1. admin@ichchashakti.com : admin :
শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

ছোট্ট ইয়ামিনের বড় উপলব্ধি — মোহাম্মদ ফয়সাল

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৫২ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

ছোট্ট ইয়ামিন গ্রামের এক সাধারণ পরিবারের ছেলে। বয়স মাত্র দশ। ওর চোখে স্বপ্ন, মনে কৌতূহল আর হৃদয়ে একরাশ ভালোবাসা। স্কুলে ভালো পড়ে, কিন্তু মাঝে মাঝে খুব জেদি হয়ে পড়ে। বিশেষ করে নামাজের সময় এলেই ওর যেন হাজারো অজুহাত!

 

মা যখন বলতেন, “ইয়ামিন, ওঠ বাবা, আসরের নামাজের সময় হয়েছে,” তখন ইয়ামিন বলত, “আচ্ছা মা, পরে পড়ব। আগে খেলাটা শেষ করি।”

মা মুখে কিছু না বললেও চোখে ভেসে উঠত দুঃখের ছায়া।

 

একদিন গ্রামের মসজিদে এক নতুন হুজুর এলেন। নাম মাওলানা তাহের। তিনি শুধু নামাজ পড়াতেন না, শিশুদের জন্য মজার করে ইসলামি গল্প বলতেন, কুরআনের আয়াতের অর্থ বুঝিয়ে দিতেন। সবাই তাকে খুব ভালোবাসল, এমনকি ইয়ামিনও।

 

এক শুক্রবারের খুতবায় হুজুর বললেন,

“পৃথিবীতে আমরা সবাই পরীক্ষার জন্য এসেছি। আমাদের আমলই আমাদের পরিচয়। ছোট কাজ, বড় ইচ্ছা আর সঠিক নিয়ত—এই তিনেই আছে আল্লাহর সন্তুষ্টি।”

 

সেদিনের পর থেকে ইয়ামিনের মনে একটু নড়েচড়ে বসে কিছু একটা। সে হুজুরের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, “হুজুর, আমি যদি নিয়মিত নামাজ পড়ি, মিথ্যা না বলি, আর গরিবদের সাহায্য করি, তাহলে কি আল্লাহ আমাকে ভালোবাসবেন?”

 

হুজুর হাসলেন, “অবশ্যই ইয়ামিন! যে ছোটরা আল্লাহকে ভালোবাসে, আল্লাহ তাদের আরও বেশি ভালোবাসেন। নামাজ মানে শুধু ফরজ নয়, এটা আল্লাহর সাথে কথা বলা, তার কাছে সব কিছু বলা।”

 

এই কথা যেন ইয়ামিনের হৃদয়ে গিয়ে লাগল। সেদিন থেকে সে ঠিক করল, আর কখনো নামাজ ফাঁকি দেবে না। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফজর পড়া, দুপুরে স্কুল থেকে ফিরেই যোহর, বিকেলে খেলাধুলার আগে আসর, সন্ধ্যায় মা-বাবার সঙ্গে মাগরিব, আর রাতে ঘুমানোর আগে এশা।

 

তার আচরণেও পরিবর্তন এলো—সে বন্ধুদের ঝগড়া না করতে বলত, দুষ্টুমি করলে হালকা করে শোনাতো, “আল্লাহ কিন্তু সব কিছু দেখেন।”

 

একদিন স্কুলে যাওয়ার পথে ইয়ামিন দেখল এক বৃদ্ধ লোক রাস্তার ধারে বসে আছেন, খুব অসহায় দেখাচ্ছিল। লোকটা চোখে ভালো দেখতে পান না, আর হাতে ছিল একটা খালি গ্লাস। ইয়ামিন স্কুলের টিফিন থেকে নিজের খাবার ভাগ করে দিলেন তাঁর সঙ্গে।

বৃদ্ধটা কাঁপা গলায় বলল, “আল্লাহ তোমাকে উত্তম পুরস্কার দিন, বেটা।”

 

সেদিন ইয়ামিন বুঝল, একজন মানুষ কত ছোট কাজ দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে।

 

পরের শুক্রবার হুজুর খুতবায় বললেন,

“একজন শিশু যদি আল্লাহকে ভয় করে, মানুষের প্রতি দয়ালু হয়, এবং নিজের চরিত্রকে সুন্দর করে তোলে—সে বড় হয়ে একজন সত্যিকারের নেতা হতে পারে।”

 

সবার মাঝে বসে ইয়ামিন হাসছিল। ওর চোখে এখন স্বপ্ন নয়, একরাশ ইমানি আলো। সে আর সাধারণ ছেলেটি নেই, সে হতে চায় আল্লাহর প্রিয় একজন মানুষ। ওর প্রতিটি কাজ, প্রতিটি ভাবনায় যেন ভর করে ইসলামিক শিক্ষার আলো।

 

শেষ কথা:

 

গল্পটা শেখায়—ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা শুধু নামাজ, রোজা নয়—বরং ভালো চরিত্র, দয়া, সততা, এবং আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও ভয়। এমন শিক্ষা একজন শিশুর জীবনকে বদলে দিতে পারে।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park