‘মা’ এই ক্ষুদ্র শব্দের অন্তরালে যেন মাহাত্ম্যের বিশালতা ম্লান হয়ে রয়। ‘মা’ বললেই ভরে যায় মুখ প্রশান্তি পায় বিচলিত বুক। মায়ের মাহাত্ম্যের সীমানা সীমাহীন। পৃথিবীর কোন উদাহরণই হয় না মহান মায়ের সাথে। যদি নিঃস্বার্থের কথা বলো তবে ক্রমের শুরু হয় মায়ের দ্বারাই। আর আধিক্য বঝাতে মা, মা, মা তারপর বাবা হয়। যদি উজাড় করার প্রসঙ্গ আসে তাহলে মা ছাড়া আর কে-বা বলো সব উজাড় করে দিয়ে শুধু আঁখির জলে ভাসে! ছোট আঁখিতে সকালে ধরা পড়ে মাকে দেখতে হলে তো বড় আঁখির প্রয়োজন হয়। রাজপ্রাসাদ ছাড়তে একজন মা দ্বিতীয়বার ভাবে না নিজ সন্তানের সঙ্গ দিতে গাছতলাকে আপন করে নিতে দিধা বোধ করে না তাঁরই নাম ‘মা’। জীবন তো তুচ্ছ মৃত্যু পথযাত্রী হয়েও সন্তানের কথা চিন্তা করে তিনিই তো ‘মা’। মাগো তোমার সাথে আর কারোই তুলনা হয় না।
কিন্তু না, একজন মা মহান হলেও মায়েরা সর্বদা মহান হয় না। মায়ের সর্বত্র মাহাত্ম্য সম্পূর্ণ ভাবে উপলব্ধি করতে পারে কেবলমাত্র একমাত্র সেই মায়ের গর্ভেধারণ করা নিজ সন্তান। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, ‘যতই তেল লবণ দেওনা কেন সবজি কি আর মাংস হয়’। মা ক্ষুনি হতে পারে, হিংসুক হতে পারে, মিথ্যাবাদীও হতে পার, রাজরানী হতে পারে এমনকি ভিক্ষরীও হতে পারে শুধু মাত্র তাঁর সন্তানের জন্য। একজন মা সর্বদাই তাঁর সন্তানের মঙ্গল কামনা করে সর্বত্র। আর নিজ সন্তানের মঙ্গল কামনা করতে করতেই একজন মা আর একজন মায়ের সন্তানের অমঙ্গল কামনা করে বসে আর এটা তাঁর কাছে তেমন কিছুই মনে হয় না কেননা তেনার কাছে তেনার সন্তানই সর্বোত্তম। সমবয়সী একই ক্লাসে পড়ুয়া দুটি সন্তান একে অপরের বন্ধু হলেও দিন শেষে ঐ দুই সন্তানের মা একে অপরের সন্তানকে নিজ সন্তানের শত্রু মনে করে এই ভেবে যে, পড়া-শুনায় আমার সন্তানের চেয়ে যেন তার সন্তান কম পারে অনুরুপ সকল ক্ষেত্রে।
আবার একজন শ্বশুড়ির কাছে সর্বদাই তাঁর সন্তান সোনা আর পুত্রবধু পিতল, তাই তো তিনি পিতলকে যথাসম্ভব ঘষামাজার উপরে রাখে আর স্বর্ণকে আল্তভাবে স্বযত্নে। আবার সেই মা-ই মেয়ের জামাইকে হিরক খন্ড রূপে দেখে। তাই বলা যায় ‘মা’ মহান কিন্তু মায়ের এই মাহাত্ম্য শুধু মাত্র নিজের মায়ের কাছেই সীমাবদ্ধ।