1. admin@ichchashakti.com : admin :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

মায়া জালের ভূত (১ম পর্ব) — আল-আমিন সাজ্জাদ

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৫৩ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

মায়া জালের ভূত 

-আল-আমিন সাজ্জাদ

১.

কলেজের প্রথম দিন, কেমন যেন শূন্য শূন্য লাগতেছে। চারিদিকে ছেলে মেয়ের কোলাহল, তবুও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে কষ্ট হচ্ছে আমার। এই জীবনে কি করলাম আমি, ভালো কোন বন্ধুই হলো না আমার। ধ্যাৎ আমি আসলেই একটা খ্যাত। ঘোমরা মুখ করে ফিরে এলাম বাসায়।

 

ফ্রেশ হয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে বাসার বেলকুনিতে এসে সামস্ এর দুঃখে ভরা গান শুনতে থাকলাম। কখন যে সন্ধা হয়ে গেছে বুঝতে পারিনি। হঠাৎ করেই কেমন যেন একটা আওয়াজ শুনতে পেলাম। শব্দটা ভয়ংকর টাইপের। একটু ভয় পেয়ে গেলাম, এখানে এরকম শব্দ আগে শুনিনি, যাই হোক মনকে বুঝিয়ে, রুমের মধ্যে চলে গেলাম।

 

সকাল হতে না হতেই বাহির থেকে চেঁচামেচি কানে ভেসে আসলো বাহিরে উঁকি মেরে দেখি মা চিল্লাইয়া বলতেছে, কিরে অন্তু তোর কাপড়ে রক্তের দাঁগ কেন, কিছুই বুঝতে পারলাম না। আমি শুধু জানি না বলে চলে গেলাম।

 

কলেজেও যাওয়া হলো না আজকে, বাজারে গিয়ে টং দোকানে বসে একটা চা আর সিগারেট খেয়ে, চলে আসলাম। বরাবরের মতো কানে হেডফোন লাগিয়ে দুঃখের গান শোনার চেষ্টা করতেছি, নাহ্ জমে উঠতেছে না।

 

কেমন যেন মনটা আজকে চাঞ্চল্যকর লাগতেছে। বৃথা চেষ্টা না করে ঘুমিয়ে পরলাম। মাঝ রাতে রোমান্টিক একটা স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে গেল,

চারিদিকে কেমন যেন চুলের সুগন্ধ বের হচ্ছে। মনে হচ্ছে কোনো সু্ন্দরী নারী গোসল করে গায়ে পারফিউম মেখে বসে অপেক্ষা করতেছে তার স্বামীর জন্য।

 

কিছুই বুঝতে পারতেছি না আমি, এমন কড়া গন্ধ কোথা থেকে আসবে, আর এতো রাতে তো, আম্মুরও আমার রুমে আসার কথা না। আর তাছাড়া এরকম পারফিউম তো আম্মু ব্যবহার করে না।কেমন যেন অদ্ভুত লাগতেছে আমার কাছে, আমি কি কল্পনায় আছি? নাকি মাথা টাল হয়ে গেছে, ভাবতে ভাবতে আবার ঘুমিয়ে পড়ি।

 

সকালে ঘুম থেকে উঠে কলেজে যাই। হঠাৎ করেই চোখ পড়ে বকুল গাছের দিকে, নিচেই বসে আসে শ্যামলা রংয়ের একটা মেয়ে। চেহারা দেখতে ভারি মিষ্টি লাগছে, মুখটা মায়ায় ভরা। যে কেউ প্রথম দেখেই মায়ায় পড়ে যাবে। আমিও তাদের দলেরই সদস্য হয়ে গেলাম। গুটি গুটি পায়ে মেয়েটির দিকে এগুতে লাগলাম। কাছাকাছি যেতেই তার ফোনে একটা কল আসে। ওপার থেকে কি যেন বলল, সে বল আমি মায়া, তারপর বলল তুমি দাঁড়াও আমি আসতেছি। বলেই কলটা কেটে গন্তব্যের দিকে এগুতে লাগল।

 

 

নিরাশ মন নিয়ে চলে আসলাম ক্লাস রুমে। রুমের সবার মধ্যেই কেমন যেন উত্তেজনা ভাব বিরাজ করতেছে, একজনকে জিজ্ঞেস করলাম কি হইছে, সবাই এরকম করতেছে ক্যান।

