প্রেমের বিচিত্রময় গতিতে মানছে নাতো বয়স, জাত,স্থান,কাল,পাত্র,ধর্ম কিছুই। দুটি হৃদয়ে কোন কিছু বিচার না করেই পোঁছে যায় প্রীতির সম্পর্কের জন্ম দিয়ে। যাহার রসায়নে ঘটে যায় দুর্ভেদ্য। তরুন দের প্রেম নিবেদন মানে নাতো বাঁধা। আশিউদ্ধ পুরুষ কন্যা,নাতনীর বয়সী তরুণীদের তরে করছে প্রেম নিবেদন।
প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে
কে কোথা ধরা পড়ে কে জানে ___রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আজ বড়োই সত্যর সম্মুখীন হয়েছি। সাহিত্য মহলে অতুলনীয় তিন কবির মতের সঙ্গে, আজ আমি ক্ষুদ্র লেখক সম্মতি প্রদান করিলাম যে ‘কবিরা কখনো প্রেমের সফলতা পাইনা’।
বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনে প্রেম এসেছিল নীরবেই।কিন্তু তিনি কোন প্রেমেই সরব পাননি। কবি একদিন আরব সাগরের তীরে ভ্রমনের আন্তরাম ছিলেন। ঠিক সেই সময় কবির পাশাপাশি ছিলেন সতেরো বছরের তরুণী আন্না। কবি সেদিন হয়তো আন্নার চোখের ভাষা বুঝতে পেরেছিলেন। কবির প্রথম প্রেম এভাবেই শুরু হয়। কবিকে উচ্চ শিক্ষার জন্য দাদা আন্নার সঙ্গে বিলেতে পাঠালেন। আন্নার সঙ্গে মোন দেওয়া নেওয়ার জন্য যেন আরও বেশ সুবিধা হয়ে গেল। তাদের প্রেম আরও প্রশারিত হয়ে যায় বলাই বাহুল্য। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ আন্নাকে জীবন সঙ্গী করে পাননি। কারন স্বরুপ কবির থেকে আন্নার বয়স ছিল অনেক বেশি। কবি আন্নাকে ভালোবেশে নাম দিয়েছিল ‘নলিনী’। কবি প্রথম প্রেম স্বরণীয় করে রাখতে ১৮৮৪ সালে ‘নলিনী’ নামক একটি নাটক রচনা করে তাকে উৎসর্গ করেছিল।
রবীন্দ্রনাথ ও ভিক্টোরিয়া একাম্পোর প্রেম কাহিনি বেশ সমালোচিত। ভিক্টরিয়া একাম্পোকে কবি ভালোবেসে নাম দিয়েছিল ‘বিজয়া’। প্লাতা নদীর পাড়েই শুরু হয়েছিল রবি ও বিজয়ার রহস্যময় প্রেমের নান্দনিক উপাখ্যানগুলো। অসুস্থতা কাটিয়ে কবি ফেরার পথে জাহাজে বসেই লেখা শুরু করছিলো ‘পূরবী’ কাব্যগ্রন্থ। এ কাব্যগ্রন্থে বিজয়াকে নিয়ে রচিত কবিতা ‘বিদেশির ফুল’ সহ বেশ কয়েকটি প্রেম ময় কবিতা লিখেছেন। ধারনা করা হয় ১৯৪০ সাল পর্যন্ত কবি বিজয়ার সঙ্গে চিঠি আদান-প্রদান করেন।বিজয়া কবিকে চিঠির শুরুতে ‘প্রিয় গুরুদেব’ বলে শুরু করতো আর ‘তোমার বিজয়া’ বলে শেষ করতো। রবীন্দ্রনাথ তার ‘পূরবী’ কাব্যগ্রন্থটি বিজয়াকে উৎসর্গ করেছিলেন।
অসমবয়সী প্রেমের সম্পর্কটা বর্তমান আমাদের সমাজে বেশ আলোচিত, সমালোচিত হচ্ছে। প্রমান স্বরূপ দেখা যায় অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ মোশতাক ও তিশা রচিত ‘তিশার ভালোবাসা’ গ্রন্থটি। গ্রন্থটিতে দেখা মিলেছে অসমবয়সী প্রেম আশিউদ্ধ পুরুষ কন্যা,নাতনির বয়সী তরুণীদের তরে করছে প্রেম নিবেদন। বলা যায় রবীন্দ্রনাথ ও রানুর প্রেমের কথা। রবীন্দ্রনাথের জীবনও অসমবয়সী প্রেম হয়ে রানু এসেছিল। কাদম্বরী বৌঠান, হেমন্তবালা দেবী সহ রবীন্দ্রনাথের জীবনে অনেক নীরবেই প্রেম এসেছিল। যে প্রেম গুলোর পূর্ণ সরব কবি পাননি।
