কবি পরিচিতিঃ
নাম: মোঃ নূরুল আলম, তিনি ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই থানার ১৪ নং ইউনিয়নে পশ্চিম হাইতকান্দি গ্রামে সরকার বাড়ি, মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা গিয়াসউদ্দিন, মাতা রহিমা আক্তার, দুই বোনের মধ্যে তিনি বড়। ২০০৯ সালে মিরসরাইয়ের ১৬ নং ইউনিয়নে নূরুল উলুম ইদ্রিসিয়া দাখিল মাদ্রাসা দাখিল এবং ২০১১ সালে সুফিয়া নূরিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলীম পরবর্তী তে চট্টগ্রাম দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা থেকে ফাজিল শেষ করেন, তাঁর কোন এক প্রিয় শিক্ষকে নূরি ডাকায় নূরি আলম নূর হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে তিনি তার প্রথম পাঠশালা নূরুল উলুম ইদ্রিসিয়া দাখিল মাদ্রাসা য় শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত আছেন। তিনি ইচ্ছাশক্তি সাহিত্য পরিবারের একজন সক্রিয় সদস্য। ইচ্ছাশক্তি আইডি নং- ০০২০২২০৬৯২
বিদ্যুৎ তুমি বড়ই অদ্ভুত
ঝলকে দেখি পলকে নাই,
তোমার স্বভাব রঙ-রঙিন
তুমিই সোনার হরিণ।
বিদ্যুৎ তুমি বড়ই অদ্ভুত
বলতে আমি উৎসুক
বিলের বেলায় তুমি নিখুঁত
তবে আমার বেলায় কেন এতো কৌতুক?
বিদ্যুৎ তুমি বড়ই অদ্ভুত
চলছে তাপদাহ আবহাওয়া বৈরী
অন্যদিকে তুমি ছলনাময়ী
তোমার ক্লেশ কাটাতে অনিচ্ছা ঘুরে ফিরি।
বিদ্যুৎ তুমি বড়ই অদ্ভুত
তোমার জন্য দালানকোঠা
বিলাসবহুল আরামদায়ক সবোই ধোঁকা
স্বস্তির নিঃশ্বাস পেতে খুঁজি মাটির ভিটা।
বিদ্যুৎ তুমি বড়ই অদ্ভুত
তোমারি প্রতি হাজারো দোষারোপ বিদ্রুপ
সৌখিনতার দায়ে অপরাগতায় থাকি নিশ্চুপ।
ছিলো অধিকার বিবেকের দাবিদার
তবে কেন অত্যাচার অপবাদ রাজাকার?
কেন অবমূল্যায়ন মেধার?
আলোর মিছিলে কেন আঁধার!
আমি তো ছিলাম জ্ঞান চর্চায় মোহিত বিদ্যায়,
স্বদেশ গড়ার নেশায় স্বপ্ন সাফল্যের উচ্চ পেশায়।
আমি তো বায়ান্নের উৎসাহী সন্তান
লালিত একাত্তরের স্বাধীনতার মান।
আমি তো শিখিনি অন্যায় আবাদ
পেয়েই আঘাত শিখতে হলো প্রতিবাদ।
দিয়েছি তাই বুক পেতে, নত নহে শির
নেমেছি আজ রাজপথে নাহি ডর লড়ে বীর।
ওহে! পাচাটাদার পুলিশ পাষণ্ড
ছিলো না কারফিউ ছিলাম নিরস্ত্র
অপরাধ ছিল কি এমন করলি গুলিবিদ্ধ!
মৃত্যুকোলে আজ দেখছি বিজয়
বৃথা যাবে না এই রক্তের বিনিময়।
স্বাক্ষী আকাশ বাতাস এই পথমাঠ
ন্যায়ের পথে লড়েছি হে আল্লাহ!
