০১
করুণাময়
সব প্রশংসা আল্লাহ্ তা’লার
করুণাময় অতি,
সৃষ্টি জগৎ পালন করেন
সেঁ ছাড়া নাই গতি।
নিতান্ত এক মেহেরবান সেঁ
বিচার দিনের মালিক,
আমরা করি তাঁর ইবাদত
তিনিই স্রষ্টা খালিক।
আমরা সরল পথ হারাছি
সঠিক পথ দান করো,
তাদের পথে, যাদের তুমি
কৃপা দয়া করো।
তাদের পথ নয় যাদের প্রতি
গজব বর্ষন হবে,
তাদের ও নয় পথভ্রষ্ট যেই
রহম করো তবে।
আমরা তোমার প্রশংসা কই
মর্যাদাশীল প্রভু,
তোমার পথে থাকবো যেন
পথ না হারাই কভু।
০২
আল্লাহ এক
স্রষ্টার রাসূল মুহাম্মদ (সাঃ)
মহান আল্লাহ্ এক,
সাক্ষ্য দিচ্ছি তাঁর শরিক নাই
এক আল্লাহ্ এক।
তিঁনিই খালিক শরীক বিহিন
মুখাপেক্ষী নয়,
কাউকে জন্ম দেননি তিঁনি
তাঁর পথে নাই ভয়।
নিজেও জন্ম দেননি কাউকে
জন্মদাত্রী নাই,
জন্মদাতা নেইকো তাঁহার
এক আল্লাহ তাই।
পৃথিবী আর আকাশ-মন্ডল
সবটা সৃষ্টি তাঁর,
সকল সৃষ্টির খবর রাখেন
রাখেন সবার ভার।
তাঁর সমতুল্ ক্ষমাশীল কেউ
সাত ভুবনেও নেই,
নভোমণ্ডল আর অদৃশ্য সব
সৃষ্টি করছেন সেই।
০৩
মহীয়ান
গাছে ফুল-ফল শ্যামলিমা বন
সকলি তোমার দান,
সব নেয়ামত ভোগ করি মোরা
গাইছি তোমার গান!
মাঠভরা ধান নদীভরা জল
পর্বত ঘেরা ধরা,
আকাশ করেছো অপরূপ শোভা
চন্দ্র-তারায়া ভরা।
দিবাকরে আলো নিশিতে চন্দ্র
শ্বাস-প্রশ্বাসে বায়ু,
তোমার মহিমা বুঝতে দিয়েছ
সকল প্রাণীর আয়ু।
আকুল পাথারে মরুময় স্থানে
দিয়েছ ছায়ার তরু,
সমতল ভূমি আরব সাগর
কোথাও দিয়েছ মরু!
ওহে মহীয়ান তুমি গরীয়ান
দয়ালু স্রষ্টা তুমি,
তোমার কৃপায় জীবন ধারণে
পেয়েছি আকাশ ভূমি।
০৪
মহাবিস্ময়!
মহাবিস্ময় এ নিখিল ধরা
একই নিয়মে চলে!
উদাসী কবির চিন্তা মনের
সূর্য ক্যামনে জ্বলে?
সজ্জিত ধরা শ্যামলে গড়া
বহু নক্ষত্র তারা,
দিবস যামিনী ঘটমান সদা
আপন গতিতে যারা,
ঐ মহাকাশ চন্দ্র-সুরুজ
কার্ ইশারায় ঘোরে?
পৃথিবীর রূপে আত্মাহারাতে
খুঁজিয়ে বেড়ায় শোরে!
এই ধরণীর সকল প্রাণীর
হায়াত মৃত্যু আঁকা,
হদিস মেলে না তটিনীর বাঁকে
চেতনাশক্তি ঢাকা!
সকল সৃষ্টি প্রশংসা করে
প্রভুর সৃষ্টি ধরা,
সকল সৃষ্টি সিজদাহ্ করে
হৃদয়ে রাখে না জরা।
০৫
দ্বীনের খুঁটি
ওহ্ পৃথিবীর তরুণ যুবক
হার না মানা সৈন্য,
ভূবন থেকে দূর করে দাও
সবার কষ্ট দৈন্য।
দ্বীন প্রতিষ্ঠায় লড়াই করো
হোক্ না যতো শক্ত,
শহীদ হবার মন বাসনায়
ঝরুক না হয় রক্ত!
