লেখক পরিচিতিঃ
মোঃ আসিফুর রহমান ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দের ২০ অক্টোবরে ফরিদপুর জেলায় ভাঙ্গা উপজেলার একটি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মোঃ মাহাবুব আলম এবং মাতা ময়না বেগম। তার বাবা মায়ের তিনি জ্যৈষ্ঠ সন্তান। তিনি ২০০৯ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তিনি ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে শরীফাবাদ হাই স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে সরকারি কাজী মাহবুবউল্লাহ ( কে.এম ) কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজেন্দ্র কলেজের অর্নাস ২য় বর্ষের বাংলা বিভাগে অধ্যায়ন করছে। তার প্রকাশিত প্রথম কবিতা ‘রক্তচোষা’ ইচ্ছাশক্তি সাহিত্যে পরিবার থেকে প্রকাশিত হয়। তার ছোটবেলা থেকে সাহিত্যের প্রতি অধিক আগ্রহ। তিনি সমাজসেবামূলক কাজে অসহায়দের সাহায্য করতে পছন্দ করেন।৪
০১
ফেসবুক
মার্ক জাকারবার্গের আবিষ্কার
ফেসবুক তার নাম
মধুর সময়ের স্বাদ কেড়ে নেওয়া
এটাই তার কাম।
২.৯৩ বিলিয়ন জনগণ নিয়ে
করছো তুমি সংসার
দিনে দিনে বেড়ে চলছে বন্ধু
খুলছে পরিচয়তার ধার।
ফেসবুক তুমি বাবা মায়ের বুকনি
আত্মীয় স্বজনদের তিরস্কার,
সবকিছুর নষ্টের মূল
এটাই তোমার আবিষ্কার।
ফেসবুক তুমি প্রেমের গুরু
ছেলেমেয়েদের শিক্ষাচ্ছো প্রেম
গভীর সম্পর্ক নষ্ট করে
দুইজনকে করছো নিঃশেষ।
ফেসবুক তুমি কেড়ে নিচ্ছ
আমাদের চোখের আলো।
দু-চার দিন পর চশমা লাগবে
পরিবার তিরস্কার জানালো।
ফেসবুক তুমি নিচ্ছ সবাইকে
হৃদয়ের কাছে টেনে
সুখে,দুঃখে স্টাটাস দেয়
তোমার-ই বুকে।
ফেসবুক তুমি করেছো ভাইরাল
জনগণকে দিচ্ছ চিনিয়ে
কাপল ব্লক, ভিডিও করে
টাকা ইনকাম করে।
ফেসবুক তুমি প্রকাশ্য শত্রু
স্বামী-স্ত্রীদের মাঝে বাজাও যুদ্ধ।
তোমার টানে করছে পরকীয়া
করতে চায় অপরকে বিয়া।
ফেসবুক তুমি গুজব ছড়ানোর
উত্তম মাধ্যম,
নিউজফিডের আড়ালে চেনা যায় না
কোনটা আসল কোনটা নকল!
শত ভেজালের উত্তম রহস্য
তুমি প্রধান সোর্স
তোমায় গোটা বিশ্ব ছাড়তে পারে না
একি বিপদ!
০২
নারীর লজ্জা
নারীর লজ্জা লজ্জাবতী গাছের মতো
কারো হাত লাগিলে ফুরিয়ে গেলো
হোক সেটা স্বামীর বা অন্যকারো
স্পর্শ ছাড়া সঙ্গতায় ও শেষ হলো।
মিডিয়ায় নারীরা সবার সামনে আসে
পুরুষের সাথে মিশে তাল মিলিয়ে চলে
চিত্র নায়িকারা বিকিনি পরে চলে
আধুনিকতার নামে লজ্জা নিবারন করে।
ফেসবুকের নামে চলে অশালীন কথা
ছেলে বন্ধুর কাছে শেয়ার করে পিরিয়ডের ব্যাথা।
ফ্লার্ট করতে গিয়ে উচ্চারণ নগ্ন শব্দ করে
মাইন্ড করলে জাস্ট কিডিং বলে।
ফেসবুকে প্রেমিকের সংখ্যা বেশি
দুই-চারটা ভালো কথা বললে নারীরা খুশি
রোমান্সের নামে অশ্লীল কথা চলে
ব্রেকআপের পর লজ্জা যায় উড়ে।
দেবর, দুলাভাইের সাথে মস্কারা করে
লজ্জা আড়াল হয় ধীরে ধীরে
নারী বুঝে না লজ্জা তাদের ভূষণ
যে করতে পারে যত আপন।
০৩
বেইমান
তুমি নেই আজ আমার শহরে
ডায়েরির পাতায় ধুলো নিয়েছে দখলে।
তোমার কবিতায় আজ অন্য কারো নাম
আমার হৃদয়ে গেঁথে গেছে বেইমান।
দিয়েছিলে সারাজীবন থাকার আশ্বাস
তবে কেন ভাঙ্গলে আজ বিশ্বাস!