আমার প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রেমের কথা শুনলে হতভম্ব হয়ে যায়। কবির প্রথম প্রেমিকা নারগিসকে নিয়ে প্রায় ৫০ টি কবিতা লিখেছিলেন। উল্লেখযোগ্য কিছু কবিতা হলো,মানস বসু,পাপড়ি খেলা,বিধুর পথিক ইত্যাদি। নজরুল ও নারগিসের প্রেমের সম্পর্ক ধরেই তাদের বিবাহ ঠিক হয়েছিল ১৩২৮ বঙ্গাব্দের ০৩ আষাঢ়। কাবিনের ঘরে ঘর জামাই থাকা নিয়ে বিরোধ হলে নারগিসের সঙ্গে বাসর না করেই দৌলতপুর ত্যাগ করেছিলেন। প্রায় ১৫ বছর পরে ১৯৩৭ সালের ০১ জুলাই নারগিসের সঙ্গে কবির দেখা হলে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
নজরুল ‘আশালতা সেনগুপ্তকে’ ভালোবেসে নাম দিয়েছিল ‘প্রমীলা’। প্রমীলার সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক বৃদ্ধির ফলে কবি রচনা করেছিল প্রিয়ার রুপ,অভিমানী কবিতা। এ সময় প্রমীলার সঙ্গে নজরুলের মেলামেশা প্রথমে আমুলে না নিলেও পরে গুঞ্জন হয়ে একপর্যায়ে প্রাত্যহিক আলোচনা হয়ে গেছিলো। তখন হিন্দু সমাজ বিষয়টি মেনে না নিয়ে নজরুল বিদ্বেষী হয়ে পড়লে কবি কুমিল্লা ছেড়ে কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন। ঐ বছরেই নজরুল সম্পাদিত ‘ধূমকেতু ‘ পত্রিকা প্রকাশিত হলে বাজেয়াপ্ত করা হয়। পরে কবির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে, গ্রেফতার এড়াতে সমস্তিপুরে গিয়ে গিরিবালার কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পরে প্রমীলাকে সঙ্গে নিয়ে কুমিল্লায় যান। কুমিল্লা থেকে কবি গ্রেফতার হলে এক বছরের সাজা ভোগ করেছিলেন। পরে মুক্তি পেলে কলকাতার বেনিয়া পুকুরে প্রমীলার সঙ্গে কবির বিবাহ সম্পন্ন হয়। তাদের বিবাহে তৎকালীন মুসলিম ও হিন্দুরা বিরাগভাজন হয়েছিলেন। কবির সঙ্গে সংসার জীবনে প্রমীলা তিন সন্তানের জননী হয়ে ১৯৬২ সালের ৩০ জুন কলকাতায় মৃত্যু হলে কবি মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন।
এবার আসি পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত, সমালোচিত ব্যাক্তি কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রসঙ্গে। কবি প্রথম দৃষ্টিতে প্রেমে পড়ায় বিশ্বাসী ছিলেন বলেই, তিনি প্রেম করে বিয়ে করার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। তিনি ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন বলেনই ইংরেজ কবিদের জীবনি পড়েই এ-ই পন করে বসেছিলেন। কবি সবসময় ভাবতেন কোন এক ‘ নীলনয়নার’ প্রেমে পড়বেন। তৎকালীন সময়ে বাঙালি