আমার গাল টিপে দিতে।

 

কখনো তোমার কথার অবাধ্য হলে ভীষণ অভিমানে কথা বলা বন্ধ করতে। তখন তোমার সেই অভিমান ভাঙতে সে যে আমাকে কতকিছু করতে হতো তার কোনো ইয়ত্তা নেই। তবুও তোমার সবকিছু আমি উপভোগ করতাম। তোমাকে হাসাতে কত কথার জালে তোমাকে জড়াতাম। তোমাকে ঘিরেই আমার যতো ভাবনা ছিলো। একদিন তোমার মন খারাপ দেখলে আমার ভীষণ কষ্ট হতো। মনে হতো তোমার মন ভালো করার জন্য তোমার মনের জগতে আমি কোনো রঙিন প্রজাপতি হয়ে যাই। খালি পায়ে সবুজ ঘাসের উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া, পদ্মদিঘির জলে পা ডুবিয়ে রেখে চাঁদনি রাতে তোমার পাশে বসে গল্প করা, কতো না মায়াময় ছিলো তোমার সাথে কাটানো সেই দিনগুলো। রোজ রোজ তোমার বাড়ির আঙিনায় গিয়ে তোমাকে এক নজর দেখতে যাওয়া, তোমাকে নিয়ে অজস্র  প্রেমের কবিতা লেখা, এসব আমার দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিণত হয়েছিলো। তোমাকে নিয়ে লেখা কয়েক হাজার গল্প-কবিতা, হলুদ খাম ভর্তি প্রেমের চিঠি, সবকিছুর কেন্দ্রে তুমি ছিলে। তোমাকে ছাড়া নিঃশ্বাস নিতেও যেন খুব কষ্ট হতো আমার। একদিন তোমাকে দেখতে না পেলে মন আমার ছটফট করতো। তুমি কখনো অসুস্থ্য হলে তোমার চিন্তায় আমিও অসুস্থ্যতা বোধ করতাম।

 

তোমাকে ভালোবেসেই লিখে ছিলাম ‘যেখানে বসন্ত তোমার’ কবিতার বই। যে কবিতার পরতে পরতে তোমার নাম লেখা ছিলো। ছিলো ভালো লাগা, ভালোবাসার কাব্য উপাখ্যান। মাঝ রাতে ঘুমের ঘরে কবিতার ছন্দ হয়ে তুমি আমার মনে ভালো লাগার সুর ছড়িয়ে যেতে। নিভুনিভু জোনাকির আলোয় মনে পড়ে যেত তোমার মায়াবী হাসি মুখের কথা। যখন এলোমেলো বাতাসে তোমার দীঘল কেশ উড়তো, তখন আমার মনে হতো এই বুঝি তুমি আমাকে ছুঁয়ে শিহরণে কাঁপিয়ে দিচ্ছ। কতো মনোরম ছিলো সেই দিনগুলো। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর তোমার মনের নাগাল ছুঁতে পেরেছিলাম। তোমাকে ভালোবাসতে গিয়ে কতকিছু যে আমাকে করতে হয়েছে, সেগুলো মনে পড়লে বড্ড হাসি পায় আমার।খুব ইচ্ছে ছিলো তোমার সাথে একটা জীবন কাটাবো। তোমার হাত ধরে ফেরারি মনে ঘুরে বেড়াবো। প্রতি বসন্তে পলাশ ফুলের মালা জড়িয়ে, কাচের চুরি হাতে পরিয়ে, একটা কালো টিপ কপালে লাগিয়ে তোমাকে সাজানোর সুদৃঢ় ইচ্ছে ছিলো আমার। তোমার মতো করেই একটা জীবন কাটিয়ে দেওয়ার বাসনা ছিলো আমার। কখনো বুঝিনি আমার জীবনে তুমি অতিথি পাখির মতো আগমন করেছিলে। তোমার ভাবনায় নিজেকে ভাসাতে গিয়ে জ্বলে-পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেলাম আমি। চোখের জলে নদী বয়ে গেল। তোমার চোখে তাকিয়ে থেকে হারিয়ে যাওয়ার কতো না বাসনা ছিলো আমার। তোমাকে ভালোবেসে বিয়ে করতে যাওয়া আমি হেরে গেছি, সত্যি আমি হেরে গেছি। তুমি আমার সাধ্যের বাইরে চলে গেলে। তুমিহীন জীবন আমার মরণের থেকেও যন্ত্রণাময়।

