1. admin@ichchashakti.com : admin :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামের লেখিকা নিপা’র কিছু কবিতাংশ “স্বপ্নের ছোঁয়া সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫” এ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো ‘চা জগত’ – বই  সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবার আয়োজিত সাহিত্য আড্ডা ও সাফারি পার্ক ভ্রমণ ২০২৫ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের অনুষ্ঠান রৌমার, কুড়িগ্রাম -এর নবীন লেখিকা নিপা’র দুইটি কবিতা অর্ধ নারীশ্বর —– প্রীতম ভট্টাচার্য শেষ যাত্রা —- প্রীতম ভট্টাচার্য অর্পিতা সাহিত্য লাইব্রেরী-এ.এস.এল এর প্রাথমিকভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন যাঁরা… ক্যান্সারে আক্রান্ত মাও. এনামুল হাসান ফারুকীর পাশে দাঁড়ালো আল ইরশাদ ফাউন্ডেশন –

খাদিজা আক্তার -এর কবিতা গুচ্ছ

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৭৫ বার প্রতিবেদনটি দেখা হয়েছে

০১

অহমিকা

 

মানুষের এক বড় ব্যাধি আছে বিদ্যমান

বেশি কিছু পেয়ে গেলে থাকে না হুশ-জ্ঞান

ধ্বনি-গরীব, ছোট -বড় কাউকে মানে না

অহমিকা যেনো তার পিছুই ছাড়েনা।

 

টাকার পাহাড় গড়ে কলুসিত অন্তরে

আঘাতে করে যে ক্ষত কত শত মন

কখনো বা রুপ নিয়ে, কখনো বংশ নিয়ে

অহংকার করতে থাকে শুধু প্রতিক্ষন।

 

ধ্বনি- গরীব নির্বিশেষে অহমিকা দূরে ঠেলে

সুশীল সমাজ গড়ার করে নিয়ে পণ

ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সকলে এক হয়ে

শুরোভিত হৃদয় নিয়ে বাঁচো সারাক্ষণ।

 

যে হৃদয়ে থাকেনা ঈর্ষার কোনো ছাপ

প্রভাব ফেলেনা কোনো হিংসার কালো

যে হৃদয় থাকে সদা লিপ্ত প্রভুর প্রেমে

হিদায়াতের নূর নিয়ে ছড়িয়ে দেয় আলো।

 

০২

বাদলা দিন

 

আকাশে জমেছে মেঘ পানিতে ভাসছে ভেলা

কারা যেনো ডাকছে আর আড়ালে করছে খেলা

বাতাসে বইছে যেনো স্নিগ্ধতা সারা বেলা

হৃদয় করছে শীতল করো না তা অবহেলা।

 

মন ছুটে যায় কোনো নাম না জানা দেশে

প্রণয়ের কইবো কথা বাদলের স্নিগ্ধ পরিবেশে

তুমি আসবে কি কোনো এক বাদলার ভরদুপুরে

আমি চাইবো ঠিক রোজ তোমায় আমার শহরে।

 

বাদলের স্নিগ্ধ ভরদুপুর আমার একলা থাকার সুর

তোমায় পেয়ে সে ক্লান্তিলগ্ন হবে যে মধুর

রিমঝিম বৃষ্টি হবে উচাটন সৃষ্টি হবে

কেটে যাবে দীঘল রজনী আসবে নতুন ভোর।

 

শ্রাবণের অঝোর ধারা প্রকৃতিকে দিচ্ছে তারা

শীতল করছে বিশ্ব নিখীল যাচ্ছি হয়ে দিশেহারা।

বাদলের ধমকা হাওয়ায় হারিয়ে যাবো যে রোজ

হৃদয়ের মণিকোঠায় নিও শুধু আমারি খোঁজ।

 

০৩

সুন্নাত 

 

সুন্নাত হলো এই সমাজে

জুম্মার দিনে মিষ্টি খাওয়া

সুন্নাত হলো দাওয়াত পেলে

হালাল হারাম না জেনে

খুজ না নিয়েই খেতে যাওয়া।

 

এই সমাজে সুন্নাত হলো

গরম গরম জিলাপি

বিপদ-আপদ, মুসিবতে

হুজুর ডাকা তথাপি।

 

সুন্নাত নয় শুধু নমনীয় আলাপন

সুন্নাত রবের প্রেমে সিংহের গর্জন

সুন্নাত শুধু নয় রাজপথে অবরোদ

সুন্নাত প্রয়োজনে বাতিলের প্রতিরোধ।

 

সুন্নাত শুধু নয় ইসলামি মঞ্চে যাওয়া

আরো সুন্নাত হলো তাওহীদি শাষক হওয়া

সুন্নাত হলো দুর্দিনে খালিদ ওমর আলী

আবু বকরের মতো সার্থহীন সঙ্গী হওয়া।

 

০৪

আমি যদি পাখি হতাম

 

আমি যদি পাখি হতাম!

দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াতাম

তাহলেই তো কোনো হিসেব দিতে হতো না,

মহান রবের কাছে।

 

আমি যদি তৃণলতা হতাম!

পা ছাড়া কান্ডের মতো এ শাখায় ও শাখায় বিরাজ করতাম,

কতোইনা ভালো ছিলো

কোনো জবাবদিহি করতে হতোনা

মহান রবের কাছে।

 

হতাম যদি কোনো উদ্ভিদ

কিংবা নাম না জানা কোনো ফুল!

যার গন্ধে শুরোভিত হতো দুনিয়া

কোনো ভুল ভ্রান্তিই থাকতো না

হিসেব দিতে হতো না

মহান রবের কাছে।

 

যদি অচিন কোনো তারা হতাম!

রাতের আকাশে চাঁদের পাশে

আলোকিত হয়ে জ্বলজ্বল করতাম

কতোইনা ভালো হতো

কাল হাশরের মাঠে অন্তত

কোনো পাপের জন্য শাস্তি পেতে হতো না

মহান রবের কাছে।

 

কতোইনা ভালো হতো!!

আমি যদি কোনো পাখি হতাম।

 

০৫

শরতের শুভ্রতা

 

লাগিল জাফরানি রং শিউলি ফুলে

শুভ্র চাদর বিছিয়ে দিয়েছে কাশফুল নদীর কূলে,

শরতের শিশির ভেজা সকাল

শিউলির ঘ্রানে মন করে তুলে মাতাল।

 

শরতের শান্ত, নিবিড়,স্নিগ্ধ, কোমল আগমন

স্বল্প পানির বুকে শাপলার পাগল করা বিচরণ,

এ যেন প্রেয়সীর হৃদয়কাড়া হাসির প্রতিচ্ছবি

নদীর তীরে হাওয়ায় দুলছে কাশফুল রাশি রাশি।

 

আকাশে ছুটে চলেছে পেঁজা তুলোর মতো

তুলতুলে সাদা মেঘের ভেলা,

তারি মাঝে মন মাতিয়ে

পাখিরা ডানা মেলে করছে খেলা।

 

প্রকৃতিপ্রেমী হারিয়ে যেতে চায়

কাশবনের নিবিড় শুভ্র কায়ায়,

শরতের প্রতিটি ভোর শান্ত মোহময়

নানান ফুলের সমারোহ মন করে নেয় জয়।

 

০৬

বর্ষা 

 

গ্রীষ্মের রুক্ষ খরতাপে সবার প্রাণ মন

ওষ্ঠাগত হয়ে থাকে যখন,

গরমের তীব্রতা, প্রখরতা ভেদ করে

তখনি ঘটে ঠিক বর্ষার আগমন।

 

জলবতী মেঘের বাতাস নিয়ে

বাংলার সঘন সজল প্রকৃতিতে,

বর্ষার রুপ, রস সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে

প্রকৃতি সতেজ ও সজীব হয়ে ওঠে।

 

বর্ষায় চারপাশ মুখরিত থাকে

কদম, কেয়া, কামিনী ও বকুলের সুবাসে।

শিল্পরসিক মন বর্ষার আহ্বানে

অভিভূত হয়ে তাই প্রাণ খুলে হাসে।

 

বর্ষায় টিনের চালে রিমঝিম বৃষ্টি

করে মনে অদ্ভুত এক অনুভূতির সৃষ্টি,

প্রকৃতি ও তাল মিলিয়ে দিয়ে যায় নাড়া

বর্ষার এই রুপ ও বৈচিত্র্যে আমি দিশেহারা

 

০৭

আয়না ঘর

 

ভাবনারা দিচ্ছে উঁকি

হয়ে স্বার্থপর

অন্ধকারে রুপ দিয়েছে

বানিয়ে আয়না ঘর।

 

ইচ্ছেরা জেগেছিলো

দেখবে এ ঘরের আলো

এই কি ছিলো আমার দেখা

স্বপ্নের নিকোষ কালো?

