আসিফ মিয়া
ঢাকার ব্যস্ত রাস্তায় প্রতিদিন সকাল ৬টায় রিকশা নিয়ে বের হয় আবদুল খালেক। বয়স পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই, শরীরে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট, কিন্তু চোখে এক অদম্য জীবনের আগুন।
তিন ছেলে, এক মেয়ে—সবাই পড়ে। বড় ছেলেটা মেডিক্যালে চান্স পেয়েছে, অথচ টাকার অভাবে ভর্তি অনিশ্চিত। তবুও খালেক হাল ছাড়েনি। সে জানে, তার ঘামে ভেজা টাকা দিয়েই একদিন সে ছেলে হবে ডাক্তার।
একদিন এক যাত্রী এসে বলল,
— “চাচা, আপনি এই বয়সে এতো কষ্ট করেন কেন?”
খালেক হেসে বলল,
— “বাবা, কষ্ট না করলে স্বপ্নগুলো না খায়, না পরে… মরেই যায়।”
একদিন সন্ধ্যায় এক ভদ্রলোক রিকশা থেকে নেমে টাকা দিতে দিতে চুপ করে থাকলেন। খালেকের দিকে তাকিয়ে বললেন,
— “চাচা, আজ আপনি আমাকে শুধু এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় আনেননি, মনে হয় জীবনটা দেখিয়ে দিলেন।”
সে দিন রাতে খালেক ছাদে শুয়ে ছেলেমেয়েদের মুখ মনে করে বলল,
— “আমার জীবনটা যদি ওদের জীবন গড়তে পারে, তাহলে এই রিকশার প্যাডেলটাই আমার রাজসিংহাসন।”
শেষ কথা:
রিকশার হ্যান্ডেলের সঙ্গে বাঁধা থাকে শুধু একটি পানি বোতল আর পকেটে একটি ছবি—স্ত্রীর। তিনি আর বেঁচে নেই, কিন্তু তার স্বপ্ন এখনো রিকশার সঙ্গে ঘুরে বেড়ায় ঢাকার অলিগলিতে।