1. admin@ichchashakti.com : admin :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

ভালোবাসার এক অনন্য গল্প — জাকির আলম 

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ১২৫ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

ভালোবাসার এক অনন্য গল্প

জাকির আলম 

 

সময়টা ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ । সবেমাত্র আমি মাধ্যমিক পাস করে উচ্চ মাধ্যমিকে সরকারি এক কলেজে ভর্তি হয়েছি। ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি আমার প্রবল ঝোঁক ছিলো। বিভিন্ন লেখকের গল্প, উপন্যাস এবং কবিতার বই পড়তে পড়তে আমার ভেতরও লেখালেখি করার ভীষণ ইচ্ছে জাগে। ধীরে ধীরে সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করার লক্ষ্যে সেই সময় যা মাথায় আসে তাই ডায়েরির পাতায় লিখে ফেলি। বিশেষ করে কবিতার মতো করে কিছু লিখতে থাকি মুক্ত মনে। যা লিখি সেগুলো আদৌ কবিতা হয়ে উঠছে কিনা জানা ছিলো না। শুধু মনের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়েই ক্রমাগত লিখতে থাকি। লিখতে লিখতে একসময় লেখক হওয়ার প্রতি বাসনা জাগে। সময় এবং সুযোগ পেলেই লিখতে থাকি মনে যা আসে তাই। লিখতে লিখতে কয়েকটি ডায়েরির পাতা ভরে গেলো। এভাবে লিখতে লিখতে সাহিত্যের প্রতি ক্রমশ দুর্বল হতে থাকি। ইতোমধ্যে ক্ষুধে লেখক হিসেবে কিছু মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছি। সে সময় যা লিখি তা পড়ে অনেকে বাহবা দেয়। অনেকে আবার টিটকারি করতেও ভুল করে না।

 

সেদিকে আর না যাই। ছোটবেলা থেকেই বাংলাদেশ বেতার শোনার অভ্যাস ছিলো। নিয়মিত শোনা হতো বেতার থেকে প্রচারিত প্রায় সব অনুষ্ঠান। সে সময় আমার কোনো মুঠোফোন ছিলো না। তাই একমাত্র বেতার শোনার সুযোগ ছিলো ওই সময়।  বাংলাদেশ বেতার থেকে  যে অনুষ্ঠানগুলো বেশি ভালো লাগতো সেগুলো শুনতে কখনো মিস করতাম না। যেখানেই যাই সাথে রেডিও নিয়ে যেতাম। কাজের ফাঁকেও রেডিও শুনতাম নিয়মিত। বেতার থেকে প্রচারিত সাহিত্য বিষয়ে অনুষ্ঠানগুলো কখনোই মিস করতাম না। সে সময় রেডিও আমার একমাত্র সাথী ছিলো। বেতার শুনতে শুনতে অনেক কিছু আমার জানা হয়েছিলো। একসময় বেতারে লেখা পাঠাতে ইচ্ছে হতে থাকে। তখন ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে সাহস নিয়ে একটা প্রেমের চিঠি ডাকযোগে পাঠিয়ে দিলাম। প্রায় এক মাস অপেক্ষার পর চিঠিটা প্রচারিত হলে ভীষণ ভালো লাগায় মন ভরে গেল। উপস্থাপক লেখার খুব প্রশংসা করলেন। সে সময় যিনি উপস্থাপক ছিলেন সে আজ বেঁচে নেই। মহান আল্লাহ পাক তাকে জান্নাতবাসী করুন আমিন।

 

