1. admin@ichchashakti.com : admin :
শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

রং নাম্বারে প্রেম — আল-আমিন সাজ্জাদ

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৪৫৪ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

গল্পঃ রং নাম্বারে প্রেম, গল্পকারঃ আল-আমিন সাজ্জাদ

(হাসতে চাইলে গল্পটি আপনার জন্য)

টানা তিন মাস কথা বলার পর।  এখন দেখা করার পালা।  কয়েকদিন ধরে সাহাদাৎ খুব জোর করে বসতেছে। কি করবো বুঝতে পারতেছি না। আবার না দেখেও থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে।  সাহাদাৎ থাকে ঢাকায়, ওরে আসতে বললাম আমাদের চাঁদপুরে। ও বলতেছে ওর অফিস নাকি ছুটি দিবে না,আমাকেই যেতে বলতেছে। আজ থেকে তিন মাস আগে আব্বুর ফোনে কল আসে।  আব্বু বাসায় না থাকায় কলটা আমি রিসিপ করি। তখনই প্রথম কথা হয় ওর সাথে। আমার কন্ঠ পেয়ে এমন এমন মিষ্টি সুরে কথা বলতে লাগল। আমি একটুতেই কথার লোভে পড়ে যাই। পরিচয় জানতে চাইলে, নানা কথা পেঁচাতে থাকে।  আমাকে সময় পেলে কল দিতে বলে।

 

পরের দিন আমি আমার নাম্বার থেকে কল দেই। হ্যালো বলাতেই বুঝতে পারে সাহাদাৎ। একটু একটু করে কথা বলা বেড়ে যাচ্ছে।  ওরে বলি ইমুতে যোগ করতে। সোনায় এযুগে এসেও ইমু চালায় না। মনে আমার একটাই প্রশ্ন।  ও কি আমার মতো ১৮ ১৯ বছরের নাকি মুরুব্বি।  কথার ধরন, কন্ঠ শুনে বুঝার উপায় নাই।  সব সময় এমন ভাবে কথা বলতো,  মনে হতো ২২ বা তার চেয়ে একটু বেশি হবে।

টানা তিন মাস মিষ্টি কথায় কেটে গেল। মোটামুটি ছোট একটা সংসারও সাজিয়ে ফেলেছি মনে মনে। ফুপ্পি থাকে ঢাকায়। কায়দা করে ফুপ্পির বাসায় ঘুরতে আসলাম। এখানে এসেই পড়ে গেলাম মাইনকা চিপায়। কি একটা যে অবস্থা, বলার মতো না। আমি আসার একদিন পরেই ফুপ্পির উপর ভুত ভর করে বসে। আসলাম দেখা করতে, এই দিকের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে চলে আসছি যমের ঘরে। ইন্টারভিউ ছাড়াই ফুপ্পির বডিগার্ডের চাকরিটা গেলাম। সারাক্ষণ ফুপ্পির দেখাশোনা করা লাগে।

 

দুঃখে পরান ফাটে, ভয়ে শরীর কাপে। শালার এতেও যদি সীমাবদ্ধ থাকতো তাহলেও চলতো। বাড়িতে একটা ক্যাসেট আছে,  এ হারামজাদায় একবার গান(কান্না) শুরু করলে দুই তিন ঘন্টার আগে থামেই না। মোটামুটি কাজের বুয়ার আসনটাও আমার ঘাড়েই চেপে গেল। ফুফা কবিরাজ খুজতেই ব্যস্ত।  একটার পর একটা কবিরাজ আসতে লাগল বাসায়। নাহ্ কাউকে দিয়ে কিচ্ছু হচ্ছে। ফুপ্পির উপর যেটা ভর করেছে সেটা নাকি খুবই শক্তিশালী।
অবশেষে আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে একজনের দেখা মিললো। ২০ হাজার টাকা কন্টাক্ট করে বাড়িতে আনা হল তাকে। তারিখটা ছিল ২২, বারটা ছিল শুক্রবার।  সকাল সকাল ভুত ছাড়ানোর সমস্ত আয়োজন করা হল। মোমবাতিতে আগুন জ্বালিয়ে দুই ফু দিতেই কবিরাজের মৃগী উঠে এক নিমিশেই কেস খতম।

