জীবনটা যে কতই না কষ্টের হতে পারে তা মাঝে মাঝেই টের পাই, বিশেষ করে যখন মা-বাবার কাছ থেকে প্রয়োজনে টাকা চাই। তবে দোষটা তাদের কে দেয়া কখনোই ঠিক হবেনা। কারণ সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও যখন আমাদের চাহিদা মেটা তে পারেনা, তখন আমাদের চেয়ে তারাই বেশি কষ্ট পায়। তাদের নিয়মিত কথা, কিছু দিন আগেই তো টাকা দিলাম, আবার কোথা থেকে দেই? (কথাটা শুনতে অবশ্য ভালোই লাগে)। ফোনের ও পাশ থেকে কান্নার আওয়াজটা হয়তো শোনা যায় না, তবে তাদের ব্যর্থতার বুকফাটা আর্তনাদটা ঠিকই অনুভব করা যায়। এক পর্যায়ে অভিমান করে হয়তো কিছু না বলেই ফোনটা কেটে দেই। তবে তাদের বুঝতে বাকি থাকেনা যে, ছেলে কেনো এভাবে কলটা কেটে দিলো!..
যাই হোক, কষ্ট হলেও যেভাবে সম্ভব ম্যানেজ করে পাঠায়। কারণ তারা স্বপ্ন দেখে তাদের ছেলে-মেয়েরা কলেজ-পড়ে চাকরি করবে। তাই পড়াশুনা করতে তো টাকা লাগবেই। আর আমরা যারা এই মধ্যবিত্ত স্থানটি তে আছি সবাই মা-বাবার কষ্টটা একটু হলেও বুঝি। তাই বন্ধুদের সাথে আড্ডা বা (প্রাণের শহর বালিয়াডাঙ্গী) গেলেও নিজেদের কাপড় কেনার জন্য সেই পরিচিত ফ্যাশন হাউজ বা বাজারকেই বেঁছে নেই। এক্ষেত্রে বন্ধু-বান্ধবীদের চেয়ে আমাদের সময় একটু বেশি লাগে। সবার সাথে যাতে মেনে চলা যায়, এই ভেবে যাচাই-বাছাইয়ে তো একটু সময় লাগেই।
খাবার-দাবারের বেলায় আমাদের ভাগ্যে কখনই চাইনিজ বা ফাস্টফুড জোঠেনা। প্রকৃত ব্যাপারটা গোপন রেখে আমরা এগুলোকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মনে করি। সকালের খাবার টাকাটা বাঁচানোর জন্য অনেক সময় ঘুমেই কেটে দেই, নাস্তা করলেও অল্প খরচেই সেড়ে নেই। কারণ আমরা জানি, আজ যারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো তে আছেন, তারাও একসময় এই খাবার গুলোই খেয়ে গেছেন। আরেকটা চরম সত্য হচ্ছে, মেয়েদের পেছনে টাকা ব্যয় না করার কারণে, অনেক সময় যোগ্যতা থাকা সত্বেও মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েদের ভাগ্যে প্রেম জুটেনা। সত্যটা স্বীকার করলেও আমরা বলি, কলেজ/ভার্সিটি লাইফে প্রেম করা যাবে না। ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে বেশি করে পড়াশোনা করা দরকার। তাই রাত জেগে ফোনে কথা বলার মত সময় আমাদের নেই। এখানে কিন্তু ফ্লেক্সি লোডের ব্যাপারটা ও গোপন। সত্যি কথা বলতে কি, ১০ টাকা বা ২০ টাকার উপর ফ্লেক্সি দেয়ার সাহস সাধারণত মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েদের হয়না। তবে কিভাবে সবার সাথে মেনে চলতে হয়, সেটা আমাদের ভালো ভাবেই জানা আছে।
বাবা চালায় বাটন মোবাইল, যেটা তে সকালে চার্জ দিলে বিকেলেই নাই। আর আমাদের কিনে দেয় দামি স্মার্ট মোবাইল। MB সুবিধা দিয়ে আমরা ইন্টারনেট, ফেসবুক চালাই। বাসার বাইরে থাকলে জিরো ফেসবুকে সম্পর্কে কেউ কিছু বললে আমাদের যুক্তি থাকে, মাঝে মাঝে হঠাৎ করেই চোখের সামনে খারাপ ছবি চলে আসে, সেগুলো থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যই আমরা জিরো ফেসবুক চালাই। আসলে আমরা অনেক ভালো তো (ভালো কি না জানি না) তবে এভাবেই চলতে থাকে। আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েদের জীবন। এক সাথে চলাফেরা করা কয়েক জনের সাথে নিজের অবস্থান চিন্তা করলে মাঝরাতে নিজের অজান্তেই চোখের পানিতে বালিশ ভিজে যায়। এতে অবশ্য সমস্যা হয় না। কারণ এসময় মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েরা ছাড়া কেউ জেগেও থাকেনা।
চোখের পানি মুছে তখনি শপথ করি, জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। মা-বাবার দুঃখ-কষ্ট দূর করবই। তারপর শপথ নিয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েরা মা বাবার স্বপ্ন পূরনের জন্য চলতে থাকে তখন সে ছিটকে পড়ে ঐ সব বড় লোকদের অবৈধ টাকার কারণে।
আমাদের মনে রাখতে হবে →
আজ সফল নই বলে যারা তোমাকে নিয়ে সমালোচনা করে, তুমি সফল হও একদিন তারাও তোমাকে ভালোবাসবে। – রেজাউল
জীবনে কষ্ট না করলে, সফল হওয়া যায় না।
-রেজাউল
আগে ক্যারিয়ার পরে প্রেম ভালবাসা!
– সংগৃহীত