1. admin@ichchashakti.com : admin :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

দ্রব্য মূল্যের পাগলা ঘোড়া থামবে কবে ? — এসকে এম হেলাল উদ্দিন

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১২৬ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

রাজধানীসহ দেশব্যাপী নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামে অতিষ্ঠ জনজীবন। নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম যেন পাগলা ঘোড়া। লাগামহীন ভাবে বেড়েই চলেছে।  সীমিত আয়ের সাধারণ মানুষের কাছে এখন সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম নিত্যভোগ্যপণ্যের বাজার। গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর, অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম আরও বেড়ে চলেছে।

 

প্রতিদিন কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছেই। এতে করে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ ভোক্তা। সরকার পরিবর্তনের পর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন ও কাঁচাবাজারগুলোতে চাঁদাবাজি অনেকটা কমে আসে। এতে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে আসবে বলেই ভেবেছিল ভোক্তা সাধারণ। কিন্তু পণ্যের দাম না কমে উল্টো বেড়েছে। চাল, মাছ, মাংস, ডিম ও সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার নাগালের বাইরে চলে গেছে। জুলাই থেকে অক্টোবরে বেশ কিছু কিছু  নিত্যপণ্যের দাম দ্বিগুণ পর্যন্ত বেড়েছে।

 

খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে। এমনকি আমদানি শুল্ক কমিয়ে বাজারদর নিয়ন্ত্রণে সরকারের চেষ্টাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। তার প্রমাণ নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্তর। সরকারের কাছে বাজারে দ্রুত স্বস্তি ফেরানোর আহ্বান ভোক্তা সাধারণের।

 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যার কারণে পোলট্রি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় বাজারে মুরগি, ডিম ও সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের সরবরাহে ঘাটতি বেড়েছে।

ফলে বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। আবার অনেকেই বলছেন, সরবরাহের ঘাটতি না থাকলেও বাজারে নজরদারি কম থাকায় নানান অজুহাতে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম কারসাজি করে বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) এর হিসেবেও গত জুলাইয়ের চেয়ে অক্টোবরে চাল, মুরগী, ডিম, মাছ, সবজি সহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়েছে।

 

নিম্নআয়ের চাকরিজীবী থেকে শুরু করে সকলের ভাষ্য, গত কয়েক বছরে আয় না বাড়লেও ব্যয় বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সংসারের খরচ নানাভাবে কমিয়েও ব্যয় সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাঁরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা ছিল, তারা প্রথমেই বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জোরালো ভাবে কাজ করবেন। কিন্তু বাজারগুলো আগের মতোই চলছে, কোনো রকম তদারকি না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। এতে করে স্বল্প আয়ের মানুষরা ব্যয়ের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়ছে। সীমিত আয়ের মানুষদের সংসার চালানো দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে।

দেশের পোল্ট্রি খামারিদের ভাষ্যমতে, দেশে ডিমের চাহিদা দিনে চার কোটি। কিন্তু বণ্যার কারণে খামার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ২০ থেকে ৩০ লাখ ডিম উৎপাদন কম হচ্ছে। চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন কম হওয়ায় ডিমের ডাম কিছুটা বেড়েছে। আর পোল্ট্রি খাদ্য ও মুরগির বাচ্চার দাম বেশি হওয়াতেও ডিম ও মাংসের দাম বাড়ছে। যেখানে আমাদের দেশে একটা ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকারও বেশি, সেখানে ভারতে ডিমের উৎপাদন খরচ মাত্র পাঁচ টাকা। এখানে উৎপাদন খরচকেই বাড়িয়ে রাখা হয়েছে। এটা সমাধানের পথ বড় বড় সিন্ডিকেট ও করপোরেট গ্রুপগুলো।

 

সবার জন্য নিরাপদ ডিম ও মুরগির মাংসের জোগান নিশ্চিত করতে উৎপাদন খরচ কমিয়ে এনে সাশ্রয়ী মূল্যে ডিম ও মুরগি ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর করণীয় চেষ্টা করতেই হবে। গ্রাহক পর্যায়ে ডিম ও মুরগি সুলভ মূল্যে বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের দায়িত্বশীল মহল আহ্বানও জানানো হচ্ছে বারবার।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভোক্তাদের মাঝে একটা ভরসা ছিল যে তারা হয়তো বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। প্রায় দুই মাস হয়ে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের, কিন্তু বাজারে কোনো পরিবর্তন দেখছি না। বরং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দিকেই আছে। তাই ভোক্তাদের স্বস্তি দিতে দ্রুত স্বল্প মেয়াদী ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি বাজার তদারকিতে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার অতীব জরুরী।

 

অন্যদিকে ‘দেশীয় পণ্যের উৎপাদন বাড়ানো ছাড়া খাদ্যের ঊর্ধ্বগতি নামিয়ে আনা যাবে না। গত কয়েক বছর ধরে আমাদের খাদ্যশস্যের উৎপাদন খুব বেশি বাড়েনি। যে পণ্যের ঘাটতি থাকবে, সেই পণ্য দ্রুত আমদানি বাড়িয়ে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে। সরকার যে খাদ্যশস্যের মজুদ রাখে সেই মজুদ বাড়িয়ে দ্বিগুণ করতে হবে। যখনই বাজারে ধান-চালের দাম বেড়ে যাবে, তখনই প্রয়োজন অনুযায়ী বাজারে দিতে হবে।

আমাদের একটাই চাওয়া, দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া থামবে কবে। দ্রুতই নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আসুক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

 

লেখক, কবি ও সাহিত্য সংগঠক

চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park