অনেক দিন পর শ্রাবণ আজ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেছে। তার অনুভূতি জুড়ে খুব ভালো লাগা কাজ করছে। নিজের প্রিয় মানুষকে অনেক দিন পর দেখতে পাবে। পাশে বসে কথা বলতে পারবে। সেই আনন্দে শ্রাবণ সবকিছু গুছিয়ে মোনাকে দেখার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো। সাথে কিছু ফল নিয়েছে মোনার জন্য। ওদিকে মোনা অপেক্ষায় আছে কখন যাবে শ্রাবণ তার কাছে। মোনাও শ্রাবণকে দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে বসে আছে। প্রায় ত্রিশ মিনিট পেরোতেই শ্রাবণ পৌঁছে গেলো মোনাদের বাসায়। শুরুতেই মোনার আম্মুর সাথে দেখা হলো শ্রাবণের। অনেক দিন পর শ্রাবণকে দেখে মোনার আম্মু খুব খুশি হলো। একটু মন খারাপও করলো মোনার আম্মু। শ্রাবণ আগের মতো তার বাসায় আসে না বিধায়। সে যাক। মোনার আম্মু বাসার ভিতরে আসতে বললো শ্রাবণকে। সাথে সাথে শ্রাবণ রুমের ভিতরে প্রবেশ করলো।
কুশলাদি বিনিময় করার পর মোনার আম্মু মোনাকে ডাকতে গেলো। মোনা অন্য রুমে শুয়ে ইসলামি গান শুনছে। এটা তার অনেক প্রিয়। কলরবের সব শিল্পীদের ইসলামি গান শুনতে মোনা খুব ভালোবাসে। মায়ের মুখে শ্রাবণ আসছে শোনা মাত্রই মোনা ছুটে এলো শ্রাবণের কাছে। দু’জন দু’জনের দিকে কিছু সময় নীরব দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার পর কথা বলা শুরু করলো৷ কিছুদিন অসুস্থ থাকায় অনেকটা শুকিয়ে গেছে মোনা। চেহারাও ফ্যাকাশে হয়েছে। সুন্দর মুখখানি অনেকটা ম্লান হয়েছে। শ্রাবণ তা দেখে অবাক হলো। প্রিয় মানুষটার একি অবস্থা ! মনের অজান্তেই চোখ থেকে জল বেরিয়ে এলো। খুব কষ্ট পেলো। তারপর মোনা এখন পুরোপুরি সুস্থ আছে। কিছুদিন গেলেই সব ঠিক হবে। তেমন ভয় বা কষ্ট পাওয়ার কিছু নেই। প্রকৃতির নিয়মে মানুষ অসুস্থ হবে আবার সুস্থ হবে এটাই নিয়ম। অস্বাভাবিক কিছু নয়। ফলগুলো শ্রাবণ আগেই মোনার আম্মুর হাতে তুলে দিয়েছে। শ্রাবণের সাথে মোনা কথা বলার ফাঁকে মোনার আম্মু প্লেটে করে কিছু ফল কেটে এবং পানি নিয়ে এলো। খেতে দিলো মোনা এবং শ্রাবণকে। মোনা দেখেই বুঝতে পারলো এই ফল শ্রাবণ এনেছে। তারপর মোনার আম্মু সেখান থেকে চলে গেলো।
শ্রাবণ : তাহলে কেমন আছো আমার প্রিয় মানুষটা ?
মোনা : দেখতেই তো পারছো। তোমার কি অবস্থা বলো ?
শ্রাবণ : এইতো চলছে…। এই কয়েক দিনে তুমি অনেকটা শুকিয়ে গেছো।
মোনা : বেঁচে আছি এটাই বড় নিয়ামত। খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। কয়েক দিন খুব কষ্টে ছিলাম। মাইগ্রেনে প্রচণ্ড ব্যথা করতো।
শ্রাবণ : অথচ আমি এর কিছুই জানিনা। জানানোর প্রয়োজন বোধও করোনি। আজ এতোই পর হয়ে গেছি আমি। তোমার এই আচরণে আমি খুব অবাক হয়েছি বটে।
মোনা : তুমি শুধু শুধু রাগ করছো। যা হয়েছে ভুলে যাও। আমি ভুল স্বীকার করছি। এমনকি এর জন্য তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।
শ্রাবণ : তারপর বলো নতুন মানুষের সাথে দিন কাল কেমন কাটছে তোমার ?