দ্বীন প্রতিষ্ঠার সৈন্য হওয়া
সৌভাগ্যের এক রত্ন,
দ্বীনের খুঁটি মজবুত করো
আমলে হোক্ যত্ন।
অনাচার সব দূর করে দাও
মিথ্যে বলা বংশে,
সত্য ন্যায়ের ঝাণ্ডা উড়াও
বিপথগামীর ধ্বংসে!
অন্যায়ভাবে কখনো কাউকে
কেউ করো না হত্যা,
মানুষ বাঁচাও সমাজ বাঁচাও
জাগাও ন্যায়ের সত্তা।
০৬
আমি সৈনিক
আমি সৈনিক, আমি দুর্জয়
ইস্পাত পর্বত গিরি,
ধ্বংস করি দেশের শত্রু
বুকটা তাদের চিরি।
আমি নির্দয়, অসীম নির্ভয়
ধ্বংসই আমার নেশা,
অগ্নির ভস্মে ছারখার করি
মস্তক চূর্ণই পেশা।
আমি নির্ভীক, মৃত্যুভয় নেই
আমি যুদ্ধ করি,
যুদ্ধই আমার শত্রু বধের
গর্বের সাথে মরি।
আমি উল্কা গতির চঞ্চল
মায়ার সঙ্গ ছাড়ি,
শত্রু তাড়াই এক নিমিষে
ভেঙ্গে শত্রুর হাঁড়ি।
আমি সৈনিক, এক রণবীর
যুদ্ধে রইনা স্থির,
রক্তের তৃষ্ণায় আর্তনাদে
সত্যের পক্ষে বীর।
আমার অগ্নি চোখা দৃষ্টি
ক্ষুধাতুর রণে মুর্তি,
অট্টহেসে জীবন বিলাই
পূর্ণে স্বাধীন পূর্তি।
শত্রু যতই হোক না দানব
থাক্ না যতই ঝাঁকে,
ডর করি না অস্ত্র চালাই
নিঃশেষ করি তাকে।
০৭
বাংলা ভাষা
বাংলাদেশের বাংলা মায়ের
যুদ্ধে পাওয়া ভাষা!
একই দেশের সকল মানুষ
কামার-কুমোর চাষা।
যৌগিক দেশের শব্দ বহন
বাংলা ভাষার মাঝে!
কী হলো যে তাদের ধ্বনি
বলছি সকাল-সাঁঝে?
পাঠশালা আর কলেজ ছাত্র
বাংলা মায়ের কুলি,
ভিনদেশেী ওই কথার চুপড়ি
রাখবো কখন তুলি?
লেখক কবি ও শিক্ষক সদা
মনীষী সবাই জেগে,
বাংলা কথার চাষ যেন হয়
ভিন কথা দেয় ভেগে!
বাংলা ভাষার কথার রোদন
দেখছি নয়ন মেলে,
ভাষার পাগল কাঁদছে এখন
বঙ্গ দামাল ছেলে।
লেখক কবির সকল লেখায়
বাংলায় কেন ফাঁকি?
খাঁটি বাংলায় স্বপন জাগাই
আ-মরি বাংলা আঁকি।
০৮
শিক্ষক গুরু
শিক্ষক গুরু আজব মানুষ
শ্রেষ্ঠ মহান পেশা,
পরের শিশু মানুষ বানায়
ব্যর্থহীন এক নেশা।
আপন জ্ঞানের প্রদীপ জ্বেলে
আলো ছড়ান ভবে,
তাঁর পেশাকে শ্রদ্ধা জানাই
আমরা মানুষ সবে।
শিক্ষা গুরুর শিক্ষা ভাষণ
শিশু তোষণ ছাতা,
এই জগতে তাঁদের আসন
সব উপরে পাতা।
পিতার পরেই মর্যাদা যার
থাকে শিরে গাঁথা,
শিক্ষক থাকে সেই আসনে
বিবেক জাগা খাতা।
শিক্ষক স্বভাব বদান্য ভাব
জ্ঞানের গুণে ধনী,
এই পৃথিবীর সকল মানুষ
তাঁর নিকটে ঋণী।
০৯
কর্মঠ ছেলে
বাঙলার সব ঘরে সেই ছেলে কবে
আলসেমি ছেড়ে দিয়ে কাজে বড় হবে?