তুমি হীনা আমার এই রাজ্যে
বাধা পায় নিতে নিশ্বাস।
আমার চোখে পানি দেখলে
হইতে তুমি বেমাতাল,
আজ আমি একা কান্না করি
নেই তোমার উন্মাতাল।
তারা গুনতাম যে আকাশের নিচে
সে আকাশে ঝড়ছে বৃষ্টি
তুমি নিখোঁজ হয়ে নিচ্ছো না খোঁজ
তোমার আজ সংসার সৃষ্টি।
বৃষ্টির ফোঁটায় হৃদয়ে গাঢ় হচ্ছে
তোমারই নাম,
আমার ইতিহাসে লিখা থাকবে
বেইমান তোমার নাম।
০৪
নামাজ
নামাজ মানেই শান্তি, বুঝবে না বেনামাজি
পরপারে এর হিসাব না দিয়ে,দিতে পারবে না পারি।
বিধাতা নামাজকে করছে ইসলামের দ্বিতীয় রুকণ
নামাজির রূপে নূরানী চেহারার আগমন।
নামাজের মাধ্যমে কথা বলি বিধাতার সাথে
কষ্ট, দুঃখ দূর করেন আমাদের মাঝে।
মোনাজাতে প্রার্থনা করলে দেন নাহি ফিরিয়ে
বান্দা খালি হাতে ফিরলে লজ্জা পাবেন নিজে!
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আমাদের করেছেন দান
তার হুকুম পালন করিলে দেন প্রতিদান।
সিজদায় লুটিয়ে পড়লে তিনি দেন দৃষ্টি
জীবনে আগমন ঘটে রহমতের বৃষ্টি।
প্রাপ্তবয়স্ক সকলের জন্য জন্য নামাজ বাধ্য
ফরজ নামাজ আদায় না করিলে হবে গুনাহে লিপ্ত।
ফরজ নামাজ কাযা করার পরিণাম
ঐ পারে অগ্নি, সাপ, বিচ্ছু রয়েছে অপেক্ষমাণ।
চলো সবাই মিলে নামাজ কায়েম করি
পরপারে সওয়াবের পাল্লা ভাড়ি করি।
নামাজ আদায় আমাদের জীবনে উত্তম
কলুশিত মন থেকে বাঁচার সমার্পণ।
০৫
কুসংস্কার
আমরা সবাই মুসলিম, করি আমরা গর্ব
আমাদের মাঝে রয়েছে কুসংস্কারের ধর্ম।
ভন্ড জ্যোতিষীদের বিশ্বাস আমরা করি
তাদের কাছ থেকে তাবিজ কবচ নিচ্ছি পড়ি।
তারা নাকি বর্তমান, ভবিষ্যত দেখতে পায়
তবে কেন নিজের পরিণাম বুঝে নারে হায়।
মুরব্বিদের দোহাই দিয়ে কত কথা মানি
নিচে উপস্থাপন করা হলো তাহাদের বাণী।
যাত্রাপথে বাধা পেলে পথে বিপদের কারণ
পেঁচা ডাকলে অশুভ হয় শকুন ডাকলে মরণ।
পাখি ডাকলে কুটুম আসে আমাদের বাড়িতে
সত্য মিথ্যার যাচাই হয় টিকটিকির ডাকে।
বৃষ্টির মধ্যে রোদ হাসিলে শিয়ালের হয় বিয়ে
হঠাৎ করে চোখ কাঁপিলে রোগ আসে ধেয়ে।
ডানহাতের তালু চুলকালে টাকা আসে হাতে
মোরগ ডাকিলে তবে ঘুম ভাঙে প্রভাতে
মধ্য রাতে কুকুর যখন কারণ ছাড়াই ডাকে
চোর – ডাকাত আসছে তখন সবার মনে জাগে।
ভাঙ্গা আয়নায় মুখ দেখিলে যাবে হায়াত কাটা
নাকে যার ঘাম ঝরে সে হবে বউ পাগল ছেলেটা।
শনিবারে,মঙ্গলবারে নাকি বাঁশ কাটিতে মানা
অন্ধকারের ন্যায় কুসংস্কার দিচ্ছে হানা।