মোনা : হসপিটালে তার সাথে প্রথম কথা হয়েছে। তখন সে আমার পাশেই ছিলো। খুব টেক কেয়ার করেছে। তার মনটা অনেক ভালো। দেখে মনে হলো খুব শান্ত প্রকৃতির একটা ছেলে।
শ্রাবণ : বাপরে একদিনেই তার এতো প্রশংসা ! অথচ এতো বছর সাথে থেকেও তোমার মুখে আমার প্রশংসা শুনতে পেলাম না। কি কপাল আমার তাই না !
মোনা : আরে তুমি রাগ করছো কেন ? যাও কিছুই বলবো না। তুমি খালি রাগ করো…
শ্রাবণ : ওকে বলো তুমি। আর রাগ করবো না। তারপর কি হয়েছে বলো…
মোনা : ওইতো অসুস্থ হলে রোগীর পাশে থেকে যা যা করতে হয় তাই করেছে।
শ্রাবণ : পাশে বসে তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়নি ?
মোনা : হুমমম তা দিয়েছে।
শ্রাবণ : তার কোলে তোমার মাথা রাখতে দেয়নি ?
মোনা : এবার কিন্তু একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে…
শ্রাবণ : কি বেশি হলো শুনি !
মোনা : না কিছু না। বাদ দাও ওসব। এবার আমাদের কথা বলি। অনেক দিন কোথাও ঘুরতে যাই না। চলো কোথাও ঘুরতে যাই। বদ্ধ ঘরে থাকতে থাকতে মনটা অনেক বোরিং হয়েছে। কোথাও ঘুরে মনটা ভালো করতে চাই।
শ্রাবণ : কোথায় গেলে তোমার মন ভালো হবে বলো ?
মোনা : একটা জায়গায় যেতে আমার বারবার মন টানে। সেটা হলো যমুনা নদীর পাড়ে দাড়িয়ে মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে। চলো অনেক দিন যাওয়া হয় না।
শ্রাবণ : ওকে তাই চলো…
মোনা : দাঁড়াও আমি একটু রেডি হয়ে আসি।
শ্রাবণ : ওকে।
তারপর মোনা জামা কাপড় পরিবর্তন করলো। অনেক দিন পর লাল রঙের ব্লাউজ এবং শাড়ি পরলো। খুব সুন্দর করে সাজ-গোছ করে নিলো। কপালে কালো টিপ এবং ঠোঁটের উপর হালকা লিপস্টিক লাগিয়েছে লাল রঙের। লম্বা চুলগুলো খোলাই রাখলো। সবকিছু শেষে সামনে যেতেই মোনাকে দেখে ভীষণ অবাক হলো শ্রাবণ।
শ্রাবণ : বাপরে এ আমি কাকে দেখছি !
মোনা : কেন চিনতে পারছো না !
