নদের তীরে এসে দেখি জলের চেয়ে আবর্জনা অধিক, জলগুলো থেকে দূরগন্ধ ভেসে বেড়ায়! সেখানের মশাগুলো গান গেয়ে গেয়ে বিরক্ত করতে লাগল, মনে হচ্ছে ট্যাঙ্কের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছি। নাহ, এখানে আর থাকতে হবে না বাড়িতে পালাই নয়তো দেহে জ্বর উঁকি দিবে।
সন্নিহিত কে-জি স্কুলটার ওখানে ভয়ংকর চেহারার ও অশোভনীয় আকৃতির কারা যেন! একটি মৃতলোককে কাবাব বেনে ভোজনে ব্যস্ত, খাচ্ছে আর হাগছে। তরল জাতীয় কি-যেন খাচ্ছে, প্রস্রাবের ন্যায় গন্ধ। তাদের মাথার চুলগুলো যেভাবে সাজানো আছে মনে হচ্ছে মাথায় চুলের বদলে সাপের থোকা। তাদের কারো চোখের কালার স্বাভাবিক/প্রকৃত নয়, কারো ভ্রু নেই, কারো ভ্রুতে, কারো চোখে আর্ট করা তিনরেখার রংধনু, কুবা (কুত্তা-বাঘ), কাঁকড়া, কচ্ছপ, হনুমান, জেব্রা, ভল্ল, শূয়র, হাতি কারো সারা গায়ে চোখ আর্ট করা ইত্যাদি। এসব কি স্টাইল নাকি? কারো ফের চেহারার এক অঙ্গের সাথে আরেক অঙ্গের মিল নেই।
দেখলাম কারো কারো জিভ বিচ্ছু, হিংস্র পশুদের আকৃতি-আর্ট। কারো নাক চেরা, কানদুটো আলু, গাজরের ন্যায় গোল-লম্বা! থ্যাবড়া। শুনছিলাম এ নদে আগে জাহাজ চলছিল,এখন নদে জল শুকিয়ে দুই-তৃতীয়াংশ বালুচর। সেখানে কোন মানুষের অস্তিত্ব নাই। আমি পার্শ্ববর্তী বটগাছের পাশ পথ দিয়ে গাঁয়ে যাওয়ার উদ্দেশে হাঁটা দিলাম, বটগাছের ওখানে ফ্যানা তুলে বসে আছে একটি সাপ। সাপটি আমার দিকে তাকিয়ে করতে লাগল ফোঁস ফোঁস। হয়তো আমার হাঁটার কম্পন শুনে ইশারায় বলতে চায় তোমার পায়ে অনেক ব্যথা, এখানে আসো মালিশ করে দেই। উহ্হু গাছ থেকে ঝরছে পুঁজের মত কি-যেন, অক্সিজেনের জটিলতায় ভুগতে হচ্ছে। নাহ বাম পাশের রাস্তা দিয়ে চলে যাই, সেখানে একটা গ্রাম আছে! সেই গ্রাম দিয়ে আমাদের গ্রামে যাব দেরি হলেও করার আর কী আছে। সূর্যি মামার বুজি স্বাদ জেগেছে লুকোচুরি খেলার, আবছা আলো! এরই মধ্যে কোথা থেকে যেন আর্বিভাব হলো বিশাল আকারের একটি দৈত্য। দৈত্যটি বারবার আমায় পিষে মারতে পা এগোয়! আমি তার পায়ের কাছে গড়াগড়ি দেই।
স্মরণ হচ্ছে শাহজালালের গত মাসের কথাখানি। সে বলেছিল ‘মশার চাইতে মানুষই বংশবিস্তার করে বেশি।’ এখানে দৈত্যের বংশবিস্তার বেশি হচ্ছে নাকি? তাইতো দৈত্যের সংখ্যা বাড়তেই আছে। ভাবছি এই জঞ্জাল মোকাবিলা হবে কি-না। তখন যাদেরকে দেখলাম একটি মৃত লোককে খাওয়া তারাও এখানে এসে হাজির! আমাকে খেতে চায়। সবাই দেখি দৈত্য কমিটিতে নিযুক্ত, এদেরকেও বুজি দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের ওখান থেকে বিশ্রী কন্ঠে ভেসে আসছে ‘যে আমাদের ফ্রেন্ডসের কাজে বিঘ্ন ঘটায় তাকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে দিব না।’ তারা কি আমার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করছে? কোথায় পালাব, পালাতেই ত আছি, শরীরটার ওজন পাহাড়ের ন্যায় লাগছে। কোথা থেকে যেন কিছু ঢিল নিক্ষেপ হচ্ছে আমার দিকে। একটি ঢিল আমার মুখে এসে লাগে আর দাঁত পড়ে যায়। প্রচন্ড ব্যথা লাগতেছে। চোখের পল্লব দুটো