একজন উওর দিল, তুমি জানো না কিছু, আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম না। গত কালকে রাতে সিনিয়র একটা আপুর ধর্ষিত লাশ পাওয়া গেছে, খালের পাড়ে। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। কি শুনছি এসব।

 

নাহ্ যে দিকেই যাচ্ছি কিছু না কিছু বাজে কিছু শুনছি। মনে কেমন যেন একটা ভয় ডুকতে লাগল। তাহলে কি আমার সাথে খারাপ কিছু হতে চলেছে নাকি। ওইদিন বিকট আওয়াজ,রাতে পারফিউমের ঘ্রান, সকালে রক্তমাখা জামা। খুবই টেনশনে পড়ে গেলাম। মন নয় ছয় হিসাব করতেছে।

 

বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি বুঝতেও পারিনি।

সেই পারফিউমের ঘ্রান। তাকিয়ে দেখি, পাশে বসে কাঁধে মাথা রেখে বলতেছে আমি আজীবন তোমার পাশে থাকতে চাই। বলেই শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। অজান্তেই এক টুকরো সাদা মেঘ এসে কাছে ভীড়তেই পাশে আর কাউকে দেখতে পাইনি, শুধু কানে ভেসে আসছে আমাকে যেতে দিয়ো না প্লিজ, পলকেই মেঘটা হারিয়ে যায়। চিৎকার মেরে ঘুম থেকে উঠে পরি। আম্মু দৌড়ে এসে বলে কি হইছে। আমার গা থেকে দরদর করে ঘাম ঝরতেছে।

 

ঘড়ির কাটার দিকে তাকিয়ে দেখি সাড়ে সাত টা বেজে গেছে।

আম্মু গ্লাসটা সামনে এগিয়ে দেয়। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।

তাই যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করে নিলাম।

আম্মু, কিরে তোর রুম থেকে এতো সুন্দর ঘ্রান আসতেছে, নতুন পারফিউম এনেছিস নাকি। আমি বুঝতে পারতেছিলাম এটাই সেই পারফিউমের গন্ধ। তাই আম্মু কোন কিছু বুঝার আগেই

মাথা নাড়িয়ে বললাম হ্যা। আম্মু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল কালকে কবিরাজের কাছে গিয়ে একটা তাবিজ এনে দিবো গলায় পড়ে নিস। আম্মুকে বললাম ওসবের দরকার নেই, এমনি ঠিক আছি, তুমি যাও আমি আসতেছি। অস্থিরতা নিয়েই উঠে ডাইনিং এ চলে যাই। সামনে পছন্দের খাবার থাকা সত্বেও গলা দিয়ে খাবার নামতেছে না। দু একবার মুখে দিয়ে হাত ধুয়ে উঠে পরি।

 

সকালে ঘুম থেকে উঠি, রাত ভালোই কেটেছে, মনে হচ্ছিল উষ্ণতার পরশে রাতের ঘুমটা অসাধারণ কেটেছে। আজকে কলেজে না গিয়ে চলে গেলাম নদীর পাড়ে, যেখানে সিনিয়র আপুর ধর্ষিত লাশটা পাওয়া গেছে। আমিতো অবাক।

 

কালকে স্বপ্নে যে কদম গাছের তলে বসে, কাঁধে মাথা রেখেছিল, এটাই তো সেই গাছ, গাছের নিচে যেখানে বসেছিলাম সেখানের পাতা বিছানোর আকারটা একই রকম আছে। মেয়েটির চেহারা বার বার মনে করার চেষ্টা করলাম। কিছুতেই করতে পারলাম। সবকিছু উলট পালট মনে হচ্ছে। মাথার উপর সবকিছু ঘুরপাক খাচ্ছে। মিনিট খানেক পর বাতাসের ঝাপটা এসে পুরো শরীরটাকে শিতল করে দিয়ে গেল। মনে হচ্ছে জায়গাটা চিরচেনা। বহুবার এসেছি এখানে, বা দিকে তাকাতেই চোঁখে পড়ে ছোট্ট ডালে এক টুকরো কাগজ বাঁধা। কাগজটা হাতে নিয়ে ভাজ খুলে ফেললাম। নিপুণ হাতের কারুকার্যের মাঝখানে লেখা, ** তোমার জন্যই অপেক্ষা করতেছি**

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park