তরুণদের মানসিক ও আচরণ সমস্যা দেখা দিলে বিবাহ দিতেন। কবির সে সময় ধর্ম,পূজা পার্বনে অনিহা থাকায় পিতা রাজনারায়ণ বিবাহ দিতে চাইলেন। এ বিবাহে কবির সম্মতি না থাকায় এক ঢিলে অনেক পাখি মারতে চাইলেন। খ্রিষ্ঠানদের দ্বারা হিন্দু কলেজ পরিচালিত হওয়ার তাদের ধর্মের প্রতি কবির আলাদা টান ছিলো। ১৮৪৩ সালের ১৩ ই ফেব্রুয়ারি কবির বিবাহের ১৫ দিন পূর্বে গুল্ড মিশর চার্চে গিয়ে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহন করেন। পরে ‘মাইকেল’ নামটি যোগ করে ‘মাইকেল মধুসূদন দত্ত’ নাম রাখেন। এর পর তিনি বিয়ের ফাঁস থেকে মুক্তি পান। বিলেতে অর্থ অভাবে কবির পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। জীবিকার জন্য তিনি ‘মাদ্রাজ মেইল অ্যান্ড ফিমেইন অরফ্যান অ্যালাইলাম অ্যান্ড বয়েজ ফ্রি ডে’ (অনাথ আশ্রম) এ সহকারী শিক্ষক পদে ৪৬ টাকা বেতনে চাকরি নেন। কবির শৈশবের ভাবনা ‘নীলনয়নার’ স্বপ্ন পূরণ হলো তার ছাত্রী রেবেকা কে দেখে। রেবেকার সঙ্গে পরিচয়ের পরে রোমান্টিক কবির প্রেমে পড়তে দেরি হয়নি। জেসি ও রবার্ট পসনেটের সহায়তায় ১৯৪৮ সালের ৩১ জুলাই কবি রেবেকা কে বিবাহ করেন। রেবেকার প্রথম সন্তান জন্মগ্রহণ করার পরে প্রথম বারের মতো স্বজনদের কাছে বেড়াতে গেলে জজ হোয়াইটের স্ত্রী মারা যায়। পরে চল্লিশেদ্ধ জজ হোয়াইট ষোল বছরের তরুণীকে বিবাহ করেন। মধুর সংসার অভাবে ভুক্তভোগী দেখে দরদ উথলে উঠে। হেনরিয়েটার সহানুভূতি নিতে দ্বিধা করেনি। এর পর হতেই তাদের মধ্যে প্রণয়সস্পর্ক সৃষ্টি হতে থাকে। এর মাধ্যমেই কবি প্রিয়তম স্ত্রী রেবেকা ও চার সন্তানের কাছে ফিরতে পারেনি। হেনরিয়েটার প্রতি সহমর্মিতা প্রণয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। যার প্রতি ভালোবাসা বেশি তার প্রতি ঘৃণাও সবচেয়ে বেশি। কবির এমন বিশ্বাস ঘাতকতায় রেবেকা মানসিকভাবে আহত হয়ে ছিল।
ধারণা করা হয় ১৮৫৮ সালে যখন হেনরিয়েটা কলকাতায় আসেন। তার পর হতে প্রায় ছয় বছর প্রণয়লীলা চলার পরে তাদের মিলন হয়েছিল। কবির দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ব্যারিষ্টারি পড়ার জন্য স্বজনদের কাছে তার স্ত্রী, সন্তানের দায়িত্ব দিয়ে কিছু পৈত্রিক সম্পত্তির বিক্রি করে বিলেতে জান। স্বজনদের যন্ত্রণায় হেনরিয়েটার মৃত্যু হয় ১৮৭৩ সালের ২৬ জুন। তখন কবির বয়স ছিল মাত্র ৩৭ বছর। রেবেকা ডিভোর্স না দেওয়াতে হেনরিয়েটাকে কবি চার্চা গিয়ে বিবাহ না করতে পারলেও স্ত্রী হিসেবে গ্রহন করেছিলেন। বিলেতে ব্যারিষ্টারি পড়া কালীন সময়ে হেনরিয়েটার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তাদের মধ্যে ভালোবাসার কমতি না থাকায় কবি আক্ষেপে বলেছিলেন, বিধাতা তুমি আমাদের দু’জনকে একসঙ্গে মৃত্যু দিলা না কেন? কবির এ-ই আক্ষেপ হয়তো বিধাতা না শুনে পারেননি। হেনরিয়েটার মৃত্যুর মাত্র তিন দিন পরে ১৮৭৩ সালের ২৯ জুলাই কবির মৃত্যু হয়। কবির মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে রেবেকা প্রায় নিষ্ম হয়ে পড়েন।
