সব সময় জেতাটাই মুখ্য ছিল না তার কাছে, বরং সে চাইত লড়াইটা শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে। খুব ছোটবেলা থেকেই বুঝে গিয়েছিল, এই জীবন কারো জন্য অপেক্ষা করে না, এখানে একটু থেমে গেলে, অনেকটা পিছিয়ে পড়তে হয়। চারপাশে যারা ছিল, তারা কেবল জয় দেখতো, কেউ বুঝতো না হারতে হারতে জেতার ভিতরের দীর্ঘ একাকিত্বটা। কেউ জানতো না, সে কতবার নিজেকে বোঝাতে গিয়ে কান্না চেপে রেখেছে, কতবার রাতের গভীরে নিজের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছে, আর না, এবার থামবো, কিন্তু পরক্ষণেই আবার বই খুলেছে, আবার কলম ধরেছে।
সে জানতো, এই সমাজ তাকে সহজে মেনে নেবে না, বারবার ফেল করাবে, কষ্ট দেবে, তবুও সে লড়েছে। সহপাঠীরা হাসতো, কেউ কেউ আড়ালে বলতো, এত চেষ্টা করে কী হবে, শেষমেশ তো… বাক্যটা শেষ করতো না কেউই, কিন্তু সে শুনে ফেলতো ভেতরে ভেতরে। প্রতিবার হারার পর নিজের মুখটা আয়নায় দেখে, বলে ফেলতো, “ঠিক আছে, আবার শুরু করবো,” কাঁদতো না, বরং চোখের জল লুকিয়ে নিজের শপথগুলো আরও শক্ত করতো।
সে জানতো না, এইসব ছোট ছোট হারের ভেতর দিয়ে কখন যে একদিন জয়ের কাছে পৌঁছে যাবে, সে শুধু চেষ্টা চালিয়ে গেছে। কেউ বাহবা দেয়নি, কেউ পাশে দাঁড়ায়নি, কিন্তু দিনশেষে সে বুঝেছে, আসল জয় হয় তখনই, যখন তুমি হেরে যাওয়ার পরেও হাল ছাড়ো না, থেমে যাও না, নিজের ভিতরের আগুনটাকে নিভতে দাও না।
আজ তার গল্পে কেউ হাততালি দিচ্ছে না, কিন্তু সে জানে, সে জিতেছে। কারণ সে থামেনি, সে পালায়নি, সে নিজেকে ছাড়েনি।
এই ছিল তার নিঃশব্দ বিজয়ের গল্প, যা হারতে হারতে জিতে যাওয়ার এক অদৃশ্য ইতিহাস।