কবুল করো আমার এই শাহাদাত।
চারিদিকে চলছে কারবালা
কারবালা রয়েছে মানবেতর ভীড়ে
অর্থনৈতিক জীবনে সামাজিক নীড়ে।
দেখো দ্রব্যমূল্যের হাহাকার
খেটে খাওয়া মানুষের আত্মচিৎকার
সামাজিক বিচারে ক্ষমতা যার
অপরাধী হয়েও পেলো সে ছাড়।
শিক্ষাব্যবস্থার দিকে যদি তাকাই
অশালীনতা কুশিক্ষার কারিকুলামে ছাই
উচ্চশিক্ষার ডিগ্রি অর্জনে মেধাবীরা নাই
সুযোগীরা স্থান দখল কোটার দোহাই।
চাকরির হাল সে তো তালবেতাল
বিসিএস প্রশ্নফাঁসে এ কেমন হাল
সেখানে ও টাকাখেকো রাঘব বোয়াল
আয়ের সাথে ব্যায় খুঁজি হেথায়,
অবিচারের পিষ্টকলে কারবালা কে পাই।
ইহা নয় কারবালা ফোরাতের
ইহা চলমান কারবালা বাংলার।
আশূরার কারবালা…
ছিল সেটা হোসাইনের পালা
বাংলার কারবালা এবার তোমার পালা।
নয় আর তাজিয়া মিছিল
হোক আন্দোলন সব সংস্কার অধিকার হাসিল।
কোথায় ভিটেমাটি কোথায় বাড়িঘর
এক নিমিষেই বন্যায় আমায় করে দিল পর।
কোথায় জমিদারী কোথায় বাহাদুরি,
সব হারিয়ে নিঃস্ব এখন আমি ভিখারি।
দো’তলায় আজ বন্দিখানি
চারিদিকে অথই পানি
এদিক ওদিক খুঁজেফিরি
আসছে নাকি স্বেচ্ছাসেবী!
স্রোতে ভেসে কতো প্রাণ
বাঁচাও বাঁচাও আহাজারি
প্রসবের বেদনায় গর্ভবতী নারী ।
দুগ্ধশিশু ক্ষুধায় কাতর
আবাল বৃদ্ধা শোকে পাথর।
কেউবা আবার খুঁজে মাটি
মৃত বাবার দিতে কবর।
মসজিদেরই আজান শুনে
নামাজ শেষে মোনাজাতে
তাসবীহ গুণে দিনে রাতে।
কেঁদে কেঁদে তাহাজ্জুদে পেতে পরিত্রাণ।
লাগবে কারো পানি? শেষ হলে দেবো আনি।
আমি তো জানি লড়বে আর কতখানি!
অনেকেই উপোস কিছু খাওনি!
অভিমান ভাঙাতে কেউ তো আসেনি।
“লাগবে কারো পানি?শেষ হলে দেবো আনি।
পেয়েছো বরং তিরস্কার অপবাদ
পানিয় পেয়েছো টিয়ার শেল গ্যাস
খাওয়া দাওয়া অকস্মাৎ বুলেট!
বেপোরোয়া শংকিত মূহুর্তাঞ্চল
মুছতে ধূলিত-চক্ষুর অশ্রুজল
পাবেনা তো মায়ের আঁচল!
“লাগবে কারো পানি? শেষ হলে দেবো আনি”
কতো জনের গেলো চোখ
ভেঙে গুঁড়ো পা হাত!
মৃত্যুমুখো ছটফট প্রাণ একাত ওকাত!
আসছি শিঘ্রই তো! তোমাদের কাতারে।
প্রাণবন্ত এখনো জীবন্ত লাশদের সাঁতারে।
“লাগবে কারো পানি? শেষ হলে দেবো আনি”
স্বাক্ষ্য থাকুক আকাশ বাতাস
স্বাক্ষ্য বিপ্লবী পথমাঠ!
মরণোত্তর চাই মুখে কালিমা শাহাদাত।