 

যে জীবনে তুমি নেই, সেটা কোনো জীবন নয়। সেটা একটা মরীচিকা জীবন নিয়ে খেলা করা। তোমার পথে যাযাবর হতে গিয়ে শূন্যতায় মিশে গেলাম। কতো সহজে আমাকে তুমি ভুলে গেলে। যাওয়ার সময় একটু বলে যাওয়ারও অবকাশ পেলে না তুমি। জানিনা কোন ভুলে আমাকে ছেড়ে গেলে তুমি। এমন তো করার কথা ছিলো না তোমার।জানিনা কোন প্রিয় মানুষের হাত ধরে স্বপ্নের দেশে চলে গেলে আমাকে কাঁদিয়ে। চলেই যদি যাবে তবে কেন এসেছিলে আমার জীবনে ?কেন এতো মায়াজালে জড়িয়ে ছিলে ? কেন তবে মিথ্যে স্বপ্নে আমাকে ভাসিয়ে ছিলে ? কি দোষ করেছিলাম তোমাকে ভালোবেসে ? বাতাসে কান পাতলে মনে পড়ে তোমার সেই হাসি ভরা কথার ফুলঝরি। তোমাকে হারিয়ে ভালো নেই আমি। সত্যি ভালো নেই। আমার ভালো থাকার অভ্যাস ছিলে তুমি। রাত জেগে ফোনে কথা বলা, মেসেজ করা, বিকেল হলে দেখা করা এসব আজ যন্ত্রনার কারণ এখন।

 

একজীবনে তোমাকে ঘিরেই সব আশা পূরণ করতে চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম তোমার বুকে মাথা রেখে অন্তিম জীবনের সুখ উপভোগ করতে।তিলে তিলে গড়ে তোলা ভালোবাসাকে মিথ্যে প্রমাণ করে চলে গেলে তুমি। তোমাকে ধরে রাখতে গিয়ে কতকিছুই না করেছি আমি। কখনো তো তোমাকে কষ্ট দেইনি, তোমার মন খারাপের কারণ হইনি। তোমার কোনো কথার অবাধ্য হইনি। তোমার সবকথাই তো অকপটে পালন করেছি আমি। এতো কিছু করা সত্ত্বেও কেন তুমি এতো অচেনা হলে। দিনের পর রাত আসে, রাতের পর দিন আসে, অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়ে যায়, তবুও তুমি ফিরে আসো না। তোমার প্রতীক্ষায় থাকতে থাকতে পায়ের অতলে শিকড় গজালো তবুও তুমি ফিরে এলে না। তোমার ফেরার অপেক্ষায় ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে যাই, তবুও তোমাকে ভালোবেসে, তোমার মায়ায় পড়ে একলা পথে হেঁটে যাই চোখের জলে বুক ভাসিয়ে। তোমাকে ছাড়া বেঁচে থাকা মিথ্যে।

 

তুমিহীন আমি একা, বড্ড একা। তোমাকে কাছে পাওয়ার বাসনায় বারংবার হেরে যাওয়া সত্ত্বেও তোমাকে পুনর্বার ভালোবেসে ফেলি। অনেক বেশি কষ্ট পাই তবুও তোমাকে কাছে পাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকি। এ অপেক্ষা ক্রমশ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। তবুও ব্যর্থ প্রেমের স্মৃতি ভুলতে পারিনা। এমন স্মৃতি কে কবে ভুলতে পেরেছে ? ভোলা কি যায় কভুও ? ভোলা যায় না। কিছুতেই ভোলা যায় না। সত্যিই ভোলা যায় না তোমাকে !

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park