শ্রাবণ : মোটেও না। সাক্ষাৎ পরী আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
মোনা : এতো ঢং দেখাতে হবে না। এবার চলো আমার হয়েছে।
শ্রাবণ : ওকে চলো। হাতটা আমার হাতে দাও…
মোনা : এখনি না। বাসা থেকে বের হয়ে নেই আগে। বাসার কেউ দেখলে রাগ করবে। তাড়াছা আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে এই মুহূর্তে তোমার হাত ধরে হাঁটলে লোকে খারাপ ভাববে। হাত ধরার সুযোগ দিবোনি চলো।
শ্রাবণ : ওকে চলো…
মোনার বাসার কাছেই যমুনা নদী। ত্রিশ মিনিট হাঁটার পরেই তারা যমুনা নদীর কাছে এলো। চলার পথে তারা অনেক খুনসুটি করলো। মোনার হাত এবার শ্রাবণের হাতে রেখেছে। অন্য রকম ভালো লাগায় তারা মজে আছে। পৃথিবীর সব সুখ বুঝি তাদের মাঝে বিরাজ করছে। অথচ এই সুখটা আজো বুঝতে পারেনি মোনা। অন্য খাঁচায় বাসা বাঁধতে যাচ্ছে। নদী এখন শুকিয়ে গেছে। দিগন্ত জুড়ে খালি বালির স্তুপ। তেমন নৌকা চলে না। কয়েক জন জেলে দূরের অববাহিকায় জাল দিয়ে মাছ ধরছে। পাশেই ছোট ছেলেরা ধূলি চরে ফুটবল খেলছে। এতে করে ছেলেগুলো অনেক আনন্দ করছে। বছরের বেশির ভাগ সময় এখন যমুনা নদী শুকনো থাকে। একটা সময় সারা বছর পানি থাকতাে নদী ভর্তি। অথচ সময়ের পরিবর্তনে নদীও তার চিরচেনা রূপ হারাতে বসেছে। ওই বর্ষাকালে কিছু সময় নদী ভর্তি পানি থাকে। তাছাড়া বাকি সময় শুকিয়ে থাকে যমুনা নদী। দিকে দিকে শুধু ছোট ছোট চর আর চর। সেই নদীতে বেড়াতে এসেছে শ্রাবণ এবং মোনা।
মোনা : কিছু দিন আগেও নদী ভর্তি পানি ছিলো। অথচ নদী এখন পুরোপুরি শুকনো।
শ্রাবণ : হুমমম তুমি ঠিক বলেছো। নদী তার খরস্রোতা হারিয়ে ফেলেছে। একটা সময় এই নদী অনেক ভয়ানক ছিলো। কতো মানুষ যে ফতুর হয়েছে এই নদীর ভাঙনে তা হিসেবে করে বলা যাবে না। ফসলি জমিও ভেঙে গেছে। নদী পাড়ের মানুষের এই এক কষ্ট। প্রতি বছর নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে ফসলি জমি।
মোনা : তুমি যাই বলো এই ধূলি চরে যমুনা নদীর বুকে হাঁটতে আমার খুব ভালো লাগছে। ইচ্ছে করছে গায়ে মেখে নেই এই ধূলি। মজার ব্যাপার হলো এই ধূলিতে সারা দিন শুয়ে থাকলেও জামা কাপড়ে ময়লা লাগবে না। কাপড় ঝাঁকি দিলেই সব ধূলি উড়ে যাবে। কতো সুন্দর এই নদীর অববাহিকা।
শ্রাবণ : তা ঠিক বলেছো। নদীর বুকে হেঁটে চলায় অন্যরকম একটা আনন্দ আছে৷ যা শহরের বুকে পাওয়া যায় না। নদী পাড়ের মুক্ত বাতাস অনেক বিশুদ্ধ। প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নেওয়া যায়। এখানে এলে সময় খুব দ্রুত চলে যায়। আর পাশে যদি তোমার মতো সুন্দরী কেউ থাকে তাহলে তো কথাই নাই।
মোনা : কবি মানুষ তো তাই কথায় কথায় সুন্দরের প্রশংসা করতে পারো। কোথা থেকে যে এতো শিখেছো তুমি !
শ্রাবণ : আমার জীবনে বেশি কথা শিখেছি তোমার মাধ্যমে।
মোনা : কি বলো !
শ্রাবণ : হুমমম সত্যি বলছি…
মোনা : সেটা কিভাবে ?
শ্রাবণ : এই যে তোমাকে নিয়ে এতো এতো গল্প/কবিতা লিখেছি এখান থেকেই। তুমি আমার জীবনে না এলে এতো গল্প/কবিতা কোনোদিন আমি লিখতে পারতাম না৷
মোনা : কিন্তু আমার তো কোনো বিশেষ গুণ নেই। তবুও কিভাবে…
শ্রাবণ : তোমার সবকিছু আমার ভালো লাগে। তোমার সাথে চলতে ভালো লাগে। তুমি পাশে থাকলে সময়টা খুব ভালো কাটে। সব কষ্ট ভুলে যাই তুমি পাশে থাকলে। জানিনা তোমার সাথে আর কতোদিন থাকতে পারবো । তোমার বিয়ে হয়ে গেলে একা থাকতে অনেক কষ্ট হবে আমার। কিছুই করতে মন চাবে না।
মোনা : টেনশনের কিছু নেই। বিয়ের পরেও তোমার সাথে আমার এই সম্পর্ক থাকবে। তোমাকে আমি কোনোদিন ভুলতে পারবো না। বিয়ের পর বাবার বাড়ি বেড়াতে এলেই তোমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবো।
শ্রাবণ : সে দেখা যাবে। আজ তো অনেক ঘুরলাম যমুনার বুক জুড়ে। বাসায় কি যাওয়া লাগবে না ?
