প্রতিবেদকঃ শেখ জিল্লুর রহমান স্বপন। বরিশাল।
অব্যবস্থাপনা ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় পণ্ড হয়ে গেছে বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের শিরোপা জয়ের উৎসব। লাখো মানুষের ভিড়ে চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালান ক্রীড়ামোদীরা। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে ওঠায় সংবর্ধনা না নিয়েই মঞ্চ ছাড়েন ক্রিকেটাররা। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বরিশাল বেলস পার্কে এ ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের ১১তম আসরে চ্যাম্পিয়ন দল ফরচুন বরিশালের খেলোয়াড়রা জোড়া ট্রফি নিয়ে বরিশালে আসছেন—এমন খবরে নগরীর বেলস পার্কে জড়ো হন লক্ষাধিক ক্রিড়াপ্রেমী। উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভাগের ছয় জেলা থেকে ভক্তরা বিজয়ী দলের জার্সি ও ক্যাপ পড়ে হাজির হন। তারা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে নাচ-গানে মেতে ওঠেন। কথা ছিল অনুষ্ঠানের মধ্যে ট্রফি প্রদর্শন এবং টিমের খেলোয়াড়দের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর কনসার্ট। বিমান পথে ট্রফি ও খেলোয়াররা বরিশালে পৌঁছে প্রথমে মালিকানা প্রতিষ্ঠান ফরচুন সুজ কারখানায় যান স্বত্ত্বাধিকারি মিজানুর রহমান।
সেখানে খেলোয়াড়দের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এরপরই উৎসব মঞ্চের দিকে রওয়ানা হন। কাউনিয়া থেকে ট্রফি ও খেলোয়াড় বহনকারী গাড়ি বেলস পার্কে পৌঁছতে সাড়ে ৪টা বেজে যায়। মাঠের কিনার থেকে মঞ্চে পৌঁছতে ৪৫ মিনিটেরও বেশি সময় লেগে যায়। গাড়ি দেখেই হুমড়ি খেয়ে পড়েন হাজার হাজার দর্শক।
দর্শকদের ঠেলে মঞ্চে উঠলেও দুর্বল নিরাপত্তা বেষ্টনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক দর্শকদের ঢল ঠেকাতে না পারায় দর্শকরা মঞ্চের কাছে চলে যান। অনেকে মঞ্চেও ওঠার চেষ্টা করেন। এরপর মুশফিকসহ তিনজন খেলোয়াড় মঞ্চে আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। এমন অবস্থায় ৩/৪ মিনিটের জন্য মঞ্চে খেলোয়াররা উপস্থিত থেকে শুধু ট্রফি তুলে আনন্দ প্রকাশ করে দ্রুত মঞ্চ ছেড়ে গাড়িতে ফিরে যান। পরে সেনাবাহিনী বাসটি কর্ডন করে মঞ্চ এলাকা থেকে বের করে দেয়। সেখান থেকে বরিশাল বিমানবন্দরে চলে যায় খেলোয়াড়দের বহনকারী বাসটি।
মাই টিভির বরিশাল প্রতিনিধি পারভেজ রাসেল জানান, তার কটলেস বুম ছিনতাই হয়েছে ও ট্রাইপট ভেঙে গেছে। বেশ কয়েকজন নারী দর্শককে বাঁচাতে গিয়ে আমি মারধরের শিকার হই। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে এখন বাসায় আছি। নিরাপত্তা ছাড়া এমন অনুষ্ঠান এর আগে বরিশালে দেখিনি।
এখন টেলিভিশনের চিত্র সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার ট্রাইপট ভেঙে গেছে। আমি ও রিপোর্টার অমিত হাসান কোনোমতে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছি। জানি না হয়তো আর একটু হলে মৃত্যু নিশ্চিত ছিল।