তাদের মতো করেই আমি এক ব্যার্থ প্রেমিক। প্রথমেই সুর্দশনীর অপলক আঁখির চাহুনির মায়াতে পড়েছিলাম। প্রথমে তাহার হস্তের ধাক্কা খেয়ে আঁখি তুলিয়া তাহার আঁখিতে রেখে হারিয়ে গেছিলাম অজানা এক রাজ্যে। বেশ কিছু দিন মোর প্রথম প্রিয়তমার সঙ্গে মানসিক শান্তি ভাগাভাগি করিলেও তা আর দীর্ঘক্ষন অতিবাহিত হয়নি। কোন এক তৃতীয় ব্যাক্তি মোদের মধ্যে হাজির হইয়া দিয়েছিল বিষ ঢেলে। যে বিষের ধারন ক্ষমতা আমার মধ্যে ছিলো না। কারন স্বরূপ দারিদ্র্যতা আর বেকারত্বটাই বেশ দায়ী বলে আমি মনে করছি৷ প্রিয় দর্শীনি শুধু একা মোর প্রেমে পাগল ছিল না। তাহার জন্য প্রায় সত্যিকার পাগল রুপ ধারণ করতে গেছিলাম। কিন্তু তাহার বলা শেষ কথাটি আমায় সর্বক্ষেত্রেই বাধা প্রদান করেই চলেছে। তাহার বিবাহ হইয়া গেলে আমি প্রায় পাগল রুপ ধারণ করতে গেছিলাম। কিন্তু তাহার বলা শেষ কথাটি রাখতে গেলে আমি পেয়ে যায় এক সাগর দুঃখ। সেতো সাগরেই নিক্ষেপ করে গেছিলো আমাই,যাতে অন্যর তরে প্রেম নিবেদন নাহি করতে পারি আর। তাহার বলা শেষ কথাটি ” ভুলিয়া আমাই হইয়াে প্রতিষ্ঠিত,আর যাতে কাঁদতে নাহি হয়।বিবেকহীন এ-ই সমাজ বেকারত্বকে অভিশাপ জানাই বলে প্রিয় আজ মোর বিদায় জানাতে হয়”। তাহার বলা শেষ কথাটি যেন আমায় সারাক্ষণ তাড়িয়ে বেড়ায়। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ছুটছি আমি দিক থেকে দিগন্তে। জানিনা লাগাম বিহীন ঘোড়ার মতো কতো দুরে যেতে হবে ছুটতে ছুটতে। খোদার কাছে করি মিনতি এমন কষ্ট কাউকে দিয়োনা আর। কোন সম্পর্কের মধ্যে তৃতীয় ব্যাক্তির হস্তক্ষেপ পড়িলে তাহার মধ্যে যে অগ্নিকান্ডের মতো জ্বলতে জ্বলতে আসল মানুষটির জীবন শেষ হয়ে যায়। হয়তো সে শ্রেষ্ঠত্ব পাই,তবুও ধরনী ত্যাগ করে অনন্ত কালের যাত্রী হয়ে যায়। তৃতীয়ের স্বাধতা এ জীবনে প্রথম পাই।চাওয়াটা ছিলো পবিত্র। হয়তো সেখানে মোর কল্যাণ ছিলো না বলেই এমনটা ঘটে গেল। কাটিতে কাটিতে চলে গেল প্রায় দুটি বছর। প্রিয়দর্শীনির আঁখির চাহুনি আর মনে না পড়লেও তাহার শেষ কথাটি প্রায় মনে পড়ে যায়।