মোনা : কি বাসা বাসা করছো ! অনেক দেরি আছে বাসায় যাওয়া । আমার এখনো ঘুরে মন ভরেনি। মন ভরবে তারপর যাবো।
শ্রাবণ : ধূলি চরে ঘুরে তোমার চেহারা কি হয়েছে দেখেছো ?
মোনা : আমার কিচ্ছু দেখতে হবে না। ঘুরতে এসেছি ঘুরবো।
শ্রাবণ : ঠিক আছে মহারাণী !
মোনা : কিন্তু আমিতো তা নই।
শ্রাবণ : আমার কাছে তুমি তার থেকেও বেশি কিছু।
মোনা : আমাকে তুমি এতো বেশি ভালোবাসতে গেলে কেন ? আমাকে ভালোবেসে কি তুমি ক্লান্ত হওনা ?
শ্রাবণ : এতো প্রশ্ন এক সাথে করলে উত্তর দিবে কেমনে ? যাইহোক ; সহজ করে বলতে গেলে আমার জন্মই হয়েছে তোমাকে ভালোবাসার জন্য। কাছে পাবো না তাতেও কোনো দুঃখ নেই আমার। তোমাকে মন ভরে ভালোবাসতে পেরেছি এটাই অনেক আনন্দ আমার কাছে। আমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে তোমার উপস্থিতি টের পাই। ভীষণ ভালোবাসি তোমাকে।
মোনা : কেন যে তোমার ভালোবাসা আমি বুঝলাম না ! মাঝে মাঝে আমি ভেবে পাই না।
শ্রাবণ : বাদ দাও ওসব কথা। আমার কপাল খারাপ। তাই হাসি মুখে সব মেনে নিয়েছি।
মোনা : হুমমম তাছাড়া তো কোনো উপায় নেই।
শ্রাবণ : তুমি আমার প্রেমিকা হলে হাতে আর কপালে এখন চুমু খেতাম !
মোনা : খবরদার এসব পচা কথা আর কখনো বলবে না। ওসব আমার একদম পছন্দ হয় না।
শ্রাবণ : কি বলো ! বিয়ের পর জামাইকেও কি চুমু খেতে দিবে না ?
মোনা : এবার কিন্তু বেশি কথা বলছো। বাদ দিতে বলছি না ওসব !
শ্রাবণ : এতো রাগ কই থাকে শুনি !
মোনা : আমার কোনো রাগ নেই। তবে ওসব কথা শুনলে অনেক রাগ হয় আমার। যা বলছো বলছো। আর কখনো বলবে না। ঘুরতে এসেছি ভদ্র ছেলের মতো আচরণ করবে। একদম আজেবাজে কথা বলবে না। মনে থাকে যেন।
শ্রাবণ : ওকে মহারাণী !
মোনা : এই দেখো হাঁটতে হাঁটতে জুতো ছিঁড়ে গেলো। এবার কি হবে ?
শ্রাবণ : সমস্যা নেই আমার জুতো পায়ে দাও।
মোনা : লাগবে না। খালি পায়েই হাঁটবো। ধূলি চরে খালি পায়ে হাঁটাও কম আনন্দের না। একটা জুতো যেহেতু ছিঁড়েই গেলো তাহলে অন্যটা পায়ে রেখে কি হবে। ফেলে দিয়ে যাই।
শ্রাবণ : ফেলে দিওনা আমাকে দাও।
মোনা : তুমি ছেঁড়া জুতো দিয়ে কি করবে ?
শ্রাবণ : আমার কাছে রেখে দিবো তোমার স্মৃতি স্বরূপ !
মোনা : এটা কোনো কথা !
