1. admin@ichchashakti.com : admin :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

শরতের পুকুরপাড়ে — মোহাম্মদ ফয়সাল

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫
  • ৪৫ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

আমার শৈশব ছিল এক অদ্ভুত আনন্দে ভরা, যেখানে প্রতিটি দিন ছিল নতুন একটা অভিযানের মতো। গ্রামে আমাদের বাড়ি ছিল পুকুরপাড়ে, আর সেই পুকুর ছিল আমাদের খেলার এক অনন্ত দুনিয়া। দিনের শুরু হতো, পাড়ে দাঁড়িয়ে জল ঠান্ডা লাগানো পিপঁল গাছের ছায়ায় সূর্যোদয়ের সাথে। আমরা, আমি আর আমার সঙ্গী বন্ধু আমরানকি, কখনো খালের কিনারে, কখনো পুকুরে, কখনো আবার মাঠে ঘুরে বেড়াতাম।

 

আমরানকি ছিল এক অদ্ভুত ধরনের বন্ধু—স্মার্ট, কিন্তু জানতাম না কখন কী করবে! প্রথম কাজ ছিল, আমগাছের নিচে চলে যাওয়া। গাছগুলো এত বড় ছিল যে, একবারে কয়েকটি আম চুরি করে ফেলতে পারতাম। আর আমাদের প্রিয় ছিল সে সব পাকা আম, যে গুলি শুধু একটু ঝুলে থাকলেই, টানা নাড়াতে হলেই পড়ে যেত। আমরানকি চিৎকার করে বলত, “দ্রুত, পেছন দিকে!”—এমন সময়, আম গুলি পড়তো, আর আমরা মজা করে খেয়ে ফেলতাম। যদি কখনো ধরা পড়তাম, তাও হতো “ফিরে এসে আবার পেতে!”—আমরা জানতাম, দাদু বা বাবা কখনোই আমাদের তাড়া করে না, শুধু হেসে বলতেন, “ভালো তো!”

 

পুকুরে গোসলের দিনগুলো ছিল সবচেয়ে আনন্দের। দুপুরের রোদ গায়ে মাখতে মাখতে, একগাদা ছেলে-মেয়ে জড়ো হয়ে পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়তাম। পাড়ের মাটি গরম হয়ে উঠত, কিন্তু তাতে কী, আমরা পুকুরের ঠান্ডা পানিতে দাপাদাপি শুরু করতাম। আমরানকি যখন খালের ধার দিয়ে চলে যেত, সেও সেই পানি খেয়ে আসত, আর আমরা হাসতে হাসতে জলে ঝাঁপাতাম।

 

আর ঘুডি? সেই ছিল আমাদের সেরা খেলা! একটা পলিথিন আর কাঠের টুকরো দিয়ে কত ঝলমলে ঘুডি বানিয়ে, মাঠের মধ্যে দৌড়াতাম। আর কখনো কখনো, তৌডে বেডানো—তাহলে পায়ের পাতা দিয়ে কাদায় ঘুরতে ঘুরতে কখনো দূরের মাঠে চলে যেতাম, পাখিদের ডানার মতো গুঞ্জন শোনা যেত।

 

সে ছিল এক মুক্ত হাওয়ার দিন, ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে গেছি স্বাধীনতার রাজ্যে। আমাদের খেলা, আমাদের অজানা পথ, আর সেই আমগাছ, পুকুর, খাল—সবকিছু এক অমলিন সুখের অংশ ছিল।

 

কিন্তু এখন, শহরে চলে আসার পর এসব কিছুই হারিয়ে গেছে। আমরানকি, পুকুর, খাল—সব কিছু যেন এক সোনালি স্মৃতি হয়ে গেছে। শৈশবের সেই সব দিনগুলো কোনোদিনও ফিরবে না, তবে কিছু স্মৃতি আছেই, যা কখনো ভোলা যাবে না।

 

তখনকার আম চুরির আনন্দ, পুকুরে খালের মাঝে হাসির প্রতিধ্বনি, আর ঘুডি উড়ানোর ঝুলন্ত দিন—সব স্মৃতি এখনো মনের কোণে এক রেশ রেখে যায়।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park