তিনি আমার খুব প্রিয় একজন উপস্থাপক ছিলেন। এরপর থেকে ক্রমাগত লিখতেই থাকি। এবার আসি ইতোমধ্যে জীবনে আসা এক ভালোলাগা মানুষের কথায়। সবেমাত্র জীবনে বসন্ত আসতে শুরু করেছে। তখন চারদিকে যা দেখি তাই ভালো লাগে। বিশেষ করে প্রকৃতির নান্দনিক রূপ আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগতে থাকে। তখন মনের খেয়ালে লিখে যাই মনের মানুষকে অবলম্বন করে লেখা কবিতা এবং চিঠি। তাকে নিয়ে লিখতে লিখতে ডায়েরির পাতা শেষ করে ফেলি। কিন্তু সাহস করে তাকে বলতে পারিনি ভালোলাগা ভালোবাসার কথা। তাকে দেখলে ভীষণ লজ্জা পাই। বলতে গেলে দেখামাত্র বুকের ভিতর যেন কাল বৈশাখী ঝড় উঠে। এভাবে চলতে থাকে বেশ কিছু দিন। তারপর সিদ্ধান্ত নিলাম যেভাবেই হোক তাকে বিষয়টা জানাতেই হবে। মেয়েটা আমার দুই বছরের জুনিয়র ছিলো। যেখান থেকে আমি মাধ্যমিক পাস করেছি সেখানেই সে পড়ালেখা করতো। মুখোমুখি হয়ে তার সাথে কোনোদিন কথা হয়নি। সে কখনো বুঝতো না আমি তাকে পছন্দ করি। তাকে কখনো বুঝতেও দেইনি। তো সময় না নিয়ে তাকে একদিন তার সাথে পড়ুয়া এক সহপাঠিনীর কাছে কবিতা ভরা চিঠি হলুদ খামে পাঠিয়ে দিলাম।

 

হঠাৎ করে চিঠি পেয়ে মেয়েটা এক প্রকার অবাক হয়ে যায়। যার সাথে কোনোদিন কথা হয়নি তার প্রেমপত্র পেলে অবাক হওয়াটাই স্বাভাবিক। যদিও প্রেমপত্রটা সে নিতে চায়নি। কিন্তু অনেকের জোরাজোরিতে সে নিতে বাধ্য হয়েছিলো। যার কাছে প্রেমপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলাম তার কাছে জানতে চাই চিঠি পেয়ে সে কি বললো। সে তখন সবকিছু খুলে বললো। তারপর আমি অনেক আগ্রহ নিয়ে একের পর এক প্রেমপত্র পাঠাতে থাকি বিভিন্ন জনের আদলে। সে নিতে থাকে একের পর এক চিঠি। জানিনা সে চিঠিগুলো সে আদৌ পড়ে, নাকি না পড়েই ফেলে দেয়। সে যাই করুক আমি তাকে চিঠি পাঠাতে ভুল করিনা। এভাবেই চলতে থাকে অনেক দিন। কিন্তু আমি বুঝতে পারিনা সে আমাকে আদৌ পছন্দ করে কিনা।  তারপর একদিন হলুদ খামে চিঠির সাথে একটা সাদা পাতা ভরে দেই সেই সাদা পাতা ভরে লিখে দেওয়ার জন্য। তো একদিন দেখি সে যথারীতি সত্যিই লিখে পাঠিয়েছে সেই সাদা পাতা ভর্তি লেখা। তার লেখার ভাষা তেমন মার্জিত ছিলো না। বলতে গেলে অগোছালো ছিলো সেই লেখা। বিশেষ করে সেই চিঠির লেখায় এক প্রকার বিরক্তি এবং অবহেলার ছাপ স্পষ্ট ছিলো। তবুও আমি অনেক যত্ন করে পড়ে নিয়েছিলাম সেই লেখা।

 

সেই চিঠি এখনো আমি খুব যত্ন করে আমার সংগ্রহে রেখে দিয়েছি। চিঠিতে বেশ আশা ব্যঞ্জক কথা ছিলো। আশার কথা হলো সে আমাকে ভালোবাসতে না পারলেও সারাজীবন বন্ধু হয়েই পাশে থাকবে। আমিও নাছোড়বান্দা। তাকে ধরেছি তো ধরেছি। নিয়ম করেই তাকে চিঠি লিখতে থাকি। এভাবে চলতে চলতে সে যখন মাধ্যমিকে বোর্ড পরীক্ষা দেয় তার কোনো একদিন তাকে সরাসরি ফোন দেই। সেই দিনটা ছিলো ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ছিলো সেদিন। সেদিনও তার পরীক্ষা ছিলো। বিকেল টাইমে তাকে মনের শঙ্কা কাটিয়ে ফোন দেই। ফোনে সে আমাকে প্রথমে চিনতে না পারলেও পরিচয় দিলে চিনে। একপ্রকার অবহেলার সাথে সে কথা বলতে থাকে। আমার কথায় তার কোনো আগ্রহ দেখিনি। একরাশ বিরক্ত নিয়েই প্রায় বিশ মিনিটের মতো সে আমার সাথে কথা বললো। ফোনে আমি যাই বলি তাই সে অবহেলা করে উড়িয়ে দেয়।