শ্রাবণ : প্লিজ দাও।
মোনা : কি অদ্ভুত মানুষ যে তুমি !
শ্রাবণ : তুমি যা মনে করো তাই…
মোনা : ঠিক আছে তুমি যা ভালো মনে করো।
শ্রাবণ : ওকে। চলো ওই যে একটা ছৈওয়ালা নৌকা দেখা যাচ্ছে ওখানি গিয়ে বসি। খুব রোদ লাগছে আমার।
মোনা : কি বলো শীতকালে রোদই তো ভালো। বিনা টাকায় ভিটামিন ডি পাচ্ছি। তুমিতো জানো সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি আছে তাহলে !
শ্রাবণ : সে থাক। এখন আমার খুব গরম লাগছে।
মোনা : তাহলে আর কি চলো যাওয়া যাকে সেখানে।
শ্রাবণ : হাত দাও আমার হাতে…
মোনা : সারাদিন তো আমার হাত ধরেই হাঁটলে এবার না হয় একাই হাঁটলে !
শ্রাবণ : তোমার হাত না ধরে আমি এক কদমও হাঁটবো না।
মোনা : কি নাছোড়বান্দারে বাবা !
শ্রাবণ : ঠিকই আছে।
মোনা : কচু আছে। ঠিক আছে দিলাম হাত এবার তাহলে চলো।
শ্রাবণ : ওকে চলো।
মোনা : এতো জেদি কেন তুমি বলো তো ?
শ্রাবণ : কই না তো…
মোনা : আমার ব্যাগে কিছু শুকনো খাবার আছে। নৌকায় বসে খাবো দু’জনে।
শ্রাবণ : সেটা আগে বলবে না। চলো আমার খুব ক্ষুধা পেয়েছে। খাবো চলো।
মোনা : আমারো একই অবস্থা !
শ্রাবণ : তাহলে তো ভালোই হলো। আমি কিন্তু বেশি খাবো। আমার বেশি ক্ষুধা লাগছে।
মোনা : হা হা হা…ওকে ঠিক আছে। এইতো এসে পড়েছি নৌকার কাছে। তুুমি আগে উঠো নৌকায়। তারপর আমি উঠছি।
শ্রাবণ : ওকে। হুমমম উঠছি আমি। তোমার হাত দাও।
মোনা : এই নাও। হুমমম উঠছি…
শ্রাবণ : চলো ছৈএর ভিতরে গিয়ে বসি।
মোনা : আচ্ছা চলো।
শ্রাবণ : আমার খুব ক্লান্তি লাগছে। তুমি বসো তোমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়বো।
মোনা : সরি এটা পারবো না। মাচাল পরিস্কার আছে এমনিতেই শুতে পারবে। তাছাড়া বাঁশের খুঁটিতে হেলান দিয়েও শুতে পারবে।
শ্রাবণ : আচ্ছা লাগবে না। খাবার বের করো খেয়ে নেই আগে।
মোনা : বের করছি দাড়াও। হুমমম এই নাও।
শ্রাবণ : ওহহহ আমার মজার খাবার আনছো ! খেজুর আমার খুব প্রিয়।
মোনা : আমারো খুব প্রিয়। সবসময় রাখি আমার কাছেই। মন চাইলেই খাই। এটা স্বাস্থ্যের পক্ষেও অনেক উপকারী।
শ্রাবণ : হুমমম। একটু পর বাসায় যাবো।
মোনা : ঠিক আছে। আগে খাওয়া শেষ করে একটু বিশ্রাম করে নেই। তারপর বাসায় যাওয়া যাবে।
শ্রাবণ : তবে যাই বলো আমার খুব ভালো লেগেছে আজকের ঘোরাঘুরি।
মোনা : আমি না থাকলে আর ভালো লাগতো না। সত্যি বলছি না !
শ্রাবণ : বোঝই তো !
মোনা : হা হা হা…।
শ্রাবণ : খাওয়া শেষ করে দু’জনে একসাথে অনেকগুলো ছবি উঠবো মোবাইলে। যে ছবি ছবিগুলো আমাদের স্মৃতি হয়ল থাকবে।
মোনা : আচ্ছা ঠিক আছে। তাই হবে।
(চলবে..)