দৃঢ়চেতা মন হবে পাহাড়ের মতো
কাজ-কর্ম করে যাবে কাছে পাবে যতো।
বুকে ভরা বল রবে তেজে মাখা মন
প্রকৃত মানুষ হবে এই যার পণ।
দেশের জন্য সদায় সেজে পালোয়ান
শত্রু সব রুখে দিয়ে হবে সে অম্লান।
হাত-পা নাড়াচাড়ায় মাথা ঘোরে যার
কখনো তো হবে না’কো ধরা জয় তার।
সজীব সতেজ রাখে কাজে যার প্রাণ
সেই তো সফল ছেলে বাড়ে তার মান।
মেধা আর কাজ দিয়ে গড়ে যেই দেশ
আশাহত হবে না’কো নিজে হলে শেষ।
এই দেশে সেই ছেলে প্রতি ঘরে চাই?
তাদেরোই খুঁজি ফিরি দিবানিশি ভাই।
আশা রাখি বুক বেঁধে বাঙলার ঘরে
জাগবে কর্মঠ হলে উঠে নড়েচড়ে।
অবহেলা করবে না কাজ ছোট হলে
কাজে সবে মন দিবে মনপ্রাণ খুলে।
জাগো সব ছেলেদের আছো যতো দল
মিলেমিশে থাকো যদি মনে পাবে বল।
দেশ জাতি সব আছে মিছে কেন ভয়?
চেতনা রাখিলে মনে পাবে তুমি জয়।
১০
মুর্খ লোক
মুর্খ লোকের কর্কশ স্বভাব
বোঝে না-সে অন্যমন,
কথার সময় ভাবনাবিহীন
অগ্নিঝরা বচনক্ষণ।
একটানা তার বাক্যে বুলেট
বজ্রধ্বনির ফোটে খৈ,
ঘুমের ঘোরেই স্বপ্নে দ্যাখে
সবকিছুতে আমি রৈ!
মুর্খ মানুষ কর্মে বিমুখ
অনাচারে লিপ্ত রয়,
অশ্লিল ভাষা গালি ধমক
সদা তারা মুখে কয়।
মুর্খ লোক রয় টেনশন বিহীন
ভেবেচিন্তে কথা নাই,
মূর্খ লোকের খিদেও বেশি
পেটটা বড় ভুরি চাই।
বিপদ-আপদ আসলে কভু
মুর্খরা নেয় বধির ভাব,
আপন কর্মের বিচার হলে
মাথা গরম লাগে ডাব!
মান অপমান বালাই ছাড়া
মনে নেই’কো অনুতাপ,
শরীর স্বাস্থ্য মজবুত তাদের
অনুতাপের নেইকো ছাপ!
নিরক্ষর আর মুর্খ লোকের
ব্যবধানে আছে ভয়,
মুর্খের সাথেে আত্মার বন্ধন
হতে পারে প্রাণে ক্ষয়!
মুর্খের ভাবনা তাহার মতো
সুখী মানুষ একটি নাই
এই ধরাতে মুর্খ লোকের
অভাব কিন্তু নাই রে ভাই!
১১
হঠাৎ ছুটি
আকাশ জুড়ে মেঘ করেছে
বাদল এলে ছুটি,
পাশের মাঠে জল গড়েছে
ভেসে যাচ্ছে পুঁটি!
আজকে আ-হা ছুটি ও ভাই
কোথায় যেয়ে লুটি?
কী করি আজ কোথায় যাবো
খুঁজতে মটর-শুঁটি?
বন-বাদাড়ে ঘুরবো আজি
সবাই বেঁধে জুটি,
খেঁক শেয়ালে আসলে তেড়ে
ধরবো চেপে টুটি!
মাখবো গায়ে ফুলের রেণু
খুঁজবো সেথা বেণু,
রাখাল যেথায় গরু চড়ায়
দেখবো সেথা ধেনু।
চলবো সবে হালকা দুলে
থাকবো বাড়ি ভুলে,
বাবুই টিয়ে ফিঙে দোয়েল
ঘুঘু পাখির কূলে!