মীর ফয়সাল নোমান
“তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাও। তোমার মুখ যেন কোনোদিন আমার সামনে না পড়ে,”—রিয়ার শেষ কথাগুলো রফিকের কানে বিদ্যুতের মতো বাজে। তার হৃদয়ে গভীর আঘাত লাগে। রফিক অনুভব করে, ভালোবাসার গভীরতা বোঝার আগেই যেন সব শেষ হয়ে গেছে।
রফিক সিদ্ধান্ত নেয়, জীবনে আর কোনোদিন প্রেম করবে না। রিয়ার স্মৃতিগুলো ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু তা সহজ নয়। তার জীবনে যেন এক শূন্যতা নেমে আসে। এরই মধ্যে একদিন গ্রাম থেকে ফোন আসে।
রফিকের বাবা ফোনে জানতে চান, “তোর রেজাল্ট কী হলো?” রফিক লজ্জায় মাথা নিচু করে। বহুবার জিজ্ঞেস করার পর সে বলতে বাধ্য হয়, “আমি ফেল করেছি, বাবা। অতিরিক্ত প্রাইভেট পড়ানোর চাপ, মানসিক অবস্থা—সব মিলিয়ে আমি ঠিকমতো পড়তে পারিনি।”
এই কথা শুনে তার বাবা কিছুক্ষণ চুপ থাকেন। পরে তিনি বলেন, “ফেল করা মানেই শেষ হয়ে যাওয়া নয়। নতুন করে শুরু কর। আমরা তোকে নিয়েই গর্ব করতে চাই।”
রফিক গ্রামে ফিরে আসে। বাবার সামনে সব সত্যি কথা খুলে বলে। সে প্রতিজ্ঞা করে, এবার সে মন দিয়ে পড়বে। আর কখনো নিজের লক্ষ্যে থেকে সরে আসবে না।
গ্রামে ফিরে রফিক এক অন্যরকম শান্তি খুঁজে পায়। সে প্রকৃতির মাঝে নতুন উদ্যমে পড়াশোনা শুরু করে। সময় আসে পরীক্ষার। এবার সে সঠিক প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দেয়। ফল প্রকাশের দিন সবাই অবাক হয়ে দেখে, রফিক বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
যে ছেলে একসময় ফেল করেছিল, সে আজ তার মেধা দিয়ে প্রমাণ করেছে, হার না মানার মানসিকতা মানুষকে কতদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। তার এই সাফল্যে শুধু পরিবারের নয়, পুরো গ্রামের গর্ব হয়।