 

তবুও তার প্রতি আমার কোনো বিরক্তি ভাব বা অবহেলা প্রকাশ পায়নি। তার প্রতি আমি প্রবল দুর্বল হওয়ায় তার কথায় তেমন কোনো কষ্ট পেলাম না। বরং তার সবকিছু উপভোগ করে এক সময় ফোন কেটে দিলাম। এরপর একের পর এক ফোন আর মেসেজ পাঠাতে থাকি তার ফোনে। তা পড়ে সে ভীষণ বিরক্ত হয়। তখন পর্যন্তও সে বুঝতে পারেনি তাকে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমার সবকিছু সে বিরক্ত হিসেবে নিত। আমিও দমে যাওয়ার পাত্র না। ধৈর্য সহকারে তার পিছে লেগে থাকি। এভাবে ফোন এবং মেসেজে তার সাথে কথাবলি। একটা সময় তাকে কাছে পাওয়ার আশা বাদ দিলাম। কারণ তাকে বোঝার মতো শক্তি বা জ্ঞান আমার ছিলো না ওই সময় বা বয়সে। একপ্রকার বিরক্ত হয়ে গেলাম তার উপর। সে এতোটাই চাপা প্রকৃতির ছিলো যে, দশটা কথা বললে একটা কথার জবাব দিতো। বাকি নয়টা কথা সে এড়িয়ে যেত। এভাবেই সে আমার উপর বিরক্ত ছিলো।

 

এভাবে চলতে থাকলে একসময় তার সাথে যোগাযোগ করা বন্ধ করে দেই। সেও আর আমাকে কখনো নক করেনি। এভাবে অনেক দিন চলতে থাকে। তাকে মন থেকে একেবারে মুছে দিতে পারিনি। তাই কবিতার মাঝে তাকে বাঁচিয়ে রাখি। তাকে নিয়ে গল্প এবং কবিতা লিখতে থাকি। তারপর পত্রিকার পাতায় আমার লেখা ছাপা হতে থাকে। কিন্তু সেই কথা আমিনা জানে না। এতোক্ষণ যার কথা বলছিলাম তার নাম আমিনা। তার বাসা আমার পাশের এলাকায়। তো বিভিন্ন সময় আমিনাকে কেন্দ্র করে লেখা কবিতা পত্রিকায় প্রকাশ হতে থাকে। প্রকাশ হতে হতে চারপাশে আমার লেখক নাম ছড়িয়ে পড়ে। লেখালেখির সুবাদে বিভিন্ন জায়গায় সাহিত্য অনুষ্ঠানে যাওয়ার সুযোগ হয়। এমনকি পুরস্কারও পেয়ে যাই অনেকগুলো। এভাবে চলতে থাকলে আমার লেখা পাঠকের অনুরোধে কবিতার বই প্রকাশ করতে যাই। একসময় তা প্রকাশ হয়েও যায়। যার নাম দেই ‘যেখানে বসন্ত তোমার’। প্রকাশের সাথে সাথে বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন বার্তা পাঠাতে থাকে।

 