কে দেখে কার কান্দন। শালার দুঃখে শুটকি মাছ হয়ে গেলাম। বিষয়টা এমন হয়ে গেছে যে, রোগী বাঁচাতে এসে ডাক্তার মারা গেল।   যাইহোক এলাকার লোকজনের সামনে ঘটনাটা ঘটেছে বিধায় ফুফা পুলিশ কেস থেকে মুক্তি পেয়ে যায়। দীর্ঘ সতেরে দিন পর ফুপ্পি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠে। ফুপ্পিকে বললাম আমি একটু ঘুরতে যাবো। আমার কথা শুনেই ফুপ্পির চোখ কপালে উঠে গেল। কি বলে মেয়েটা। দুই দিন হলো আসছে আর এর মধ্যেই সব চিনে ফেলেছে।

ফুপ্পি না করে বসে। আমি সাহাদাৎকে আমাদের ফুপ্পির বাসার ঠিকানা দিতেই চিনে ফেলে। এই এলাকা নাকি তার চেনা। ফুপ্পির বাসা থেকে চার বাসা পরেই রাস্তার পাশ দিয়ে রেল লাইন চলে গেছে। সেখানেই আসতে বলি ।

শুক্রবার নামাজ শেষে সাহাদাৎ সেখানে এসে কল করে।  আমি বাসার পুচকুটাকে নিয়ে চলে আসি। আসার পর আর সাহাদাৎকে খুজে পাচ্ছি না। একটা মধ্যে বয়সী লোক ছাড়া সবাইকে জোড়া জোড়া দেখতেছি। সাহাদাৎকে কল করে বলি কই তুমি। সাহাদাৎ উত্তরে বলে ব্রিজের উপর বসে আছি।  তুমি কই আছো। ওর কথা শুনেতো বোদাই হয়ে গেলাম। ১০০ গজ দুরে যে মুরুব্বি বসে আছে সেই কি তাহলে শাহাদাৎ? ফোনটা এক সেকেন্ডেই বন্ধ করে ফেলি। দুঃখে মাথা ঘুরাতে লাগল। করলাম কি জীবনে। বুক ফাইট্টা কান্না আসতে লাগল। চার পাঁচ দিন কান্না করলেও এর সমাপ্তি হবে না এমনটা মনে হচ্ছে।

 

মনে হচ্ছিল এই বুইড়া খাটাশের আমার বয়সী অন্তত দুইটা মাইয়া আছে। এই খাটাশ পারলো কেমনে আমার সাথে এরকম করতে। ওর তো মরার ভিসা চলে আসছে। তার পরের শয়তানের বাচ্চা বদমাশি করে। শরমে দিকবিদিক না তাকিয়ে বাসায় চলে গেলাম। শালার জীবনের প্রথম একটা প্রেম করলাম।  তাও আবার ডেড ফেল মালের সাথে।  শরমে নিজের কাছে নিজেকে অবাঞ্ছিত মনে হলো। বাসায় গিয়ে ফোন আর চালু করলাম না। পরের দিনই আমাদের বাড়িতে চলে আসি। বাসায় এসে ফোন চালু করতেই খাটাশে ফোন করে। ফোন আর ধরলাম না। ফোনে কল জমে গেছে একশত তেশ খানা। একবার ফোন ধরতেই।

-কেমন আছো জান

-ওই শালা খাটাশ, কে তোর জান।

-এভাবে কথা বলতেছো কেন। আর কালকে আসলে না কেন।

-কিভাবে কথা বলবো তোর সাথে।  তুই যে বুইড়া বেডা। আগে কইছোস কখনো আমারে। হারামজাদা বুইড়া বয়সে ভীমরুতে ধরছে তোরে। তোর কপাল ভালো মানুষ দিয়ে তোরে পিটাই নাই।

– ভালোবাসায় বয়সে কি আসে যায়। আমি বুড়া হতে পারি,  কিন্তু আমার মনটা বুড়া হয় নাই।

-শালা ফোনটা রাখ।  আর কোন দিন ফোন দিবি না।

-দেখো, আমার বউ মরার পর কেমন যেন প্রিয়জনের শুন্যতায় ভুগতে ছিলাম। তুমি এসে আবার জাগিয়ে দিয়েছো।  প্লিজ ছেড়ে যেও না।

– হারামজাদা আর একটা কথা বললে তোরে রক্ত শুন্যতায় ভুগামু। বলেই ফোন কেটে দিয়ে সিমটা আজীবনের মতো বন্ধ করে ফেলি।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park