মোঃ জুবায়েদ আহমেদ, সিলেট প্রতিনিধি:
চা বাগানে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দেবাশীষ দাস (রিপন ওরফে রূপক দাস) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। নিজেকে কখনো ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসি) হেড অফিসের কর্মকর্তা, কখনো চা বাগানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা চালিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, বাস্তবে দেবাশীষ দাস কখনো কোনো চা বাগানে চাকরি করেননি। তিনি শুধু বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) এর ২৬তম টি ম্যানেজমেন্ট কোর্সে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেই কোর্সের সনদকে পুঁজি করে তিনি নিজেকে বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে চা শিল্পে প্রভাবশালী কর্মকর্তা সাজতে শুরু করেন। এরপর থেকেই তিনি চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতে থাকেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, দেবাশীষ দাস নানা সময় বিভিন্ন চা বাগানের ম্যানেজারের নাম ব্যবহার করে মানুষকে প্রলোভন দেখাতেন। কারো কাছে নিজেকে দেবাশীষ দাস, কারো কাছে রিপন, আবার কারো কাছে রূপক দাস হিসেবে পরিচয় দিতেন। তার প্রকৃত নাম-পরিচয় নিয়েও দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। কখনো তিনি নিজের বাড়ি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগরে বলে দাবি করেন, আবার কখনো কুলাউড়ার তিলকপুর গ্রামকে নিজের বাড়ি হিসেবে পরিচয় দেন।
এমন ভুয়া পরিচয়ে প্রতারণা চালিয়ে তিনি অনেকের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা দাবি করেন, টাকা দেওয়ার পর প্রতিশ্রুত চাকরি পাননি কেউই। একাধিক ভুক্তভোগীর ভাষ্য, “সে আমাদের সামনে বড় বড় চা কোম্পানির কর্মকর্তাদের নাম বিক্রি করে বিশ্বাস অর্জন করত। পরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নিত, কিন্তু শেষে আর কোনো খোঁজ পাওয়া যেত না।”
স্থানীয়রা জানান, বিষয়টি এখন প্রকাশ্যে আসায় তাকে এলাকায় অনেকেই ‘প্রতারক’ ও ‘বাটপার’ হিসেবে চিহ্নিত করছেন। তার এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে সাধারণ মানুষ শুধু আর্থিক ক্ষতির শিকারই হয়নি, বরং চা শিল্পের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
Website: www.ichchashakti.com E-mail: ichchashaktipublication@gmail.com