গতকাল সন্ধ্যায় জীবনের এই প্রথম নীড়ে ফেরা পাখির কলকাকলি শুনে আমার অবুঝ হৃদয়ে নতুন ভাবে ভালোবাসা অঙ্কুরিত হয়েছে। ক্লান্ত পথিকের ন্যায় পথ হারিয়ে অবশেষে তোমার বাড়ির আঙিনা ঘেঁষে তোমার অজান্তে আমাকে পুনর্বার কঠিন সমরে ফিরতে হলো। অবশ্য তোমাকে দেখার জন্য এক নজর তাকিয়ে ছিলাম তোমার বাড়ির সমস্ত উঠোন জুড়ে। কিন্তু কোথাও তোমার উপস্থিতি চোখে পড়লো না। মনে হলো হয়তো দূর থেকেই আমাকে দেখে লজ্জায় তুমি নিজেকে লুকিয়ে রেখেছো। তবে হ্যাঁ, পশ্চিম দরজা ঘরের ডানপাশে তোমার নরম হাতে লাগানো গাঁদা ফুলের নন্দন কানন দেখতে কিন্তু মোটেও ভুল করিনি। পাগল করা সুবাসে মুহূর্তেই আমার জাগতিক বোধকে উন্মনা করে দিলো।
বড্ড মনে হয়েছিলো তোমাকে না বলে কিছু ফুল ছিঁড়ে চুরির অপরাধে ধরা পড়ি। আবার ভয়ও হলো চুরির অপরাধে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো তিন’শ দুইধারা দণ্ডবিধি মোতাবেক সাজা প্রাপ্ত আসামি না হয়ে যাই। তার চেয়ে সেই ভালো দূর থেকেই ফুলের সুবাস নেওয়া। তাই করে ছিলাম। কিন্তু সেই স্মৃতির রোমাঞ্চকতায় গত রাতে আমি মোটেও ঘুমাতে পারিনি। তোমারই ভাবনায় অতিবাহিত হলো বিমূর্ত এই রাতটি আমার। তবে কি আমি তোমার প্রেমে পড়েছি, নাকি মিথ্যে কোনো কাল্পনিক জগতে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে শুরু করেছি, তা আমি নিজেও জানি না। আজকাল আমার যে কী হয়েছে তাও বুঝতে পারি না। তবে এইটুকু নিশ্চিত ভাবে বুঝি কেউ আমার সর্বস্বকে ধীরে ধীরে হরণ করতে শুরু করেছে।
তাকে ধরতে পারি না উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে। সবার মতো আমারো একটা নিজস্ব মন ছিল। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্যি, আমারি সেই মনটা আজ অন্যের হয়ে আমারি বিরুদ্ধে পায়চারি করে। তারি ভাবনায় সে সারাক্ষণ বিভোর থাকে। আমি শুধু মূর্তিমানের মতো কোনো রূপ একসট্যাসি ছাড়া অসহায়ত্বে এই গ্ল্যামার নীরব নিস্তব্ধ অবয়বে অবলোকন করি। নাক ছিটকানি আসা সত্ত্বেও মুখ ফুটে বলতে পারি না এমন ঘেন্নার কথা। তবুও হামেশা প্রতীক্ষায় থাকি বাদী পক্ষের প্রেমের নেশায়।