ডেক্সঃ আব্দুল মুহিত
ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ৮ দফা ৮ দাবির বিষয়ে ২০০৮সাল থেকে আজ অব্দি সরকার কৃতক কোন পদক্ষেপ না নেওয়াই ১৩-৪-২০২৫ হতে অনির্দিষ্টকালের জন্য এটিআই খাদিম নগর সিলেটের প্রশাসনিক এবং একাডেমিক সহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে তালা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা । তার সাথে কর্মসূচিকে সামনে রেখে সাধারণ শিক্ষার্থী বৃন্দ হতে ক্যাম্পাস কাপানো হাততালি এবং স্লোগানের সাথে সাথে উক্ত কর্মসূচি পালন করা হয়। যে পর্যন্ত তাদের দাবি আদায় না হচ্ছে, সে পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলছে চলবেই এমনকি তারাআরো কঠোর কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হবো।
কৃষির সৈনিক এক হও লড়াই কর,
ডিপ্লোমা কৃষিবিদ,এক হও লড়াই কর,,
আমাদের দাবি মানতে হবে,
মানতে হবে মেনে নাও,,
এসব স্লোগানে পূর্বের কর্মসূচি অনুযায়ী আজ ১৩ /৪/২০২৫ইং সকল সেমিস্টারের পরিক্ষা বর্জননকরে সকাল ৮ ঘটিকায় বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট খাদিম নগর সিলেট ৮ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলনের ধারাবাহিকতা চলতে থাকে। উক্ত আন্দোলনে প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীরা পরিক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করে। এর সাথে অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও যোগ দেয়।প্রশাসনিক ভবন, প্রশিক্ষণ হল সহ ইনস্টিটিউটের সকল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয় পরিক্ষা বর্জনকারি পরিক্ষার্থী ও আন্দোলন রত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানায় তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে তারা আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নিবে আগামী কালের কর্মসূচিতে।আন্দোলন রত শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হিমেল এর কাছ থেকে তালা ঝুলানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বলে তাদের এই যুক্তিক দাবি গুলা আদায় না হওয়া পর্যন্ত তালার চাবি তালা অব্ধি পৌঁছাবেনা। এবং কোনো শিক্ষার্থী পরিক্ষা এবং কোনো ধরনের ক্লাসে অংশগ্রহণ করবেনা।
প্রতিষ্ঠানের অফিসার দের পরিক্ষা বর্জন এবং গেটে ছাত্রদের তালা ঝুলনের বিষয়ে জানতে চাইলে নিশ্চুপ থাকেন।
ক্যাম্পাসের ক্যান্টিনের ক্যাশিয়ারকে ছাত্রদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন গত কয়েকদিন আন্দোলন করে আন্দোলন রত শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ৭ম সেমিস্টারের ছাত্র সালমান সহ বেশ কয়েক জন অসুস্থ হয়ে পরে।। অসুস্থ হলে তাদের দাবি আদায়ের জন্য সকল ক্লান্তি পরিহার করে আন্দোলনের সামনের সারিতে অবস্থান করে।
মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে ছাত্ররা স্লোগানের আওয়াজ আর করতালির শব্দ আরও বাড়িয়ে দেয়।সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত আন্দোলন চলমান ছিলো।
কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট খাদিম নগর সিলেট এর প্রধান সমন্বয়ক ৭ম সেমিস্টারে ছাত্র মো এমদাদুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে পেজে লিখেন আমি কৃষির একজন ছাত্র। আমরা মাঠে-ঘাটে কাজ করি, কৃষকের পাশে থেকে খাদ্য উৎপাদনে সক্রিয় ভূমিকা রাখি। কৃষক আমাদের ক্ষুধার অন্ন জোগান, আর আমরা শিক্ষার্থীরা কৃষকের কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছি।
অনেক শিক্ষার্থী স্বপ্ন নিয়ে কৃষি ডিপ্লোমা পড়তে আসে, আশায় থাকে উচ্চশিক্ষার। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, সরকারি ব্যবস্থায় কৃষি ডিপ্লোমা পাশ করার পর উচ্চশিক্ষার সুযোগ না থাকায় সেই স্বপ্নগুলো অকালেই নিভে যায়। খেটে খাওয়া পরিবারের শিক্ষার্থীদের পক্ষে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত খরচে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। এর ফলে, বহু শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে এবং শেষমেশ বেকারত্বের শিকার হয়।
এছাড়া, অনিয়মিত নিয়োগ প্রক্রিয়ার কারণে সরকারি চাকরির সুযোগও প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করেছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও সময় দিয়েছি। কিন্তু এখনও আমাদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়িত হয়নি।
প্রশ্ন জাগে—আমরাও কি মানুষ নই? আমাদের কি কোনো অধিকার নেই?
…আমাদের এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নয়। এটি একটি ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলন—একটি স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রাম। আমাদের শিক্ষকরা আমাদের কাছে পিতা-মাতার সমতুল্য। সন্তানের ক্ষুধা লাগলে যেমন পিতা-মাতা না খেয়ে হলেও সন্তানকে খাওয়ান, তেমনি আমরা বিশ্বাস করি, আপনারাও আমাদের এই সংকটময় মুহূর্তে নিরব দর্শক হয়ে থাকবেন না। কিংবা আমাদেরকে প্রতিপক্ষ বানাবেন না আমরা চাই, আপনাদের সহানুভূতি, সমর্থন এবং সক্রিয় সহযোগিতা যেন আমাদের পাশে থাকে।
আমাদের দাবি গুলো যেন কেবল শোনা না হয়—বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যায়।
আমরা চাই সম্মান, চাই সুযোগ, চাই উচ্চশিক্ষার অধিকার।
আমরা কোনো দয়া চাই না—আমরা আমাদের প্রাপ্যটুকুই চাই।
আসুন, এই কৃষিশিক্ষার ভবিষ্যৎ রক্ষা করি। কৃষির মেধাবী প্রজন্ম যেন বঞ্চনার শিকার না হয়, সেই লক্ষ্যে আপনারাও এগিয়ে আসুন।