আমিও আনন্দ মনে তা অনুমোদন করি। সকলের উৎসাহে লেখালেখি চালিয়ে যেতে থাকি। তারপর কোনো এক সন্ধ্যার পর জীবনের প্রথম সবচেয়ে আনন্দের খবর ফোনে মেসেজের মাধ্যমে আসে। আমার পাশের বাড়ির এক ছোট ভাই মেসেজের মধ্যে জানিয়ে দেয় আমিনা নাকি আমার সাথে কথা বলতে চায়। সে আমার নাম্বার চেয়েছে আমার অনুমতি সাপেক্ষে। সাথে সাথে খুশি মনে তাকে আমার ফোন নাম্বার দিতে বলি। সে আমার কথা মতো তাকে ফোন নাম্বার দেয়। পরে জানতে পারি আমার প্রকাশিত বই দেখে আমিনা আমার সাথে কথা বলার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলো। প্রকাশিত বইয়ের পরতে পরতে আমিনার নাম ছিলো। তাকে উৎসর্গ করেই বইটা প্রকাশ করেছিলাম। বিভিন্ন সময় তাকে পাঠানো কবিতা থেকে বাছাই করে চার ফর্মার সেই কবিতার বই বের করেছিলাম। তার প্রতি আমি ভীষণ ভাবে কৃতজ্ঞ যে, সে আমার জীবনে না এলে আমার লেখালেখি কখনো পূর্ণতা পেত না। তাকে কথা দিয়েছিলাম আমার লেখার মাধ্যমে তাকে বাঁচিয়ে রাখবো। আমি তাকে দেওয়া কথা রাখতে পেরেছিলাম। তার জন্যই আজও আমি অনবরত লিখে চলেছি।আমার সাহিত্যের কেন্দ্রবিন্দু একমাত্র আমিনা। ওর জন্য আমি ছোটখাটো একজন লেখক হতে পেরেছি।

 

আমিনাকে দেওয়া কথা রাখতে ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে’ অনার্স-মাস্টার্স করেছি। যাতে সাহিত্যের নিয়ম মেনে লিখতে পারি। তো আমিনা আমার নাম্বার নেওয়ার পর অপেক্ষায় থাকি কখন ওর ফোন আসবে। দিন যায়, রাত যায় আমার সেই অপেক্ষার প্রহর আর শেষ হতে চায় না। সময়টা ছিলো ২০১৮ সালের রমজান মাসের শেষ দিন। অর্থাৎ রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল ফেতর। রমজানের শেষ দিন ইফতারের পর আমিনার ফোনে মেসেজ দেই। মেসেজ দেওয়ার সাথে সাথে রিপ্লেই আসে। এভাবে তার সাথে পুনরায় কথা বলা শুরু হয়। এবার কি তাহলে তার সাথে সত্যিই আমার ভালোবাসার সম্পর্ক হতে যাচ্ছে ? অতঃপর মেসেজে কথার ফাঁকে আমিনা ঈদের দাওয়াত করলো ওর বাড়িতে যাওয়ার জন্য। ওর দাওয়াত গ্রহণ করে ঈদের দিন রাতে ওর বাড়িতে গেলাম। ওর বাড়িতে গিয়ে ওর সাথে বেশি কথা বলার সুযোগ হয়নি। সেমাই এবং মাংস-খিচুড়ি খেয়ে ওর বাড়ি থেকে চলে আসলাম। আামার সাথে দু’জন লোক নিয়ে গিয়েছিলাম। এভাবে কথা বলতে বলতে আমিনার সাথে আমার গভীর প্রেম হয়ে যায়। এদিকে প্রতিদিন প্রায় ওর বিয়ের সম্বন্ধ আসে। বিয়ের বয়স হয়েছে। বিশেষ করে গ্রামের মেয়েদের বয়স হওয়ার আগেই বাবা-মা ভালো ছেলে পেলে বিয়ে দিয়ে দেন। সেই তুলনায় আমিনারও বিয়ের বয়স হয়েছে। তো আমাকেও ভালোবাসে তাই আমিনা বারবার আমার বাড়ি থেকে লোক পাঠাতে বলে বিয়ে ঠিক করার জন্য।

 