চলতেই আছি দিক থেকে দিগন্তে,নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে। এরই মাঝে অজান্তেই বৃক্ষ করছি রোপণ পাহাড়ের গায়ে। করছি পরিচর্যা, আগাছা মুক্ত রেখে। আরুর চোখের মায়া যেন দিন দিনে বেড়েই চলছে। তাহার চোখে চোখ নাহি রাখিলে মোর হৃদয়টা অস্থির হয়ে পড়ে। আয়নাতে তাহার মুখটি দেখেছিলাম সেদিন। তার পর থেকে প্রায়ই লুকাইয়া তাহার চোখের পানে চাহিয়া রহিতাম।নিজেকে তাহার চোখের মায়াতে যেন বন্দী করে ফেলেছি।প্রথমে একটু ভয় পেলেও একটু সাহস করে কথা বলিলাম। প্রথমে আশ্বাস পাইলাম বলে কচ্ছপের ন্যায় গুড়ি গুড়ি পায়ে এগোতে থাকিলাম। তাহাকে মোর জীবন সঙ্গীনী এবং অন্তরের হরনী বানিয়ে রাখিবার জন্য। আগেই বলেছিলাম কোন সর্ম্পের মাঝে তৃতীয় ব্যাক্তির আগমনটা শুভ নয়। ঠিক তেমনই সেই তৃতীয় ব্যাক্তিতেই আমি পরিনত হইলাম। আরুর বলা প্রতিটি কথায় আমার নয়ন থেকে ঝরছিল জল। শত চেষ্টা করেও যে তাহাকে বুঝাইতে পারছিলাম না।তাহার বলা কথা গুলো প্রথমে বিশ্বাস না করলেও কেন যানি হৃদয় ফেটে কান্না আসছিল। কিন্তু কাঁদতে পারছিলাম না। কষ্ট বুকে চেপে রাখতে পারছিলাম না। আরুকে অনেক মিনতি করিলাম, কিন্তু তাহার বলা আগের কথাগুলো ছিলো যে মিথ্যা।
বুঝিতে পারছিলাম না আমি এই অদম্য হতভাগ্য। জীবিত মানুষের আত্মা মরার যে এতোটাই তিক্ত গন্ধ যা সয্য করতে পারছিনা। আমার এই ছোট্ট জীবনে আরুকে ভালোবেসে হয়তো দ্বিতীয় ভুলটি করে বসেছি। যাহার জন্য কাটিয়েছি পযন্ত একটা নির্ঘুম রাত্রি। সেদিন ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ চোখে পাহাড় সমান ঘুম থাকিলেও ঘুমযে আসছিলো না। চোখের পাতা বন্ধ করিলেই আরু আসিত আমার কাছে। ছুঁতে গেলে পেতাম শুন্যতা,চোখ মেলিলেই পেতাম শুধুই বিষন্নতা। ঐ দিনের নির্ঘুম রাত কাটানোর পরেই আরুর মায়াটা আরো বেশ বৃদ্ধি পেল। তাহাকে একটি নজর দেখিতে ছুটে গেলাম গন্তব্যে। প্রথমে দেখিতে না পেয়ে চক্রর দিলাম চতুরেই।পরে পেলাম সন্ধান, সামনে যেতে বুকটা কাঁপছিলো কেন? এমন নিরবতায় শ্রেণির পাঠ করিনিতো কখনো। এসব কিছুই কি আরুর প্রতি আসক্তিতা। পরে আসিলাম দুজনে সৌন্দর্যে ঘেরা ক্যাম্পাসের পুকুর ঘাটে। আড্ডার ছলে বেশ কিছু সময় কথা হলো। তার পরে বাসার গন্তব্যে রউনা দিলাম। তাহাকে বিদায় জানিয়ে বাড়িতে আসার মাঝেই ভিজিলাম বৃষ্টিতে। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাড়ি আসাতেই প্রচন্ড জ্বর শুরু হলো। জ্বরে বেশ কষ্ট হলেও আরুর জন্য এক অদ্ভুত মায়া কাজ করছে। তাহাকে যদি আজীবনের সঙ্গী করে আনিতে পারিতাম তবেই অন্তরের হরনী করে রাখিতাম। বিভিন্ন কথার ছলেই আরুকে আবারও জানালাম তাহার চোখের মায়ার কথা। কিন্তু সেতো নিজ সিদ্ধান্তেই অটুট হয়ে আছে। তাহার জীবনে আমার আগমনটা ঘটেছে তৃতীয় ব্যাক্তির ছলে।যা পৃথিবীর কোন সম্পর্কের মধ্যেই সুখবর বহে আনেনা। আমি নিজেই যে তৃতীয় ব্যাক্তি পছন্দ করি না।
