আকাশে তখন চাঁদ হেসেছে।রূপোলী রূপোলী চাঁদটার জোসনা।চুইয়ে চুইয়ে জোসনা ঝড়ছে ধরায়। নীরব ছাদে রাতের কার্ণিশে বসে চুইয়ে পড়া জোসনা দেখছি।বড্ড ইচ্ছে করছিল তখন — আমি যদি চাঁদ হতাম! আমার বুকেও লুকিয়ে থাকতো জোসনা।পৃথিবী দেখতো আমার বুকের রূপোলি জোসনা কেমন মায়াবী! তখন গর্বিত হতাম আমি।কিন্তু, সেটা কখনো হবার নয়। এ যে রবের ঐশী সিদ্ধান্ত!
ছাদে বসে চাঁদ দেখার মধ্যে কেটে গেলো দেড় ঘণ্টা।সময় এতো দ্রুত ফুরালো কীভাবে, বুঝতেই পারলাম না। আরেকটু বসে থাকার ইচ্ছে ছিলো।কিন্তু, একা আর কতোক্ষণ বসে থাকা যায়! সেটাও আবার গভীর রাতে।রাত দুটো নাগাদ। পাশে কেউ থাকলে একটা রাত কেন, একটা জীবনই কাটিয়ে দেয়া যায় অনায়াসে — এসব ভাবতে ভাবতে পায়চারি করছিলাম ছাদের এপাশ থেকে ওপাশে। গুড়ুম করে আকাশ কেঁদে ওঠলো হঠাৎ। আকাশের কান্নাটা যেন আমার হৃদয়ে আঘাত করলো।আকাশের দিকে তাকালাম আনমনে।দেখলাম— মেঘ জমা শুরু করেছে আকাশে।ঘনকালো মেঘ।প্রথমে তারকারাজি গিলে নিলো এ মেঘ, তারপর চাঁদটাকেও।আমার মন খারাপ বেড়ে গেলো। এমন তো হয় না কোনোদিন।মেঘের সাথে আমার হৃদয়ের পরিচয়। ভালোবাসি মেঘ- বৃষ্টি।তবে আজকের মেঘ মনখারাপের কারণ হলো কীভাবে! কতোবারই তো মেঘের কারণে চাঁদ হারালো,কই তখন তো মন খারাপ হতো না! আজ এমন হলো কেন! হতে পারে, মন খারাপের কারণ মেঘের সাথে আমার অভিমান। অভিমানের কারণে যে রাগ হয়,মন খারাপ হয়—সবই কিন্তু ভালো লাগার মতন সুন্দর। এ ভালো লাগার ব্যাখ্যা শব্দহীন। যা কেবল অভিমানিরাই জানে!
মেঘের পর এলো বৃষ্টি। মৃদু মৃদু বাতাস।হিম হিম গন্ধ চারিদিকে। সে গন্ধ নাঁকে লাগিয়ে রুমে চলে এলাম।ঘুমের ডোবায় নাইতে নামলাম।কে পারো উঠাও আমায়!