মতিউর রহমান
রমজান মুসলমানদের জীবনে আধ্যাত্মিক শুদ্ধি, সংযম, এবং আত্মশুদ্ধির মাস। এই মাসে রোজা রাখার মাধ্যমে মুসলমানরা শুধু খাবার ও পানীয় থেকে বিরত থাকে না, বরং মনের খারাপ চিন্তা ও কাজ থেকেও দূরে থাকার চেষ্টা করে। এটি একটি আধ্যাত্মিক অনুশীলন যা আল্লাহর নৈকট্য লাভ, ক্ষমা প্রার্থনা এবং মানবতার সেবায় উৎসর্গীকৃত। এজন্য বলা হয় রমজান মুমিনদের জন্য বসন্তকাল।
ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে রমজান মুসলমানদের জন্য একটি বড় উপহার, কারণ এই মাসে আল্লাহ তাদের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে, অপরাধ মাফ করতে এবং ভালো কাজের প্রতি আগ্রহী হতে বিশেষভাবে সাহায্য করেন। রোজা শুধু খাদ্য বা পানীয় থেকে বিরত থাকার নাম নয়; এর মূল উদ্দেশ্য হল মন, মস্তিষ্ক এবং হৃদয়কে ভালো কাজে নিয়োজিত করা।
রমজান আমাদের শিখায় কিভাবে সংযম সাধন করা যায়, শুধু শরীরের মাধ্যমে নয় বরং আমাদের অনুভূতি, কথা ও চিন্তা নিয়েও। এই মাসে যখন আমরা খেতে বা পান করতে পারি না, তখন আমাদের খারাপ আচরণ, অযথা কথাবার্তা ও মনোভাবেও বিরত থাকতে হয়। এর মাধ্যমে আমাদের ক্ষমা, ধৈর্য্য, কৃতজ্ঞতা এবং মহান আল্লাহর প্রতি আনুগত্য বৃদ্ধি পায়।
এছাড়া, রমজান আমাদের গরীব, দুঃখী ও অস্থির মানুষের পাশে দাঁড়াতে শিক্ষা দেয়। এ মাসে বেশি করে দান-খয়রাত এবং সাহায্য করা হয়ে থাকে, যা মুসলমানদের একে অপরের প্রতি সহানুভূতি ও সহযোগিতার মনোভাব তৈরি করতে সাহায্য করে।
রমজান শেষ হলে ঈদুল ফিতর আসে, যা শুধুমাত্র আনন্দের দিন নয় বরং এটি আত্মবিশ্বাস এবং সমাজের মধ্যে একতা ও বন্ধন সৃষ্টি করার একটি শক্তিশালী প্রতীক। ঈদ মুসলমানদের জন্য ঈমানের শক্তি এবং আল্লাহর কৃপা অর্জনের একটি পরিসমাপ্তি।
সুতরাং রমজান আমাদের শিখায় আধ্যাত্মিকভাবে উন্নতি করতে, নিজের দুর্বলতাগুলি কাটিয়ে উঠতে এবং আল্লাহর প্রতি তওবা ও প্রার্থনা করতে। এটি একটি দুর্দান্ত সুযোগ, যা প্রতি বছর আসে এবং আমাদের জীবনে পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে। তাই আসুন, সবাই সময়কে কাজে লাগাই, হয়তো সামনে আর এ সুযোগ নাও পেতে পারি! আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে কবুল করুন, আমিন।