সেই জায়গাতেই নিজে কলঙ্কজনিত মানুষ হয়ে গেলাম। তাহার প্রতিটি কথাতেই আমার অন্তর ফেটে কান্না আসছিল। তাহার কথাগুলো আমি যেন আর সইতে পারছিলাম না। মানুষ জীবিত অবস্থায়ই যদি আত্মার মৃত্যু হয়, তাহলে তার বেঁচে থাকার কোন মানেই হয়না। হয়তো আমিও তাহাকে হারানোর যন্ত্রণাটা ভুলিতে না পারিলে হয়তো অনন্ত জীবনের পথে চলে যেতে পারি এ-ই ধরনির বুক থেকে। আমি এমনি ব্যাক্তিতে পরিনতো হয়েছি যে কূল ছাড়া নদীতে ভাসমান তরীর মতো। যে কূলেই যেতে যায় সে কূলই স্রোতে ধস নামিয়ে নদীতে মিশ্রিত করে দেয়। এ-ই ব্যার্থ জীবনটাকে ভাসমান তরীর মতো হয়তো আমি আরুর চোখের মায়া ভুলতে পারছিনা। তাহাকে হারানোর যন্ত্রণায় চোখের জলে আজ ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ রাতটি ভর বালিশ ভিজিতেছে। নিজের হলেও কষ্ট আরুকে আর বুঝতে দিবো না তাহার জীবনে আমার আগমনটা কেন? ধরনীটা বড়োই স্বার্ধপর। নিজ স্বার্থের জন্য যে যার মতো সময়, ব্যাক্তি,বিশ্বাস, সুযোগ ব্যাবহার করেই চলছে।ঠিক আগেরই মতো আজ রাতটিও নির্ঘুম কাটাচ্ছি। চোখের জলে বালিশ ভিজচ্ছে তবুও আরুর মায়া কাটছে না। কি যানি এজীবনে আরুকে ভুলতে পারবো কিনা! আরু থাকিবে আমারি হৃদয়ের মাঝে কল্পনার আল্পনা হয়ে। আরুকে হৃদয় থেকে মুছা সম্ভব হবে কিনা জানিনা।পরিশেষে বলবো কোন কবি,লেখকই প্রেমে পূর্ণতা পাবেনা। যেমনটা কবি নজরুল, মধুসূদন, রবীন্দ্রনাথ পারেনি।তাদেরই মতো আমিও পেলাম না। কবিদের প্রেম তাহাদের প্রিয় মানুষের ভালোবাসা পাবে কিনা জানিনা। তবে আমি বলবো কেহ নারীর মধ্যে প্রেম খুঁজিয়োনা। যে নারী একটা সমাজ গড়তে পারে, ঠিক তেমনি ঐই নারী সেই সমাজের জাতীকে ধ্বংস করে দিতে পারে। একটা প্রাণের মৃত্যু হলে মরবে একটা বিক্ষাত ব্যাক্তিত্ব। কারণ সেই মানুষটির দ্বারা হতেও পারতো পৃথিবীর তরে তার মাতৃভূমির দেশ বিক্ষাত। তবে সে থাকিতে পারতো পৃথিবীরতে বিক্ষাত মানুষের সঙ্গে আজীবনের সঙ্গী হয়ে । অসুস্থতা না কাটিতেই বসিলাম পরীক্ষার হলে। নিজে না চাহিতেও আরু ঘুরছে আমার সামনে দিয়ে। তাহাকে দেখিলেই আমার হৃদয়ে এক অদ্ভুত ঝড় শুরু হয়। যে ঝড় মোকাবিলা করার শক্তিযে আমি হারিয়ে ফেলেছি। তবুও পরিবার নামক বট বৃক্ষের জন্য প্রতিনিয়তো নিজেকে শক্ত খুঁটিতে পরিনত করতে চেষ্টা করছি। তাহাকে ভুলা হয়তো সহজ হবে না,তবুও ভুলিতেই হইবে। আমার এই ছোট্ট জীবনে আবারো প্রমানিত হয়ে গেছে স্বল্পআয়ী,দারিদ্র্য, বেকারত্ব বড়োই অভিশাপে পরিণত হয়েছে আমাদের বর্তমান সমাজে। তাইতো বলি শত বাঁধা পেরিয়ে হলেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করো। একদিন দেখবে আজ তোমাকে যে দুরে সরিয়ে দিলো তোমার সুদিনে সেই আগে আফসোস করবে। শুধু তাইনা তোমার সুদিনে সে আবারও তোমার তরে আসার বাইনা করবে,কিন্তু তুমি তাহাকে আর গ্রহন করবেনা। সমাজ চাই প্রতিষ্ঠিত, সঙ্গে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থের পাহাড়। যা অর্জন করতে তোমাকে ছুটতে হবে ভাগ্যোর সঙ্গে। এভাবেই ছুটতে থাকো, ছুটতে থাকো……………….।