চৈত্রের সকাল-
– তপ্ত রোদ উঠেছে। রোদের ঝিলিক যেনো চারপাশে কাঁচের মতো স্বচ্ছ হয়ে রেখেছে। দাবানলের মতো গরম না হলেও বেশ বোঝা যাচ্ছে গরমের প্রকটতা।
– নিত্য দিনের মতোই ঘুম ভেঙে গেছে সকাল বেলায়। যথারীতি আব্বু চলে গেছে আব্বুর কর্মস্থলে। আম্মু তার আপন কক্ষে। আর আমিও রয়েছি আমারই কক্ষে।
– জীবনটা তো একটা বহমান নদীর মতো। বয়েই যাচ্ছে শুধু। কূল নাই কিনারা নাই যেনো। এগুলো আমাকে অনেক ভাবায় বরাবরই। আজ হঠাৎ করেই কেমন জানি খারাপ লাগা কাজ করতেছে-
– আনুমানিক সকাল ৮: ০১ মিনিট হবে মনের ভিতর কিছু কথা যেনো বেঁধে রয়েছে। তাই তো লিখতে বসে গেলাম।
– কি জীবন তাই না! নিজেদের কোনো অস্তিত্ব নেই তবুও কত অহংকার? নিজের কাছেই নিজের প্রশ্ন জাগে নিজের পরিচয় কতটুকু? সবই তো বাবা, মা, ভাইয়ের। নিজের তো কিছু নাই। বাবা চাকুরীজীবি, ভাইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রভাষক, তবে আমি কি? একজন শিক্ষার্থী ছাড়া আর তো কিছুই নয়।
– আজ বড় হয়েছি যথেষ্ট। কিন্তু পরিবারের জন্য কতটুকু করতে পেরেছি? কিছুই পারিনি। এখনো তাদের উপর নির্ভর। তাহলে তো গর্ব করার মতো আমার কিছু নেই। যা আছে পরিবারের সব।
– কত স্বপ্ন নিয়ে তারা এতো বড় করলো! কি উপহার দিবো দিনশেষে? তাদের জন্য কিছু যদি না করতে পারি তবে তো আমার জীবন লোহার মরিচার মতো ব্যর্থ। পরিবারের ছায়া আছে কিন্তু লালচে জং ধরেছে যাবেতো!
– কথাগুলো ভাবতে গেলেই মনের ভিতর আচমকা কেমন জানি দমকা হাওয়ার মতো নাড়া দিয়ে উঠলো! লিখতে গেয়েই আরো স্পষ্ট লক্ষ্য করলাম। হাত কাঁপছে যেনো জ্বরের সেই কাঁপুনির মতো! চোখের কোণায় খেয়াল করলাম মেঘ জমে আছে কিছু। মেঘের পরশ যেনো আরো গভীরতর হলেই বৃষ্টি হয়ে ঝরবে!
– জীবনটা ধরা দিক না স্বপ্নের ইচ্ছেরঘুড়ি হয়ে। জাদুর মতো মেলে ধরি তাতে হাজারও স্বপ্ন গাঁথা। জীবন চলবেই জীবনের মতো। দিক হারালেও খুঁজে নেয় ঠিক কিন্তু সময় যে খুব ক্ষীণ। গদ্যবাঁধা হয়ে চলে না। জীবন চলবেই_
সুরাইয়া ইয়াসমিন সুমি
শিক্ষার্থী, অনার্স ২য় বর্ষ, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান, সরকারি বি. এল কলেজ, খুলনা।