এদিকে আমি তখন অনার্সে পড়ুয়া একজন ছাত্র। এমতাবস্থায় বিয়ে করাটা আমার পক্ষে কতোটা পসিবল প্রিয় পাঠক আপনাই ভালো বুঝতে পারবেন। আমার পরিবার একটি মধ্যবিত্ত পরিবার। আমার তিন ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে আমার বাবার হিমশিম খেতে হয়। এছাড়া আমার বড় ভাই তখনো বিয়ে করেনি। সেও তখন শিক্ষার্থী। এমন সময় কি করবো বুঝে উঠতে না পেরে ব্যাপারটা আমার মাকে জানাই সাহস নিয়ে লজ্জা-শরম কাটিয়ে। মাকে বলে কোনো রকম রাজি করতে পারলাম। কিন্তু বাবাকে বলার মতো সাহস আমার ছিলো না। মা- ই বাবার কাছে আমার ব্যাপারটা শেয়ার করেছিলো। বাবাও রাজি হয়েছিলো আমার মুখের দিকে চেয়ে। তো একদিন আমিনার বাড়িতে আমার মা আর বড় বোন বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে গেলে আমিনার বাড়ির কারো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। সেজন্য তারা এক প্রকার মন খারাপ করে এবং অপমান বোধ করে বাড়ি চলে আসে।

 

মোট কথা আমিনার বাড়ির লোকজন আমার সাথে ওকে বিয়ে দিবে না সে সময় আমি বেকার ছিলাম তাই। কিন্তু আমিনাকে আমি জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। ওকে ছাড়া এক মুহূর্তও বেঁচে থাকাটা আমার জন্য ভীষণ কষ্টের। ওদিকে আমিনাও আমাকে ভীষণ ভালোবাসে। আমাকে ছাড়া সেও অসহায়। তারপর আমাদের মন ভাঙ্গার গল্প শুরু হলো। আমিনার বিয়ে ঠিক হলো। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি, রোজ রবিবার আমিনার বাড়ির লোকজনের প্রিয় পাত্রের সাথে আমিনার বিয়ে ঠিক হয়। যথারীতে ২৩ জানুয়ারি রোজ বৃহস্পতিবার ওর বিয়ে হয়ে যায়। আমার জীবনে তখন অন্ধকার নেমে আসে। বিষণ্নতায় ঢেকে যায় আমার মনের জগৎ। তখন সেই বিষণ্নতা কাটিয়ে উঠতে আমার বহুদিন লেগেছিলো। এখনো আমিনাকে হারানোর কষ্ট বুকের বা পাশে অনুভব করি। আমিনাকে না পেলেও আমি ওর প্রতি ভীষণ কৃতজ্ঞতা পোষণ করি। কেননা সে আমার জীবনে না এলে আমি কোনোদিন লেখক হতে পারতাম না। ওর বিশেষ অবদানে আমি দু’কলম লেখার যোগ্যতা অর্জন করেছিলাম। দেরিতে হলেও সে আমার ভালোবাসা মূল্যায়ন করেছিলো। শেষ পর্যন্ত আমার ভালোবাসায় আমিনা সাড়া দিয়েছিলো। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমিনাকে আমি পাইনি। আমিনা যেখানে থাক ভালো থাক। ওর প্রতি আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞতা পোষণ করে আমার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করতে চাই।

 

আমার জীবনে ওর অবস্থান সবচেয়ে উপরে। কোনোদিন তাকে আমি ভুলতে পারবো না। আমার লেখার জগতে তাকে চির অক্ষয় কর রাখবো। ওর একবিন্দু ভালোবাসার শক্তি আমাকে লক্ষ জনম বাঁচার অনুপ্রেরণা জাগিয়েছে। দূর থেকেই আমিনাকে আমি আমৃত্যু ভালোবেসে যাবো। আমিনাকে আমি ভুলতে পারিনা। ভোলা যায় না তাকে। আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে আমিনাকে আমি খুব মিস করছি। ভাবনার জগতে ভেসে উঠছে তার স্মৃতি। এস্মৃতি কষ্টের নাকি সুখের তা বুঝে উঠতে পারিনা। শুধু জানি আমিনাকে আমিনা ভীষণ ভালোবাসি। ওকে ছাড়া বড্ড নিঃসঙ্গ আমি। তবুও আমিনারা ভালো থাক ওদের সাজানো ভুবনে।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park