 

তবে কি এই আয়না ঘরেই

আটকে রাখা হতো

গুম, খুনে হারিয়ে যাওয়া

হকপন্থীরা যতো।

 

তবে কি এই আয়না ঘরেই

আমার দেশের মানুষ

মৃতের মতো অন্ধকারে

উড়াতো দুঃখের ফানুস।

 

দুনিয়ার আলো ঢুকতো না ঐ

ভয়াল আয়না ঘরে

চার দেয়ালের একটা কোনায়

থাকতো তারা পরে।

 

মন চাহিলেও পেতো না হায়

ভালো কোনো খাবার

ভুলে গিয়েছিলো দুনিয়ার আলো

দেখতে পাবে আবার।

 

তাদের চোখের জলগুলো সব

জমিয়ে রাখতো যদি

ভরতো দেশের খাল-বিল ও

কত শত নদী।

 

০৮

কবর 

 

আমারও জীবন ফুরিয়ে যাবে হবো যে কবরবাসি

কাফনে মুড়ে লাস হয়ে যাবো কাদবে প্রতিবেশী

কাদবে আমার আপনজন আর ঝরবে অশ্রু জল

আমার মায়ের দুটি আখি করবে যে ছলছল।

 

মানুষ আমায় বলবেনা কেউ বলবে শুধুই লাশ

প্রাণপাখিটা উড়ে গিয়ে করবে দুঃখ বিলাস

যেতে হবে দুনিয়া ছেড়ে মৃত্যুর বোরাকে

প্রিয় দেহটি পরিণত হবে মাটির খুরাকে।

 

সাড়ে তিন হাত মাটির নিচে হবে বসতবাড়ি

কেও দিবেনা আমার সাথে কবর দেশে পারি

চাওয়া -পাওয়া থেমে যাবে ছুটবেনা আর ভেলা

স্বপ্ন গুলোও নিজের মতো করবে না আর খেলা।

 

জীবন থাকতে যতো পারো ইবাদাতে রও

নেক কাজকে আকড়ে ধরে রবের প্রিয় হও

কবরের কথা ভাবো বিচার দিনের মাঠ

কাফনের আবরণে লাশবাহি খাট।

 

চারজনেতে বহন করে নিবে আমায় কাধে

রেখে আসবে একা করে খবরও নিবে না জে

থাকবে পড়ে নিথর দেহ অন্ধকার কবরে

রবের শানে করলে ইবাদাত আলো দিবে আঁধারে

 

০৯

গণহত্যা ২০২৪

যুগে যুগে জানি কত প্রাণ গেলো
পড়েছি ইতিহাসে
২৪ এ তা ফের রুপ নিলো
শোকাবহ জুলাই মাসে

সৈরাচারীর ভয়াল থাবায়
কতো প্রাণ গেলো ঝড়ে,
দশক পড়েও কালো রাত যেনো
দেখেছি বাংলাদেশে।

হিসেব ছাড়াই মারলো মানুষ
তাদের ব্যাথায় উরলো ফানুস
হায়েনারা করলো আনন্দ বিলাস
সুখের হাসি হেসে।

মায়ের চোখে অশ্রু ঝড়ে
বাবার ও মানে না মন,
গণহত্যায় হারিয়ে গেলো
কতো যে আপনজন

ইতিহাসে এক কালো রাত্রি
হয়ে থাকবে এই মাস
রক্তে ভেজা জুলাই মাসে
জাতি ফেলবে দীর্ঘশ্বাস।

১০
ভাষা আন্দোলন

শুনেছিলাম আমি মায়ের মুখে
ভাষা আন্দোলন এর কথা,
মুখ বুঝে কত মা জননী
শয়ে গিয়েছিলো ব্যাথা।

রাজপথ ছিলো রক্তে লাল
তবুও ছাড়েনি বাঙালিরা হাল
ছেলে হারানোর হাহাকার যেনো
আজও হৃদয়ে গাঁথা।

চালিয়ে গুলি ঝরিয়েছিলো হায়
কতো শত তাজা প্রাণ,
সেই তাজা প্রাণের বিনিময়ে আজ
বাংলা ভাষা অম্লান।

সালাম,বরকত,রফিক,জব্বার
নেমেছিলো রাজপথে,
তোমাদের এই সাহসিকতার
আজও করি সম্মান।

ভুলিনি সে দিন ভুলিনি আজও
তোমরা যে ভুলার নয়,
জীবন দিয়ে করেছো তোমরা
বাংলা ভাষার জয়।

 

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ ইচ্ছাশক্তি
Theme Customized By Shakil IT Park