বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতির অঙ্গন বরাবরই মুক্তচিন্তা, স্বাধীন মতপ্রকাশ এবং মানবিকতার এক অনন্য ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, কিছু কুচক্রী মহল এ অঙ্গনকে কলুষিত করার জন্য নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভিত্তিক সাহিত্য গ্রুপগুলোতে তারা মিথ্যা তথ্য, বিভ্রান্তিকর প্রচারণা এবং ব্যক্তিগত আক্রমণের মাধ্যমে তরুণ লেখক-লেখিকাদের হতাশ করে তুলছে। এর ফলে একদিকে যেমন সৃজনশীল তরুণ প্রজন্ম তাদের সাহিত্যচর্চা থেকে নিরুৎসাহিত হচ্ছে, অন্যদিকে সামগ্রিকভাবে সাহিত্য অঙ্গনের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
সাহিত্য মানুষের মানস গঠনের হাতিয়ার। অথচ কিছু অসাধু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী একে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইছে। তারা নির্লজ্জভাবে গুজব ছড়াচ্ছে, নতুন লেখকদের লেখালেখি নিয়ে অকারণ সমালোচনা করছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে বিভিন্ন গ্রুপে তাদের হয়রানি করছে। নবীনদের স্বপ্ন ভেঙে দেওয়ার এই নোংরা খেলায় ইচ্ছাশক্তি পরিবার কখনোই মেনে নেবে না। কেননা সাহিত্য হচ্ছে মুক্তি ও মানবতার অঙ্গন, এখানে বিদ্বেষ, হীনমন্যতা বা প্রতারণার কোনো স্থান নেই।
এখন সময় এসেছে এ ধরনের অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার। সর্বপ্রথম প্রয়োজন, তাদের মিথ্যা প্রচারণার জবাব সচেতনভাবে না দেওয়া এবং তাদের কর্মকাণ্ড উপেক্ষা করা। অর্থাৎ সামাজিকভাবে বয়কট করা। কারণ তারা চায় সাহিত্যিক সমাজে বিভক্তি তৈরি করতে, ভীতি ছড়াতে এবং নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে। যদি আমরা সবাই মিলে তাদের উপেক্ষা করি, তবে তারা কার্যত শক্তিহীন হয়ে পড়বে।
তবে কেবল সামাজিক বয়কটই যথেষ্ট নয়। যখনই কোনো লেখক-লেখিকা স্পষ্ট হয়রানির শিকার হবেন, তখনই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। বাংলাদেশের আইনে সাইবার হয়রানি, মানহানি বা ভুয়া প্রচারণার বিরুদ্ধে স্পষ্ট শাস্তির বিধান রয়েছে। একজন লেখক কেবল কলমের মানুষ নন; তিনি একই সঙ্গে একজন নাগরিক, যিনি আইনের সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রাখেন। সুতরাং যদি কোনো মহল মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে তার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করতে থাকে, তবে আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
সাহিত্যচর্চা একটি পবিত্র সাধনা। এর মাধ্যমে ব্যক্তি যেমন নিজেকে সমৃদ্ধ করে, তেমনি সমাজকেও আলোকিত করে। এ সাধনায় কেউ যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে কালিমা লেপন করতে চায়, তবে তাকে সমাজ এবং রাষ্ট্র – উভয় পর্যায়ে প্রতিরোধ করা দরকার। আজকের তরুণ লেখকরা আগামী দিনের সাহিত্য জগতের প্রাণশক্তি। তাদের কলমকে দমিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা কখনো সফল হতে দেওয়া যাবে না।
ইচ্ছাশক্তি পরিবার আহ্বান জানাচ্ছে—সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে যারা মিথ্যাচার, গুজব এবং প্রপাগান্ডার মাধ্যমে কলুষিত করছে, তাদেরকে অবিলম্বে সামাজিকভাবে বয়কট করুন। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। সাহিত্য হোক মুক্তির, সৌন্দর্যের এবং সত্যের অঙ্গন—যেখানে সবার জন্য থাকবে সমান অধিকার ও মর্যাদা।
লেখনিতেঃ মোঃ নাছিম প্রামাণিক
Website: www.ichchashakti.com E-mail: ichchashaktipublication@gmail.com